17.

127 18 35
                                    

"আপনি যেদিন জন্ম নিলেন সেদিন ছিলো ভরা পূর্ণিমা। চাঁদের আলোয় বন্যা বয়েছিলো চারপাশে। ঘড়িতে যখন টিক টিক করে একটা বাজলো!

ঠিক তখন শোনা গেলো আপনার চিৎকার। তখন আমার বয়স ১৭ বছর। সেরাতে সন্ধ্যে থেকেই আমরা কয়েকজন ছিলাম আপনার নানার বাড়িতে। গ্রামে তখনো এতটা উন্নতি আসেনি।

আপনার জন্মের পর আপনার নানা আজান দিলো। সামিউল তখন সাদা তোয়ালে প্যাঁচানো ফুটফুটে একটা কন্যা শিশুকে কোলে নিয়ে বাইরের ঘরে এলো!
আপনাকে দেখে শুধু বলেছিলাম
'মা শাহ্ আল্লাহ্'

সামিউল নাম রাখলো আয়েত্রী তবে আমার মনে হয়েছিলো আপনার নাম হওয়া উচিৎ চন্দ্রাবতী।
সময়ের তালে বড় হলেন, পিচ্চি আয়েত্রীকে নিয়ে যখন সামিউল বাহিরে আসতো, তখন হাত বাড়ালেই কোলে ঝাপিয়ে পড়তেন৷

আলাদা একটা সৌরভ পেতাম আপনার গা থেকে। নিতান্তই বাচ্চা একটা মেয়ে। আরো
কিছুটা বড় হলেন, একদিন ঝুটি খুলে দিয়েছিলাম বলে আমার ডান হাতে বেশ শক্ত করে কামর বসিয়েছিলেন। রক্ত বেরিয়েছিলো। তবুও রাগ আসেনি আপনার উপর। কেনো যেনো প্রচন্ড সমীহ করতে ইচ্ছে হতো। এখনো হয়।

আয়েত্রী! আমি আপনার জন্মের সময় একজন যুবক ছিলাম। আমার কাছে আপনি নিতান্তই সমীহ স্নেহের পাত্রী।
আমাদের মধ্যে ভালোবাসা সম্পর্ক আদৌও সম্ভব নয়।

এখনো সম্ভব নয় কারণ আপনি জানবেন। খুব দ্রুত। তবে আপনি আমি না চাইতেও আমাদের ভাগ্য এক সুতোয় বাঁধা পড়েছে।

আপনি ছাড়া আমার মুক্তি নেই। তবে সে মুক্তি যদি আপনার মৃত্যুতে, আপনার রুহ্! শয়তান কে দিয়ে হয় তাহলে সে মুক্তির আমার প্রয়োজন নেই।

আপনি চলে যান চন্দ্রাবতী! প্লিজ চলে যান। আমার উপর আমার নিজের স্বকীয়তা হারিয়ে যাওয়ার আগে চলে যান।"

নদীর পাড়ে বালিতে চুপচাপ বসে আছে আয়েত্রী। চোখ বন্ধ হয়ে আসছে কোন একটা কারণে।

বউয়ের সাজ নিয়ে, দুচোখে ক্লান্তি নিয়ে বসে থাকা আয়েত্রীর দৃষ্টি শাওনের দিকে।

শাওন তার থেকে খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে। নাক দিয়ে রক্তের ধীর স্রোত নেমে আসছে। সাদা বেনারসিতে ফোটায় ফোটায় পড়ছে উষ্ণ রক্ত।

চন্দ্রাবতীর রাতে ✅ [COMPLETED]Onde histórias criam vida. Descubra agora