আয়েত্রী বসে আছে সরাসরি শাওনের সাদা কালো প্রতিচ্ছবির সামনে। অদ্ভুত চাহনি আয়েত্রীর। এদিকে শাওন যেনো চিনতেই পারছে না। হাবভাব এমন যে আয়েত্রীকে সে বহুকাল পর দেখছে।
শাওনের পরিবর্তন বলতে পেটে মেদ জমেছে। চোখের আশেপাশে মনে হচ্ছে মাংস বেড়েছে।মোট কথা বয়সের ছাপ পড়েছে।
"তারপর বল কাক্কা কি খবর? এলি তো তিন দিন। আজ সময় হলো?"
উক্ত ব্যক্তির কথায় সামিউল হেসে উত্তর দেয়,
"এসেই ব্যস্ত। প্রতীকে দেখতে এলো পছন্দ করলো আত্রী-প্রতী দুজন কেই। আজ আবার আত্রীর আকদ হচ্ছে। তাই তোকে দাওয়াত করতে এলাম। সাথে তুই যা আনতে বলেছিলি নিয়ে এলাম। এই আরকি। "
উক্ত ব্যক্তি বিষ্ময়ের সুরে বললেন,
"এটা সেই পিচ্চি আত্রী? আজ আকদ? আগে বললি না কেন কাক্কা? "
"আরে বলার সময় পাইনি তো। অনেক আয়োজন বাকী তাই তাড়াতাড়ি চলে আসিস। জুম্মার নামাজের পর আয়োজন শুরু হবে। "
"এই পিচ্চি আত্রীর আজ আকদ। চিন্তা করা যায়? সেদিন তোমার সাইকেলের সামনে বসে ঘুরে বেড়াতো, কালো বললে ক্ষেপে যেতো। আজও কি ক্ষেপে যাও না কি? কালো বললে? "
কথাগুলো আয়েত্রীর কান অবধি পৌঁছাতে পারছে না।
তলানীতে খানিকটা পানি অবশিষ্ট থাকলে কেউ যদি পানির আশায় সে ছোট্ট কুয়োয় দড়ি দিয়ে বালতি ফেলে,
যেমন ঝপাৎ করে শব্দ হয়, আয়েত্রী মস্তিষ্কে কোথাও একটা ওমন শব্দ হচ্ছিলো৷হাত পায়ে শিথিলতা নেমে আসছে। চোখে নেমে আসছে রাজ্যের ক্লান্তি। আয়েত্রীর মনে হচ্ছে খুব দ্রুত তলিয়ে যাবে সে সেই খানিকটা পানিপূর্ণ কুয়োয়।
বিষ্ময়, অবিশ্বাস নিয়ে আয়েত্রীর প্রাণপণে চেষ্টা করছে কি কথা হচ্ছে শোনার।
সামিউলের কন্ঠ ভেসে আসছে বাতাসের সাথে। সামিউল কারো খবর জিজ্ঞেস করছে,
"তার আর খবর পেয়েছিস?"
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে উক্ত ব্যক্তি বললেন,
"নাহ্! সে আর আসেনি। আচ্ছা যে যায় তাকে কি ফিরিয়ে আনা যায়? হয়তো আছে কোথাও একটা নিজে সংসার করছে দিব্যি। তার আর কি? কবেই বা ছিলো পরিবারের প্রতি দায়িত্ব? "