সসপ্যানের তলানী থেকে বুদ বুদ আকারে পানি ধীরেধীরে উপরে উঠে আসছে৷ একটু পর বড় বড় বুদবুদ সৃষ্টি হবে। জানান দিবে পানিতে চা দেওয়ার সময় হয়ে এসেছে।
আমাদের চারপাশের সম্পর্কগুলো কতই না অদ্ভুত। কখনো গরম চায়ের মতন, যা উষ্ণ না হলে পান করার মানে নেই আবার কখনো ঠান্ডা কোমল পানীয়জলের মতন গরম বা স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পান করে তৃপ্তি পাওয়া যায় না।
অথচ পানি! সে তো তৃষ্ণা নিবারক। বিশুদ্ধ পানি যেমন তাপমাত্রায় থাকুক না কেনো! প্রয়োজন ঠিক মিটিয়ে নেয়।চারপাশে তাকালে এমন সম্পর্ক ইদানীং বড্ড বেশিই চোখে লাগছে মালিয়াতের।
ইশরাকের প্রতি না চাইতেও দুর্বলতা কাজ করছে। তাইতো যতটা পারছে নিজেকে গুটিয়ে রাখছে।নিজের জন্য বোনের চুল পরিমাণ ক্ষতি হবে এমনটা সে চিন্তাও করতে পারছে না। তবুও মন বড্ড বেহায়া। যাকে চিন্তা করা তার জন্য নিষিদ্ধ! মন বারবার শুধু তাকেই ভেবে চলে।
আয়েত্রী পাশেই দাঁড়ানো ছিলো। মালিয়াতকে অন্যমনস্ক দেখে ওর কাঁধে হাত রাখে আয়েত্রী।
পাশ ফিরে আয়েত্রীকে দেখে মুচকি হাসে মালিয়াত।
গরম পানি দুটো মগে ঢেলে ঢাকনি দিয়ে ঢেকে ট্রের উপর রাখলো সে।তারপর আয়েত্রীর হাতে তুলে দিয়ে বলল,
"আজ উনারা তোমাদের সাথে নাস্তা করবে আপু। তুমি আর প্রতী আপু উত্তরের বারান্দায় চলে যাও। উনারা অপেক্ষা করছে। "
চারটে বেতের চেয়ার বৃত্তাকারে পেতে রাখা আছে উত্তরের বারান্দায়। মাঝে একটি টেবিল। টেবিলে রাখা শীত কালীন সব ফল, জুস, পরোটা, ভাজি সহ নানা পদের খাবার।
আয়েত্রীকে দেখতেই ইশরাক হাত বাড়িয়ে ট্রে নিয়ে নেয়। মনে হচ্ছে দু ভাইয়ের বেশ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলছিলো।
"আচ্ছা! ওই দুটো ভাইয়া কোথায়? উনারা নাস্তা করবে না?"
আয়েত্রীর প্রশ্নে ইস্তিয়াক জবাব দেয়,
"ওরা একটু কাজে বেরিয়েছে গো আপু। "
ততক্ষণে প্রতী গরম পানিতে টি ব্যাগ চুবিয়ে দুই ভাইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে। আয়েত্রী টুকটাক ফল মুখে দিচ্ছিলো৷ খুব ইচ্ছে হচ্ছে ঝাল ঝাল জলপাইয়ের আচারের সাথে সবজি খিচুড়ি খেতে।