বিবর্ণ প্রজাপতি

61 7 7
                                    

মেয়েটি তার নিজের ছোট্ট বেলার একটি ছবি দেখিয়ে হাসি হাসি মুখ করে বললো,
"চেনো নাকি এই মেয়েটিকে?"

"হ্যাঁ, চিনি। তার ছোট্ট একটা পৃথিবী... ছোট্ট ছোট্ট হাত। সে হাত দিয়ে সে অনেক কিছু ধরতে চায়...প্রজাপতি ধরতে চায়।

প্রজাপতির পিছনে ছুটতে ছুটতে যখন ক্লান্ত হয়ে যায়। হঠাৎ প্রজাপতি এসে তার কোমল গালের উপর এসে বসে। সে ভয় পেয়ে সে প্রজাপতি তাড়িয়ে দেয়। এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকে এবং সেই আঘাতে প্রজাপতির একটি ডানা ছিঁড়ে যায়। অনেক কষ্টে সে প্রজাপতি তার আহত ডানা উড়ে চলে যায়। উড়ে যায় অনেক দূরে। কিন্তু প্রজাপতির রঙ ঠিকই লেগে যায় তার গালে!

মেয়েটি বিষন্ন মন নিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার চলে যাওয়া দেখতে থাকে..

পড়ে থাকা সেই প্রজাপতির রঙ আঙুলে নিয়ে সমূদ্রের ছবি আঁকতে বসে... সেই ছবির সমূদ্রের পাড়ে কোনো একটি মেয়ে প্রতিদিন বালুর উপর খালি পায়ে দাঁড়িয়ে থাকে। প্রচন্ড বাতাসে তার চুল উড়তে থাকে...

সেই সমূদ্রের ছিল অনেক বড় একটি তীর। কিন্তু সেই সাগরে ছিলো না কোনো পানি।

মেয়েটি আনমনে কত কি না ভেবে ভেবে চোখের জল ফেলে। মন থেকে যত চিন্তা দূর দূর করে তাড়িয়ে দিতে চায়, ততই যেন সব চেপে বসে। আহত প্রজাপতির কথা ভেবে তার আরো মন খারাপ হয়। আর ধীরে ধীরে সেই সমূদ্র ভরাট হয় তার চোখের জলে!

সেই জলস্রোত এসে এসে তার পা গুলিকে ভিজিয়ে দিয়ে যায়। সেই নির্জীব তীরের মাঝে তার হেটে যাওয়া পায়ের চিহ্ন পড়তে থাকে.... সেই চিহ্ন যেতে যেতে হারিয়ে যেতে থাকে দিগন্ত রেখায়...

আর ফেলে যাওয়া পদ চিহ্নের কোনো একটিতে তখনো পড়ে থাকে, ছোট্ট একটি পতঙ্গ। পতঙ্গটির শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিলো, কিন্তু তখনো সে বেঁচে ছিলো, ছিন্ন হয়ে যাওয়া, পথহারা, একটি ডানা বিহীন বিবর্ণ প্রজাপতি...."

এখন নিশুতি রাতWhere stories live. Discover now