পার্ট-৯

27 10 0
                                    

-আচ্ছা এখন আসা যাবে?

-আসতে পারেন। একটু পর আমার আবার পাহারা দিতে যেতে হবে। 

শীতের মধ্যে এত রাতে বের হতে মন চায়না। কিন্তু কি করার, যেতেই হবে আব্দুল্লাহকে। তিনি খাট থেকে উঠে গায়ে মোটা জ্যাকেট জড়িয়ে সেই স্কুলের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালেন। 

পুরো পথটা হেটেই যাচ্ছে। যদিও মাত্র ১০ মিনিটের রাস্তা। হাতের টর্চ লাইটের সামনে ক্ষুদ্র ধূলিকণা উড়ছে। হাটার সাথে সাথে জোড়ে জোড়ে নিঃশ্বাস ফেলার কারণে ধুয়া বের হচ্ছে মুখ দিয়ে। কিন্তু এই শীতের মধ্যেও গরম লাগছে এখন তামজিদের বাবার। ধ্রুত হাটার কারণেই এমন হচ্ছে। 

দূর প্রান্তে শিয়ালের ডাক শুনা গেলো। গা ছম ছম করলেও তিনি থামেননি। এখন তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য সেই ক্যামেরাটা নেওয়া। 

********

করিম কম্বলের নিচেই ছিলো। হঠাৎ একটা মেয়ের চিৎকার শুনে কম্বলের ভেতর থেকে বাধ্য হয়ে বেড়িয়ে এলো। শীত থেকে বাঁচার জন্য কোনো মতে গায়ে চাঁদর মুড়িয়ে দৌড় লাগালো। 

চিৎকারটা কোণার এক রুম থেকে এসেছে। জলদি সেই রুমের সামনে যেয়ে দরজায় নক দিলো  করিম। 

-এই যে আপামনিরা, কি হয়েছে আপনাদের? 

কেউ দরজা খুলল না। অনেক বার টোকা দেওয়ার পরও কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে বাধ্য হয়ে দরজা খুলে ফেলল। 

দরজার সাথে সাথে মুখটাও হা করে খুলে গেলো করিমের। এই রুমে দুইটা মেয়ে থাকে। একজন নিচে বেহুঁশ হয়ে পড়ে আছে,

আর আরেকজন? 

লাশ হয়ে ফ্যানে ঝুলছে। 

করিম নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেনা। 

করিম দৌড়ে মেয়েটার কাছে যেয়ে হাত ধরে পালস চেক করলো। না, মেয়েটা অনেক্ষণ আগেই মারা গেছে। 

এই কসাইগুলোর জন্যই এমন করুণ অবস্থা মেয়েগুলোর। না পেরে বাধ্য হয়ে ফাঁসি দিলো নিজের গলায়। 

টেবিলে একটা কাগজ দেখলো, 

"মনিরা, যখন এই চিঠিটা পড়বে ততক্ষণে হয়তো আমি এখানে থাকবো না। আমার রেজাল্ট খারাপ হয়েছে তাই উনারা  আমাকে বিচ্ছিরি একটা জায়গায় নিয়ে যাবে কাল। এভাবে নিজের জীবনকে নষ্ট করার থেকে মারা যাওয়া ভালো। আজ রাতেই শুনেছিলাম, মাজিদা ম্যাম আর ইলিয়াস স্যার কথা বলছিলো একসাথে। আমি বুঝেছি আমাকে নিয়েই কথা হচ্ছে। আমাকে এভাবে পতিতালয়ে পাঠাবে জিনিসটা মেনে নিতে পারছিনা। যদি যেতেই হয়, আমার লাশটাই যেন যায় ওখানে। আমার আব্বা আম্মাকে বলবে নিজের খেয়াল রাখতে। তুমিও ভালো থেকো। 

তোমার ফেরার অপেক্ষায়Where stories live. Discover now