পার্ট-১

126 15 7
                                    

*****

অসভ্য মহিলাটা লিয়ানার হাতটা শক্ত করে ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। খুব ব্যাথা হচ্ছে তার, মনে হচ্ছে মহিলাটি তার হাতের নরম চামড়ায় নখ বসিয়ে দিচ্ছে। এমনটা করছে যাতে ভেগে যেতে না পারে লিয়ানা, তাও আবার এমন একটা জায়গায় নখ বসিয়েছে যেখানে খুব জোড়ে হাত সরিয়ে নিলে কেটে যাবে জায়গাটা।

লিয়ানা না পারছে ভেগে যেতে, না পারছে এই অশ্লীল মহিলার থাবা থেকে বাঁচতে। সে কি করবে বুঝতে পারছেনা। মনের মধ্যে এই জিনিসটা গেঁথে আছে যে ওর জীবনে এখন কেউ বা কিছুই নেই, অন্ধকার ছাড়া। সে নিজেকে এতিম ভেবে নিয়েছে। যে পরিবারে বাবা মা ভাই নিজের মেয়েকে বিশ্বাস করেনা, সে পরিবারে মেয়ের তেমন জায়গাও থাকেনা। কি করার, ওর ভাগ্যে যে এমন কিছু ছিল কে জানতো। লিয়ানার এখন মাথায় শুধু এটা ঘুরছে, ওর জীবন পুরো অন্ধকার হয়ে গেছে। এই মুহুর্তে একটা মানুষ তো দূরের কথা একটা কাক পক্ষীও তাকে সাহায্য করতে আসবেনা। তবুও সে মনে মনে আল্লাহকে স্মরণ করছে। 

যে মহিলাটা ওর হাতে শক্ত করে ধরে রেখেছে, সে আর কেউ নয় বাকেরগঞ্জ উপজিলার এক অখ্যাত সরকারি কলেজের শিক্ষিকা। একটা শিক্ষিকা এত নিকৃষ্ট হতে পারে বিশ্বাস করার মত না। 

মহিলাটা কর্কশ কণ্ঠে বলল, 

-তাড়াতাড়ি না হাঁটলে চুল গুলো ছাঁটাই করে দিব। পা চলছেনা কেন? বিচার দেওয়ার সময় তো মুখ খুব তাড়াতাড়ি চলে।

চোখ ভরা পানি আর হাতের নখ গাঁথা জায়গাটার তীব্র বেদনা নিয়ে ধ্বংসের পথে যাচ্ছে লিয়ানা। এই ধ্বংস সেই ধ্বংস নয়, নিজের জীবনটাই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অচেনা জায়গায় এসে তার পা অবশ হওয়ার উপক্রম হলো। মনে মনে আর্তনাদ করছে, যেখানে তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেখানে সে যেতে চায়না। টাকা পয়সা পেলেও জীবনটা নষ্ট করা ছাড়া আর কোনো কিছুই পাবেনা সেখান থেকে। 

এত কান্নাকাটির পর ভেজা ও দুর্বল চোখে আশে পাশে তাকিয়ে দেখলো সে কোথায় আছে। ঘোলা চোখে ঠিক মত বুঝতে পারছেনা লেখা, তবে একটা বুঝেছে চট্টগ্রামের কোন একটা শহরে আছে। 

অন্ধকারের মধ্যে একজন অসৎ চরিত্রের মহিলাকে বাধ্য হয়ে অনুসরণ করে কোথায় যাচ্ছে সে নিজেও জানেনা। কান্না করতে করতে চোখ আর মাথা দুটোই ব্যাথা হয়ে গেছে। 

তোমার ফেরার অপেক্ষায়Where stories live. Discover now