গল্প= সিনিয়র গার্লফ্রেন্ড থেকে সিনিয়র বউ(পর্ব-17)
লেখক=মুসকান এর আব্বু
.
আমি,সুমন আর আয়েশাকে আমার idea টা বললাম যেটা শুনে দু জনেই আমার দিকে হা 😲 করে তাকিয়ে আছে।আমি বললাম যে,যেন আমার কথাটা আগে মনোযোগ দিয়ে শোন।
.
আমি-আমাদের প্রেমের অভিনয় করতে হবে
আয়েশা-কি বলছিস তুই এইসব?😳
আমি-কেন ঠিক তো বললাম
আয়েশা-আমি আগেই বুঝতে পারছিলাম যে তুই একটা ফালতু idea এর কথা বলবি😒
আমি-আরে এটাই সবচেয়ে ভালো idea.বুঝলি?
আয়েশা-এই লিআস তোর কি মাথা ঠিক আছে?
সুমন-সত্যি তো তুই কি বলছিস এসব?🤨(আমাকে উদ্দেশ্য করে)
আমি-আচ্ছা তুই আমাকে একটা কথা বল যে,তুই কি চাস যেন নাফিস ভাইয়া তোকে আগের চেয়েও বেশী সময় দিক?আর মীম আমার অভাবটা এবং আমার কষ্টটা বুঝতে পারুক?🤨
আয়েশা-অবশ্যই চাই
আমি-তাহকে শোন আমি যে idea এর কথা বলতেছি এর চেয়ে কোনো ভালো idea হতেই পারে না😎
আয়েশা-তাই বলে প্রেমের অভিনয়?😟
সুমন-আসলেই তো একেবারে প্রেম এর অভিনয় করতেব হবে?
আমি-আগে আমার পুরো কথাটা শোন তারপর তোদের যা ইচ্ছা হয় বলিস
আয়েশা-বল শুনি
আমি-যে যেমন আচরণ করে তার সাথে ঠিক ওইরকম আচরণ করলেই সে নিজের ভূল বুঝতে পারবে।তাছাড়া সে কখনোই বুঝবে না🙂
আয়েশা-বুঝলাম না।একটু বুঝিয়ে বল
আমি-আমি মীমকে নিজের ভালোবাসার কথা বলতেই মীম আমাকে আযথা আঘাত করেছে,এখন যদি মীমকে আমি সেই পরিমান আঘাত করি তাহলেই তো মীম আমার কষ্টটা বুঝতে পারবে।এখন বুঝতে পারছিস?☺️
আয়েশা-আরো একটু বুঝা🤔
আমি-আচ্ছা দেখ নাফিস ভাইয়া তোকে সময় দিতেছে না আর অন্য মেয়েদের সাথে একটু বেশী কথা বলতেছে তাই তোর অনেক খারাপ লাগতেছে।কি ঠিক বললাম তো?🤨
আয়েশা-হ্যা ঠিক
আমি-এখন তুই যদি সেই কাজটাই করিস যেটা নাফিস ভাইয়া করতেছে,তাহলে কেমন হবে?😉
আয়েশা-কথা এত না পেচিয়ে সোজাসোজি বলে ফেল
আমি-তুইও আজকে থেকে নাফিস ভাইয়াকে call দিবি না।আর আমার সাথে অনেক ঘনিষ্ঠ হবি
আয়েশা-তাতে লাভ কি হবে?🤨
আমি-নাফিস ভাইয়া যখন তোকে আমার সাথে অনেক ঘনিষ্ঠ ভাবে দেখবে তখন সে নিজেও কষ্ট পাবে আর নিজের ভুল বুঝতে পারবে☺️
আয়েশা-এই লিআস তোর মাথা মনে হয় সত্যি গেছে
আমি-ধুর।একটু বোঝার চেষ্টা কর তোরা😤
আয়েশা-আচ্ছা আমাদের plan এর ফলাফল যদি উল্টো হয়?🤔
আমি-উল্টো হবে মানে?
আয়েশা-মনে কর এমন হলো যে নাফিস আমাকে তোর সাথে এমনভাবে দেখে আমাকে ছেড়ে চলে গেলো।তখন আমার কি হবে?😟
আমি-ওই ফকিন্নি একটু ন্যাকামি কম কর।
আয়েশা-🙃
আমি-আচ্ছা তুই নাফিস ভাইয়াকে ভালোবাসিস?
আয়েশা-অবশ্যই😚
মাই-তাহলে এটা বল নাফিস ভাইয়া কি তোকে ভালোবাসে?
আয়েশা-হ্যা।অনেক ভালোবাসে🤗
আমি-নাফিস ভাইয়া তোকে ignore করতেছে,অন্য মেয়েদের বেশি সময় দিতেছে।তুই নাফিস ভাইয়াকে ছেড়ে গেলি না কেন?🤨
আয়েশা-ওইযে বললাম ভালোবাসি🙈(লজ্জা পাওয়ার ভাব করে)
আমি-তাহলে নাফিস ভাইয়ার মতো সেই একই কাজ তুই করলে নাফিস ভাইয়া কি তোকে ছেড়ে যাবে?
আয়েশা-সেটাও তো🤔
আমি-এত চিন্তা বাদ দে কিছু হবে না।
আয়েশা-তারপরেও যদি নাফিস চলে যায়।কি হবে তখন?😟
আমি-কি আবার হবে?আমি তো আছি।আমি নাহয় permanent হয়ে যাবো😁
আয়েশা-ফাইযলামি করিস না🤪
আমি-দেখ কিছুই হবে না।
আয়েশা-আর হলে কি হবে?
আমি-আমি যেভাবেই পারি নাফিস ভাইয়াকে বুঝিয়ে তোর কাছে এনে দিবো।এবার খুশি?
আয়েশা-😊😊😊
আমি-এখন যা কফি বানিয়ে নিয়ে আয়
আয়েশা-ঠিক আছে
.
আয়েশা কফি বানাতে গেলো।
.
সুমন-একটা জিনিস আমি কিছুতেই বুঝতেছি না।
আমি-কি বুঝতেছিস না তুই?🤨
সুমন-সবকিছু তো তোরা ২ জন করবি,তাহলে এখানে আমাকে ডাকছিস কেন?
আমি-আরে কাজ আছে,সেজন্যই তো তোকে এখানে আসতে বলছি।
সুমন-বল কি কাজ করতে হবে।
আমি-তুই হইলি সাইন বোর্ড😝
সুমন-মানে?🤔
আমি-সাইন বোর্ডে যেমন লেখা থাকে ডানে পার্ক,বামে কারখানা ঠিক তেমনি তুই বলবি গাছের তলায় (লিআস আর আয়েশা),পুকুর পাড়ে (লিআস এবং আয়েশা)😁
সুমন-আরে ভাই তুই কি বলতেছিস আমি কিছুই বুঝতেছি না।
আমি-আরে গাধা,আমি এবং আয়েশা তোর থেকে আলাদা থাকবো আর তুই নাফিস ভাইয়া এবং মীমকে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিবি😉
সুমন-আচ্ছা সেটা দিবো কিন্তু একটা কথা বুঝলাম না
আমি-আবার কি বুঝিস না বল?
সুম্ন-নাফিস ভাইয়াকে পথ দেখাবো ঠিক আছে কিন্তু মীমকে?🤔
আমি-এত উতলা হইতেছিস কেন?মীম নিজে এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করবে
সুমন-আমার কাছেই কেন জিজ্ঞাসা করতে আসবে?🤨
আমি-দেখ,মীম আমার ব্যাপারে কিছুই জানে না,মীম অন্য কার কাছে থেকে আমার ব্যাপারে তথ্য নিছে এবং নিবে।আর এটাও জানবে তুই আর আয়েশা আমার কে।তাই আমাদের না পেলে তোর কাছে জিজ্ঞাসা করতে আসবে😉
সুমন-তুই যখন জানতি যে মীম জেনে যাবে তাহলে আয়েশার সাথে অভিনয় করবি কেন?
আমি-আরে অনেক উদাহরণ আছে যে বেস্টফ্রেন্ড থেকে বিয়ে হয় তাদের মধ্যে
সুমন-সেটাও ঠিক।
.
তখন আয়েশা কফি নিয়ে আসলো।
.
আমি-তোরে আমি কতবার বলি যে সবকিছু বাদ দিয়া একটা কফিশপ এর ব্যবসা শুরু কর।আমার কথা তো শুনিস না😁(আয়েশাকে উদ্দেশ্য করে)
আয়েশা-😅🤣
আমি-আসলেও তোর বানানো কফি এর কোনো তুলনা হয় না😉
আয়েশা-সুমনকে কি সব বুঝিয়ে দিয়েছিস?
আমি-হ্যা বুঝিয়েছি।
আয়েশা-এখন বল আমার কি করতে হবে
আমি-তুই আজকে থেকে নাফিস ভাইয়াকে কোনো call,sms কিচ্ছু দিবি না। ভাইয়া তোকে call দিলে একটু কথা বলে রেখে দিবি।
আয়েশা-ঠিক আছে🙂
আমি-আজকে থেকে তো প্রায় সারাক্ষন আমি তোর সাথে থাকবো,তাই আমি সামলে নেবো।তারপরেও যদি নাফিস ভাইয়া আসে যখন আমি তোর সাথে নাই তাহলে ভাইয়াকে কোনো কাজের কথা বলে পাশ কাটিয়ে চলে আসবি।
আয়েশা-বুঝতে পেরেছি☺️
আমি-এক কথায় বললে নাফিস ভাইয়াকে তুই সব সময় ignore করবি।
আয়েশা-plan কাজ করবে তো?🙁
আমি-১০০% করবে।আর এখন চল ভালো earbuds কিনতে হবে
সুমন-এখন তুই earbuds দিয়ে আবার কি করবি?
আমি-আমরা যখন plan অনুযায়ী কাজ করবো তখন আমাদের মধ্যে যোগাযোগ থাকা দরকার।তাই earbuds দরকার।☺️
সুমন-কিন্তু আমরা কিভাবে কথা বলবো?এখন যা call rate আমাদের অবস্থা একদম শেষ হয়ে যাবে।
আমি-আরে গাধা কনফারেন্স কল এর কথা কে বলছে তোরে?
সুমন-তাহলে কিভাবে কথা বলবি?🤔
আমি-কেন মেসেঞ্জার আছে না।মেসেঞ্জারে একটা group খুলবো।সেই group এ আমরা ৩ জন থাকবো।আর লাজ শুরু করার আগে ৩ জন group call এ join করবো।তাহলে তো টাকা কম খরচ হলো😁
সুমন-আমি তো এইভাবে চিন্তাই করি নাই
আমি-এখন আর চিন্তা করতে হবে না
আয়েশা-আমার সাথে থাকতে থাকতে তোর মাথা অনেক ভালো কাজ করতে শুরু করেছে দেখছি😁 (আমাকে উদ্দেশ্য করে)
আমি-তোর সাথে থাকতে থাকতে আমার মাথা আরো নষ্ট হয়ে গেছে😝
আয়েশা-😒
আমি-এখন চল earbuds কিনে নিয়ে আসি
আয়েশা-আচ্ছা আমি ready হয়ে আসি।
আমি-এভাবেই তো ঠিক আছে।আবার কি ready হবি তুই?
আয়েশা-তুই বুঝবি না
.
ভাইরে ভাই আয়েশা ৩০ মিনিট পরে আসলো।তারপর আমি,সুমন আর আয়েশা গাড়িতে চরে শপিংমল এ যেতে লাগলাম।
.
এদিকে মীম কান্না করে করে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে।চোখের কাজল লেপ্টে গেছে।মীম দরজায় শব্দ শোনার পর খুলে দিল।আর তখন জেবিন ভিতরে আসলো।মীমকে দেখে জেবিন এর চক্ষু চড়কগাছ।
.
জেবিন-কিরে একি অবস্থা করেছিস নিজের তুই?😳
মীম-........... 😔(মাথা নিচু করে আছে)
জেবিন-সকাল থেকে তো কিছুই খাস নাই
মীম-আমার খেতে ইচ্ছা করতেছে না।
জেবিন-এখন খেয়ে নিবি🙂
.
হটাৎ মীমের ফোনে এ কল আসে।মীম ফোন হাতে নিয়ে দেখে আংকেল(মীমের বাবা) কল দিয়েছে।
.
মীম-হ্যালো বাবা
আংকেল-কেমন আছিস মা তুই?
মীম-ভালো বাবা।তুমি কেমন আছো?
আংকেল-ভালো আছি।কিন্তু তোর কণ্ঠ এমন শোনা যাইতেছে কেন?
মীম-কিছু না বাবা।আসলে এখন ঘুম থেকে উঠছি তাই অন্যরকম লাগতেছে😅
আংকেল-মা রে।আমি তোর বাবা।তাই আমি তোর সম্পর্কে একটু বেশীই জানি☺️
মীম-আচ্ছা বাবা আমি পরে কথা বলবো তোমার সাথে
.
আংকেল কে কোনো কথা বলা সুযোগ না দিয়ে মীম কল কেটে দিলো।আর জেবিন কে জরিয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো।😭
.
মীম-লিআস কেন এত তাড়াতাড়ি বদলে গেলো😢
জেবিন-কি হয়েছে বলবি তো
মীম-লিআস আমাকে ভুলে অন্য একজনের হয়ে গেছে😢
জেবিন-কি বলছিস এসব তুই?
মীম-আমি ঠিকই বলছি
.
মীম সবটুকু ঘটনা বললো জেবিনকে।
.
জেবিন-আরে ওই মেয়েটা হয়তো লিআসের বান্ধবী ছিল☺️
মীম-আমাদের তো ছেলে বন্ধু আছে।কই আমরা তো এমন করি না
জেবিন-তুই শুধু শুধু কষ্ট পাইতেছিস🙃
.
তখন জান্নাত আর ফারিয়া মীমের ঘরে ঢুকলো।ঘরে ঢুকে দেখে মীম জেবিন কে জরিয়ে ধিরে কান্না করতেছে।
.
জান্নাত-তুই মীমের ঘিরে আসছিস আর আমাদের ডাক দেস নাই কেন
জেবিন-সময় পাইলাম কই?😒
ফারিয়া-আচ্ছা এখন সবাই শোন।আর মীম তুই কান্না থামা
জেবিন-কি বলবি বল তো তুই
ফারিয়া-রকি, লিআসের সম্পর্কে কিছু তথ্য আমাকে দিছে☺️
মীম-কি বলছে🤔?(গভীর উৎসাহ নিয়ে)
ফারিয়া-এটা হলো সুমন আর এটা হলো আয়েশা (ফারিয়া নিজের ফোনে এ ছবি দেখিয়ে)
জেবিন-তুই ছবি পেলি কোথায়?🤨
ফারিয়া-কোথায় আর পাবো,রকি দিছে।লিআস,সুমন আর আয়েশা এরা তিনজন বেস্টফ্রেন্ড🙂
জেবিন-এই ফারিয়া ফোনটা দে তো
ফারিয়া-এই নে
জেবিন-দেখতো এই মেয়ে কি না? সকালে লিআসের সাথে যাকে দেখেছিলি?(মীমকে ছবি দেখিয়ে)
মীম-হ্যা এটাই সেই মেয়ে😲
জেবিন-তোকে বলছিলাম না যে ওরা ফ্রেন্ড
মীম-ফ্রেন্ড এর সাথে কেমন আচরণ করতে হয় সেটা কি আমরা জানি না?🙁
জেবিন-তাই বলে.....
মীম-আমি এমন অনেক দেখছি যে বেস্টফ্রেন্ড থাকে তারপর তাদের মাঝে প্রেম হয়😔
ফারিয়া-আমি আর রকি তো আগে বেস্টফ্রেন্ড ছিলাম😉
মীম-যদি লিআসও এমন করে থাকে তাহলে আমার কি হবে?আমি শেয় হয়ে যাবো😟
জান্নাত-তুই এত আজে বাজে চিন্তা করিস না।এমন কিছুই হয় নাই☺️
মীম-তাই যেন হয়
ফারিয়া-এখন চল সবাই খেয়ে নেই।তোর জন্য আমরা কেউ খাই নাই☺️
জেবিন-হ্যা চল।
জান্নাত-তারপর সবাই মিকে শপিং করতে যাবো।তোরা ভুলে গেছিস প্রতি মাসের এই তারিখে আমরা শপিং করতে যাই
জেবিন-ভুলেই গেছিলাম।😅
মীম-আমি যাবো না
জেবিন-তুই যাবি না তোর ঘার যাবে😁
.
পরে মীম,ফারিয়া,জান্নাত,জেবিন সবাই একসাথে বসে খেয়ে নিল।খাওয়ার পর ready হয়ে সবাই একসাথে শপিংমল এ গেলো।
.
শপিংমল এ গিয়ে ওরা সবাই এইদোকান ওইদোকান ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা করতে লাগলো।অনেকদিন পরে মীমেরও অনেক ভালো 😌লাগতেছে।কারণ অনেকদিন পরে সেই আগেরমতো আনন্দ 🤩 করতে পারতেছে।
.
আর এদিকে আমি আমি,সুমন আর আয়েশা earbuds খুজতে খুজতে হয়রান।শেষ পর্যন্ত ভালো earbuds না পেয়ে একটু কমদামী,আমার মতে কাজ চলার মতো earbuds কিনলাম।
.
কেনার পর অন্য একটা শপের দিকে তাকাতেই আমার চোখ আটকে যায়।দেখি................
.
.
গল্প ভালো ভালো/খারাপ যেমনই লাগবে সেটা comment করে জানাবেন।যদি ভুল হয়ে থাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
.
.
.