সিনিয়র গার্লফ্রেন্ড থেকে সিনিয়র বউ

পর্ব-৩২

গল্প= সিনিয়র গার্লফ্রেন্ড থেকে সিনিয়র বউ(পর্ব-32)
লেখক=মুসকান এর আব্বু
.
মীম-একদম দুষ্টমি করবা না।আজকে কিছু হবে না😄
আমি-আজকে আমাদের বাসর রাত☺️
মীম-আমিও তোমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য ব্যকুল হয়ে আছি কিন্তু তুমি অসুস্থ।বুঝার চেষ্টা করো😟
.
আমার মনটা খারাপ হতে গিয়েও হলো না।মীম আমার জন্য কতকিছুই তো করতেছে।আমি মীনের কথা মানবো না এটা হতে পারে না🤗
.
আমি-তাহলে কাপড় পরিবর্তন করে ফেলি?
মীম-আমারো অনেক সমস্যা হইতেছে।আগে কখনো শাড়ি পরে শুয়ে থাকি নাই😖
আমি-আচ্ছা তুমি কাপড় পাল্টাও।
মীম-ঠিক আছে তুমিও পাল্টিয়ে নেও☺️
.
মীম কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে যেতে লাগলো
.
আমি-এই কই যাও তুমি?🤨
মীম-কেন কাপড় পরিবর্তন করতে🙄
আমি-ওয়াশরুমে যাওয়ার কি দরকার,এখানেই পরিবর্তন করো আমি দেখি😁
মীম-তুমি কিন্তু দিন দিন অনেক পাজি হয়ে যাইয়েছো।এই আমার কি লজ্জা-শরম নাই নাকি?🙈
আমি-আমার সামনে আবার কীসের লজ্জা?শরীর ভালো থাকলে এতক্ষন তোমার সবকিছু দেখা হয়ে যাইতো😁
মীম-এই?তোমাকে এখন সত্যি মাইর দিবো।তোমার মুখ একদম লাগাম ছাড়া হয়ে গেছে🙈
আমি-মাত্র তো আমার মুখের ভাষা লাগাম ছাড়া হইসে কয়েকদিন পরে আমার সবকিছু লাগাম ছাড়া হয়ে যাবে তখন কোথায় পালাবে সুন্দরী😆
মীম-এহ আসছে আমার হিরো রুপী ভিলেন 😏(ভেঙচি কেটে)
আমি-তোমার কাছে ভিলেন হলেই সমস্যা কি বউ।
মীম-তোমার মুখে বউ ডাকটা শুনে কেমন কেমন জানি লাগে🙈 (মুখটা লজ্জায় লাল হয়ে গেলো)
.
মীমের এমন ভাব দেখে আমি ভেবাচেকা খেয়ে গেলাম।মীম কোনো কথা না বলে একটু দ্রুত ওয়াশরুমে চলে গেলো
.
অনেক কষ্ট করে আমি কাপড়-চোপর খুলে লুঙ্গি পরে নিলাম।মীমও কাপড় পাল্টে আসলো।মীম একটা তোয়ালে ভিজিয়ে এনে আমার মুখ মুছিয়ে দিলো।
.
আমি-আমার একটা মটির ব্যাংক কিনতে হবে
মীম-কেন?
আমি-এত ভালোবাসা রাখবো কোথায়?😅
মীম-ঢং করার জায়গা পাও না?
আমি-আচ্ছা তখন ওভাবে দৌড় দিলে কেন?🤔
মীম-তুমি বুঝবে না।
আমি-আমাকে বুঝিয়ে বলো
মীম-অনুভুতি ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করা যায় না🤭
আমি-ঠিক আছে বুঝলাম।
মীম-এখন আমাকে জায়গা দেও
আমি-এতবড় খাটে তো অনেক জায়গা আছে🤨
মীম-আমি তোমার হাত সরানোর কথা বলছি।আমি কোথায় মাথা রাখবো জানো না?😉
আমি-বুঝছি মহারানী😘
.
মীমকে বুকের মাঝে টেনে নিলাম।মীমকে বিয়ের আগে অনেকবার জড়িয়ে ধরছি কিন্তু সেখানে অসম্পূর্ণতা ছিলো কিন্তু আজকে বিয়ের পর ওকে জড়িয়ে ধরে পুর্ন তৃপ্তি পাইতেছি।কেন জানি আজকে একটু বেশী ভালো লাগতেছে।আমার ধারনা মীমের এরকম অনুভুতি আমার চেয়েও বেশী হইতেছে😊
.
শরীর ক্লান্ত ছিলো তাই মীমের সাথে কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে গেলাম।
.
সকালে ঘুম ভেঙে গেলো।প্রথমে ঘুম ভাঙার কোনো কারণ খুজে পেলাম না।একটু সময় পার হতেই বুঝলাম কেউ দরজায় নক করতেছে।
.
মীমের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার বুকের মাঝে অনেক আরাম করে ঘুমাইতেছে। ভালোবাসার মানুষকে কাছে পেলে হয়তো সবাই এভাবেই নিশ্চিন্তে ঘুমায়😌
.
মীমের মুখের দিকে তাকিয়ে স্থির থাকতে পারলাম না।এতো সুন্দর লাগতেছে মীমকে যেটা বুঝানোর মতো না।মীমের ঠোঁট দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না।😍
.
মীমের ঠোঁটের মাঝে আমার ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম।সাথে সাথেই মীমের ঘুম ভেঙে গেলো।আমি ঠোঁট সরিয়ে নিলাম।😅
.
কি হয়েছে সেটা বুঝতে মীমের একটু সময় লাগলো।আর বুঝতে পেরেই মুচকি একটা হাসি দিলো।হাসিটা যেন একদম আমার বুকের ভিতরে গিয়ে লাগল।😌
.
মীম-এই তোমার সাহস?😏
আমি-কেন?🤨
মীম-নিজের বউকে ঘুমের মাঝে ঠিকভাবে কিস করতেও সাহস পাও না😆
আমি-তোমাকে বলছে😒
মীম-বুঝছি তোমাকে দিয়ে হবে না
আমি-দেখি কি হয়😁
.
মীমকে শক্ত করে ধরে চার ঠোঁট  এক করে দিলাম।কিছুক্ষন পরে মীম আমার কাছে থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো।
.
মীম-এই শয়তান আমাকে মেরে ফেলবা নাকি?😬
আমি-কি করলাম আবার😅
মীম-আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে আর আমাকে ছাড়ার কোনো নাম নাই তোমার😑
আমি-আমাকে দিয়ে তো কিছুই হবে না😁
মীম-শয়তান কোথকার এমন কেউ করে?😬
আমি-এখন থেকে আমি করবো😁
.
এমন সময় আবার দরজায় কড়া নারার শব্দ শুনলাম।
.
আয়েশা-কিরে তোদের আর কত সময় লাগবে।সারারাত তো হইলো এখন সকালেও🤣
সুমন-তোরা খাবার খেয়ে নিয়ে আবার নাহয় ঘরে চলে আসিস🤣
.
ওদের কথায় মীম লজ্জা🙈 পেলো।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ১০ টা ৪৭ বাজে।
.
মীম-এই আমাকে এখন ছাড়ো।দরজা খুলি
আমি-না এখন খুলতে হবে না।আর একটু পরে😘
মীম-ছাড়ো তো আমাকে
.
মীম নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দরজা খুলে দিলো।আর সাথে সাথে আয়েশা,ফারিয়া,ঝুম আর সুমন ভিতরে ঢুকে পরলো।
.
ফারিয়া-কিরে আর কতক্ষন?😁
মীম-কি বলছিস এসব😐
আয়েশা-থাক ভাবী।আমরা বুঝি,কিছু বলতে হবে না🤭
মীম-........🙈
আয়েশা-তাই বলে যে এতক্ষন সেটা ভাবতে পারি নাই🤣
সুমন-এই লিআস তুই না অসুস্থ?তাহলে এখন শারীরিক দুর্বলতা কই গেলো?🤣
আয়েশা-তুই বিয়ে করে দেখ,তোর কোনো সমস্যা থাকবে না🤣
.
ওরা চারজন হাসতে লাগলো এদিকে আমি আর মীম লজ্জায় চোখ তুলে তাকাতেও পারছি না।আর মীম তো লজ্জায় লাল হয়ে গেছে☺️
.
সবার সাথে মজা করার ফাকে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।
.
আমি-কিরে সব তো ঠিকঠাক দেখলাম😉(সুমনকে উদ্দেশ্য করে)
সুমন-এখনো হয় নাই।আমার সবকিছু জানার পর যদি মনে হয় যে আমি তার যোগ্য তবেই..😔
আমি-আরে চিন্তা করিস না,হয়ে যাবে☺️
.
আমি আর সুমন গল্প করতে লাগলাম।অরা সবাই অন্যঘরে গেলো।আর মীম গেল আম্মুর কাছে।
.
নতুন বিয়ে করলাম কিন্তু অসুস্থ হওয়ার জন্য সেটা উপভোগ করতে পারলাম না😔।আমার কথার মানে হলো সবার সাথে মজা করা,গান বাজনা এইসব আরকি।পাঠকরা যেটা ভাবতেছেন সেটাও একটা কারণ😅কিন্তু আমার এতে কোনো আফসোস নাই।মীমের ভালোবাসা,আদর,যত্ন পাইতেছি এর চেয়ে বেশী কিছু আমার দরকার নেই😊
.
আম্মু-মামনি তুমি আর লিআস খেয়ে নাও।সকাল থেকে তো কিছু খাও নাই☺️(মীমকে উদ্দেশ্য করে)
মীম-ঠিক আছে আম্মু।আমি খাবার নিয়ে যাইতেছি।আপনারা খেয়েছেন তো?😉
আম্মু-আমরা সবাই খেয়েছি মামনি।
.
মীম আমার জন্য খাবার নিতে আসলো।
.
সুমন-থাক ভাই,আমি এখন যাই সবার সাথে আড্ডা দেই☺️
আমি-কেনরে এখানে থাকলে সমস্যা কি?🤨
সুমন-নারে ভাই তোদের ভালোবাসার মাঝে আমি চীনের প্রাচীর হতে চাই না😅
আমি-আচ্ছা আর কিছু বলতে হবে না তোর।তুই যা🤫
.
সুমন চলে গেলো আর মীম আমার কাছে এসে বসলো।
.
আমি-তোমাকে এমন দেখাইতেছে কেন?😕
মীম-কেমন?
আমি-সবার চোখের আড়াল হতে চাইতেছো
মীম-আর বলোনা।সবাই আমার দিকে কেমন ভাবে জানি তাকাইতেছে😖
আমি-দেখতেছে নতুন বউ এর ১০ মাস গননা শুরু হইসে নাকি😁
মীম-তোমাকে কিন্তু সত্যি পিটানি দিবো🙈
আমি-আমি অনেক ভয় পাইলাম😁
মীম-ভয় পরে ঠিকই পাইবা।এখন খেয়ে নাও।
আমি-আজকে তোমাকে আমি খাইয়ে দিবো তারপর তুমি আমাকে খাইয়ে দিবা😉
মীম-না এটা হবে না।
আমি-তাছাড়া আমি খাবো না😒
মীম-আর রাগ করতে হবে না।খাইয়ে দাও
আমি-ঠিক আছে😘
.
আমি মীমকে খাইয়ে দিলাম।মীনের খাওয়া শেষ হলে মীম আমাকে খাইয়ে দিতে লাগলো। এমন সময়ে মীমের বাবা-মা আর ঝুম ঘরে আসলো
.
মীমের বাবা-কেমন আছো বাবা?☺️
আমি-আলহামদুলিল্লাহ ভালো আংকেল
মীমের বাবা-আমি আংকেল এখন শুনতে চাই না😉
আমি-আংকেল আমার একটু সময় লাগবে।আর আপনারা দাঁড়িয়ে আছেন কেন?বসুন😊
মীমের মা-প্রথমে যখন মীম তোমার কথা বলে তখন আমরা অনেক রাগ করেছিলাম।কিন্তু তোমাদের ভালোবাসা আর সুখ দেখে আমাদের ভুল বুঝতে পারতেছি😔
আমি-এখন আর এসব কথা বলবেন না আন্টি।যা হবার সেটা তো হয়ে গেছে😉
মীম-মা তোমরা খেয়েছো🤨
মীমের মা-হ্যা রে মা খেয়েছি।আচ্ছা আমরা পরে আসতেছি☺️
.
মীমের বাবা-মা ঘর থেকে বের হয়ে গেলো কিন্তু আমি ঝুমকে থাকিয়ে দিলাম।
.
আমি-এইযে ছোটগিন্নি
ঝুম-জ্বী বলেন লক্ষী সোনা😁
.
ঝুমের কথা শুনে মীম রাগী দৃষ্টিতে ঝুমের দিকে তাকালো।😡
.
ঝুম-আপু আমার কোনো দোষ নাই।ভাইয়া বলছিলো ডাকার জন্য😞
মীম-একবার ডাকছিস কিছু বলতেছি না।এরপরে যেন আর না শুনি😤 (রাগে)
আমি-আরে একটু মজা তো আমরা করতেই পারি😅
মীম-কেন আমি তোরে যে আদর করি তাতে তোর কম হইতেছে?আমার বোনের মুখে শুনতে তোর খুব ভালো লাগে?বল আর কোন কোন মেয়ে আছে যাদের মুখে এসব বাবু,সোনা,জান্টুস ডাক শুনতে তোর ভাল লাগে।বল😠 (প্রচন্ড রেগে)
আমি-এত রাগ করতেছো কেন?☺️
মীম-নাহ রাগ করবো না।আমি এখন নাচবো,তাই না জানোয়ার?🤬
আমি-আচ্ছা আমার ভুল হইসে।আর হবে না।মাফ করে দেও😓
মীম-আর যদি কখনো কোনো মেয়ের সাথে ঢং করে কথা বলতে দেখি তাহলে তোর খবর আছে।আমি ছাড়া দুনিয়ার যত মেয়ে আছে সবাই তোর নিজের বোন।বুঝলি?😡(রাগে কাপতেছে)
আমি-হ্যা বুঝছি।
মীম-আমি তোমার জন্য আরো খাবার নিয়ে আসতেছি😘
আমি-ঠিক আছে
.
মীম খাবার আনতে গেলো।মেয়েদের বুঝা বড় দায়।হটাৎ রাগ করে আবার সাথে সাথেই কত সুন্দর ভালোবাসা মাখানো কথা বললো😵
.
আমি-তা ছোটগিন্নি বেপার কি?☺️
ঝুম-ভাইয়া দয়া করে আর ছোটগিন্নি বলে আমাকে ডাকবেন না।আপু এবার আমাকে মেরেই ফেলবে।আপুর এমন আচরন আমি জীবনে প্রথম দেখলাম😫
.
ঝুম প্রচন্ড ঘাবড়ে গিয়েছে।বুঝা যাইতেছে।
.
আমি-আচ্ছা বলো আমার খোঁজ কেন খবর নেও না,কারণ কি🤔
ঝুম-আপু তো সবসময় আপনার সাথেই থাকে তাহলে আমার আবার খোঁজ নেয়ার দরকার কি😏
আমি-কেন তোমার একটা দায়িত্ব আছে না?
ঝুম-ভালোই বলেছেন,আমি দায়িত্ব নেই,আর আপু এসে আমার জান কবজ করুক😅
আমি-অনেক ভয় পেয়েছো তাই না?
ঝুম-সত্যি ভাইয়া অনেক ভয় পাইছি
আমি-আচ্ছা আমার বন্ধুকে কেমন দেখলে?😉
ঝুম-একদম ভ্যাবলা কান্ত🤣(হাসতে লাগলো)
আমি-হালকা একটু এরকম
ঝুম-হালকা না ভাইয়া পুরোটাই।একটা মেয়ের সাথে ঠিকভাবে কথা বলতে পারে না আর আসে ফ্লার্ট করতে🤣(আবার হাসি)
আমি-আসলে সুমনের জীবনে মেয়ে বলতে আয়েশা।আয়েশার সাথেও প্রথম প্রথম কথা বলতে লজ্জা পেতো😆
ঝুম-এমনিতে মানুষ হিসেবে খারাপ মনে হয় নাই।দেখি আমাদের মাঝে বোঝাপড়া কতটুকু হয়😉
.
মীম চলে আসলো।
.
ঝুম-আপনি খাবার খান।আমি যাই☺️
আমি-ঠিক আছে
.
মীম-কি কথা বললা তোমরা?🤨
আমি-সুমন আর ওর ব্যাপার নিয়ে
মীম-এত ঘটক হইতে হবে না তোমার😤
.
এর পর সারাদিন মীমের সাথেই কাটলো।পরের দিন আয়েশা,সুমন,ফারিয়া চলে গেলো।ঝুমের মন হালকা খারাপ দেখে ঝুমকে,সুমনের নাম্বার এসএমএস করে দিলাম।আর মুহুর্তেই ঝুমের মুখের গোমরা ভাব দূর হয়ে গেলো 😉
.
এরপর সারাদিন মীমের সাথে থাকা।মীমের ভালোবাসা এর মাঝেই কাটে ঘুম থেকে উঠার সময় মীম।খাবার খাওয়া মীম।গোসল করা মীম।হাটতে যাওয়া মীম।শুয়ে থাকা মীম।ঘুমাতে যাওয়া মীম। এক কাথায় আমার সবকিছু এখন মীম কেন্দ্রিক।তবে এতে আমার খারাপ লাগে না বরং ভালোই লাগে।😍
.
এক মাস পরে.....................
.
.
সবাই আমাকে সমর্থন করবেন।আমার ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন।সবাই ভুল থেকেই শিক্ষা নেয়।আমাকে সবাই সাহায্য করবেন যাতে ভালো একটা গল্প আপনাদেরকে উপহার দিতে পারি।ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
.
…………...আল্লাহ সবার সহায় হোক…………….
…………..………….ধন্যবাদ………………………….
.
.