হৃদের ফোন রাখার পর মনে হল অন্বয়কে গুলি মেরে উড়িয়ে দেই। অসভ্য নির্লজ্জ ছেলে তার মাকে বলেছে তার আমাকে পছন্দ হয়েছে। সে রাজি। কিন্তু আমি নিচ থেকে উপরে উঠার এটুক সময়ের মধ্যে হৃদ,আম্মা, অন্বয়ের আম্মা- দুনিয়াদারির সবাই কেম্নে খবর পেল? ও না! হৃদের মিসড কল তো আগে এসেছে!
আবার কল দিলাম। জিজ্ঞেস করার সাথে সাথে হৃদ একটা ভেংচি কেটে বলল,"আগে ফোন করেছিলাম নিজের একটা খবর বহুদিন ধরে দিতে চাচ্ছি, সেটার জন্য। সেটা এখন আর বলতে ইচ্ছা করছে না। তুই মারা খা।"
অনেক প্লিজ প্লিজ করার পর জানা গেল পরীক্ষার পর সে ইন্ডিয়া যাচ্ছে। ইন্ডিয়ায় কোন মামা থাকে। এবার বেড়াতেই যাচ্ছে মাস তিনেকের জন্য। ইচ্ছা আছে সম্ভব হলে ওখানেই মাস্টার্স করার। হাবিজাবি গল্প করে টরে ফোন রাখাতেই যাব- এমন সময় ঘরের দরজা খুলে গেল। আম্মা ঘরে ঢুকে একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে বেরও হয়ে গেল। আমার এক সেকেন্ড সময় লাগল হাসির রহস্য উদ্ধার করতে। আম্মা ভাবছে আমি অন্বয়ের সাথে কথা বলছি! কী মুসিবত রে বাবা! এখন তো গায়েপড়ে ডেকে বলাও যায় না,"নো আম্মা। ইউ আর গেটিং ইট রং! "
হতাশ হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। পড়াশুনা করা লাগবে। এসব কী হচ্ছে আমার সাথে।
আচ্ছা অন্বয় কি পাগল? আমাকে না বলে না কয়ে দুম করে বলে দিল তার পছন্দ! কী আশ্চর্য! কতটুকুই বা চিনে আমাকে! এম্নে কেম্নে?!
সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে ফোনটা হাতে নিলাম। ডিরেক্ট জিজ্ঞাসা করি।
বিশাল ছ্যাঁচড়ামো হবে কি?
নাম্বারটা বের করে কল দিব কি দিব না করতে করতে মনে হল ধুর বাদ দেই।
তাক থেকে বই খাতা নামিয়ে টেবিলে বসলাম।
অস্থিরতায় পা নাচাতে নাচাতে একটা লাইন লিখলাম।
ফোন হাতে নিলাম।
নাম্বারটা বের করলাম।
আর দেখি "Anwoy calling... "
মেরুদন্ড দিয়ে নার্ভাসনেসের ঠান্ডা স্রোত অনুভব করলাম।
কল দিয়ে ফেলেছি নাকি!
আমি কখন কল বাটনে চাপ দিলাম!...
ও আচ্ছা ও-ই কল দিচ্ছে।
রিসিভ করে গলা যতদূর শান্ত রাখা যায় রেখে বললাম,"হ্যালো"
অপরপক্ষ থেকে হ্যালো হাই- এর কোন বালাই নাই। ডিরেক্ট মূল কথায় চলে গেল, "আমি ভেবেছিলাম আপনি ফোন করবেন আমাকে।"
আমি মনে মনে বললাম, "জ্বি। আমিও ভেবেছিলাম আমি ফোন করে ফেলব "
মুখে বললাম,"কেন?"
"কারণ বাসায় ফিরে শুনলাম আম্মু আন্টিকে.. মানে আপনার আম্মাকে ফোন দিয়েছিল। আপনাকে আন্টি কিছু বলেনি?"
আবার মনে মনে উত্তর দিলাম,"বলে নাই মানে? আমার আম্মা পারলে এখনি কবুল বলায়ে বিদায় করে দেয়!"
মুখে বললাম,"জ্বি বলেছে।"
অন্বয়কে একটু বিভ্রান্ত মনে হল। "তো... মানে আপনি কি রাগ করেছেন?"
মনে মনে বললাম," রাগ করব না তো কি!"
মুখে বললাম,"রাগ করেছি কি করি নাই সেটা পরের হিসাব। আপনি আগে বলেন আপনি আন্টিকে কী বলেছেন? আর তার আগে বলেন আমি বাসায় ঢুকার আগেই কেম্নে আম্মা জানে? আমরা তো পুরো সময় একসাথেই ছিলাম।"
"আপনি অনেক রেগে গেছেন আমি বুঝতে পারছি। একটু ঠান্ডা হোন। আমি সব বলছি।"
অন্বয়ের কন্ঠ শান্ত, স্থির...একটা মানুষ এত স্থির কী করে থাকে?
"আমি ঠান্ডাই আছি। আপনি বলেন।"
"আপনি যখন আইসক্রীম কিনছিলেন,তখন আম্মু ফোন করেছিল। জিজ্ঞেস করেছে কোথায় আছি। বলেছি আপনার সাথে। তারপর জিজ্ঞেস করেছে কেমন লাগছে। আমি বলেছি ভালই-"
"আপনি বলেছেন 'ভালই'? মানে মোটামুটি? মানে 'ভাল' না 'ভালই'?",আমি হুট করেই বলে বসলাম।
অন্বয় এবার হেসে দিয়ে বললেন,"না। আমার আজকের দিনটা অসাধারণ কেটেছে। সেটা তো আর মা কে বলা যায় না,যায়? "
বলে একটু থামলেন। আমি চুপ করে থাকলাম।
"আর যা বলেছি তাতেই তো আম্মা ধরে নিয়েছেন বিয়েতে রাজি-"
আমি এই পর্যায়ে আসলে একটু বিভ্রান্ত হয়ে গেলাম যে এটা শুনে আমার ভাল লাগছে না খারাপ,"তার মানে আসলে রাজি না? আন্টি ভুল বুঝেছেন?"
"না ভুল বুঝেন নাই। আমি আসলেই আপনাকে বিয়ে করতে চাই..."
ВЫ ЧИТАЕТЕ
অনেক রোদ্দুর
Художественная прозаহঠাৎ বিয়ের কথা বার্তা শুরু হয়ে গেল। পরিচয়... ভাল লাগা,না লাগা...