আমি শফিক, সংসার কী তা জানা হয়নি কখনও, জানিনা কখনো জানা হবে কিনা! তাই নিজের পরিচয় দেয়ার মতো খুব বেশি কিছু আমার নেই। যখন বুঝতে শিখলাম, দেখি মানুষ হচ্ছি এক এতিমখানায়! বাবা- মা কী জিনিস তাই তা জানিনা। দুরসম্পর্কের দুই চাচা আর চার ফুপু আছেন। কিন্তু তারা কেউ আমায় চাননি, শুধু সেঝো ফুপু ছাড়া। বড় হয়ে জেনেছি, তিনি আমাকে আশ্রয়ও দিতে চেয়েছিলেন, তবে তার শ্বশুরবাড়ির কেউ তা মেনে নিতে রাজী ছিল না। আমার এই সেঝো ফুপুই সবার অলক্ষ্যে আমায় জামা-কাপড়, আর পড়াশোনার টাকা জুগিয়েছেন। তাই এই ফুপুর ঋণ শোধ করা আমার পক্ষে অসম্ভব। জীবনে এত কষ্ট করেছি যে তার সব গল্প বলতে গেলে পাঠকের বিরক্তি সৃষ্টি হবে। তাই সে চেষ্টা করব না। ভালো ছাত্র ছিলাম বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজার উপযোগী একটা বিষয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে যাই।পড়াশোনা শেষ হয়ে গেছে গত বছর। এখন রাঙামাটি থাকি। একটা কলেজের লেকচারার। এ চাকরিটা পেয়ে খুব খুশি হয়েছিলাম । ভেবেছিলাম অন্তরালে চলে যাাব। আর কখনো এ ভালোবাসাহীন সমাজে আসব না। রাঙামাটির জীবনে তাই শক্ত করে চেপে বসি। বেতন ভালো পাই, আর ছেলে পড়ানোর আয় সবই জমছে। কিন্তু এই ২৭ এর জীবনে কী যেন নেই, সবসময় একটা হাহাকার, শূন্যতা!