গল্প= সিনিয়র গার্লফ্রেন্ড থেকে সিনিয়র বউ(পর্ব-16)
লেখক=মুসকান এর আব্বু
.
একটু পরে পিছনে তাকিয়ে দেখি মীম এখনও আমার পিছনে।তাই একটা বুদ্ধি মাথায় আসলো।আমি আয়েশাকে call দিলাম
.
আয়েশা-কিরে হটাৎ এত সকালে call করলি যে🙄
আমি-তোরে আমি এখন যা বলবো সেটা শুধু করবি
আয়েশা-আরে কি হয়েছে বলবি তো🤨
আমি-সেটাই তোকে বলবো তুই চুপ কর
আয়েশা-ঠিক আছে চুপ করলাম।তুই বল
আমি-এখন তুই দ্রুত আমার কাছে আসবি।আর এসে আমাকে নিয়ে যাবি🙂
আয়েশা-কেন?আগে কারণটা তো বল
আমি-দেখ এত কথা বলার সময় নাই।তুই তাড়াতাড়ি আয়😐
আয়েশা-আচ্ছা তুই কোথায় আছিস বল আমি আমাদের একটা গাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছি☺️
আমি-শুধু গাড়ি পাঠালে হবে না।তুই নিজে আয় এসে আমাকে নিয়ে যা
আয়েশা-আচ্ছা ঠিক আছে আসতেছি🙂
আমি-দ্রুত আয়।আর আমি এখন touch & take এর বাম পাশের বাহির রাস্তায় আছি।
আয়েশা-আমি এখনই আসতেছি।☺️
.
আয়েশা ওপর পাশে থেকে call কেটে দিল।আমি নিজের গতিতে চলতে লাগলাম।মীম আমার পিছনে এখনো আছে কি না সেটা জানার খুব ইচ্ছা হইতেছিল।কিন্তু পিছনে তাকানো যাবে না।পিছনে তাকালে মীম বুঝে যাবে যে আমি মীমকে দেখে ফেলেছি।তাই পিছনে তাকানো যাবে না।
.
চিন্তা করতে করতে একটা বুদ্ধি মাথায় আসলো😁।আমি আমার phone বের করে selfie style এ সামনে উচু করে ধরলাম।দেখলাম যে মীম আমার পিছনে পিছনে আসতেছে।
.
আমি ফোনটা আবার পকেটে রেখে দিলাম। ৭-৮ মিনিট পরেই একটা গাড়ি এসে আমার সামনে থামলো।আয়েশা গাড়ি থেকে নামলো।
.
আয়েশা-এখন বল কি হয়েছে?🤨
আমি-আরে এত উতলা হইতেছিস কেন?
আয়েশা-আরে বেটা উতলা হবো না?হটাৎ call দিয়ে আসতে বলার কারণ কি?😒
আমি-দোস্ত এখন যা বলবো শুধু সেটাই করবি।
আয়েশা-আচ্ছা🙃
.
মীম যেহেতু আমাদের থেকে অনেকটা দূরে তাই আমাদের কথা মীম শুনতে পাবে না।মীমকে দেখানোর জন্য আমি আয়েশার চোখের পাশের চুল যেগুলো চোখের সামনে আসতেছিল সেগুলো সরিয়ে দিলাম।
.
আয়েশা-কিরে আমার প্রতি এত যত্ন?কাহিনী কি?😁
আমি-চুপ কর তো।এখন কথা বাদ দিয়ে তোর ওড়না দিয়ে আমার মুখটা মুছে দে
আয়েশা-তোর কি হইসে বল তো?🤨
আমি-কথা বাদ দিয়ে যেটা বললাম সেটা কর😤
.
আয়েশা ওড়না দিয়ে আমার মুখ মুছে দিলো।আর আমি ২ হাত দিয়ে আয়েশার ডান হাত ধরে ফেললাম😘
.
আয়েশা-কি করতেছিস তুই?😳(অবাক হয়ে)
আমি-তোরে বলতেছি আগে গাড়িতে উঠ
.
আয়েশা গাড়ির দরজা খুললো।আমি আর আয়েশা গাড়িতে উঠে বসলাম।
.
আয়েশা-বাসায় চলেন(ড্রাইভারকে আংকেলকে উদ্দেশ্য করে)
আমি-তুই পিছনে তাকিয়ে দেখ
আয়েশা-কেন?🤔
আমি-আগে দেখ।কিন্তু জানালা দিয়ে মাথা বের করিস না। looking glass এ দেখ
আয়েশা-দেখলাম একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে🙄
আমি-মেয়েটা কে হতে পারে একটু চিন্তা কর তো🤨
আয়েশা-এটা কি মীম?🤔
আমি-হ্যা☺️
আয়েশা-আমার মাথায় কিছুই ঢুকতেছে না🤯
আমি-আরে আমি তো মীমরে দেখে চমকায় গেছি।যে এই মেয়ে এখানে কেমনে😲
আয়েশা-আচ্ছা এখন আমাকে পুরো কাহিনী বল তো
আমি-আরে সকালে shop এ গেছি।পিছনে তাকায় দেখি মীম আমার দিকে আসতেছে তাই কেনাকাটা বন্ধ করে বাহিরে এসে দেখি মীম আমাকে follow করতেছে।তাই তোরে call দিলাম
আয়েশা-ও আচ্ছা।কিন্তু আমাকে লাগলো কেন তোর?🤔
আমি-শালী তুই আসলেই একটা গাধা।তুই না আসলে মীমরে কষ্ট দিতাম কিভাবে?😏
আয়েশা-এইবার বুঝতে পারছি কেন তুই আমার সাথে তখন ওইরকম করলি😅
আমি-যাক তাও তুই বুঝতে পারছিস
আয়েশা-আমারে আগে বললে তো একটু ভালো অভিনয় করতাম😁
আমি-তোরে কিছু বলার আগেই তো ১০০টা প্রশ্ন করিস🙄
আয়েশা-.........😒😒😒
আমি-আচ্ছা শোন একটা ভালো idea আসছে আমার মাথায়।যাতে একঢিল এ দুই পাখি মারতে পারবো আমরা😁
আয়েশা-বাহ তাই নাকি?তোর মাথায় আবার idea কবে থেকে আসে?😅
আমি- ফাইযলামি বন্ধ কর।আমি কিন্তু মোটেও মজা করতেছি না
আয়েশা-আচ্ছা বল তাহলে।শুনি তোর idea
আমি-আগে তোর বাসায় যাই,আমারে সকালের করাবি করাবি তারপর বলবো।বুঝলি ফকিন্নি?😁
আয়েশা-ঠিক আছে ভিক্ষুক😜
আমি-এখন আমাকে একটু relax করতে দে
.
আয়েশার বাসায় যেতে বেশি সময় লাগবে না কিন্তু ঢাকা শহর বলে কথা,হটাৎ জ্যাম লেগে যায়।এবারো ব্যতিক্রম না।তাই ১০ মিনিট এর রাস্তা যেতে হয়তো ১ ঘন্টা লাগবে।🤔
.
এদিকে মীম আমার আর আয়েশার কার্যকালাপ দেখে নিজের চোখের পানি 😥আটকাতে পারলো না।ওইখানে দাঁড়িয়ে কান্না করতে লাগলো😢।মীম ভুলেই গিয়েছিল যে রাস্তায় দারিয়ে আছে।জোরে জোরে কান্না 😭করতে লাগলো।
.
একটু পরে মীম কারো ডাকে শুনে নিজের চোখের পানি মুছে নিল।তাকিয়ে দেখলো যে ফারিয়ার bf রকি দারিয়ে আছে।
.
রকি-আপনার কি হয়েছে?ওই লিআস আপনাকে কি কিছু বলেছে?😤
মীম-না ভাইয়া😥 (হালকা কান্না)
রকি-তাহলে আপনি কান্না করতেছেন কেন?🤔
মীম-ভাইয়া আপনি বুঝবেন না😔 (চোখ মুছতে মুছতে)
রকি-আচ্ছা আমি না হয় বুঝবো না।কিন্তু আপনি যে এই রাস্তার মাঝে কান্না করতেছেন।মানুষ তো আপনাকে নিয়ে বাজে কথা বলবে🙃
মীম-...........😔(কিছু বললো না।শুধু একবার আশে আপশে তাকিয়ে দেখলো যে আসলেও মানুষ তাদের দিকে তাকিয়ে আছে)
রকি-চলেন আমি আপনাকে নামিয়ে দিয়ে আসি☺️
মীম-না ভাইয়া লাগবে না
রকি-এমনিতেও একটু পরে ফারিয়াকে আনতে যেতাম তাই আপনি আমার সাথে চলেন☺️
.
মীম আর মানা করতে পারলো না রকি এর সাথে হোস্টেলে গেলো।কিন্তু হোস্টেলে পৌঁছে কারো সাথে কথা না বলে নিজের ঘরে চলে গেলো এমনকি রকি কে ধন্যবাদ পর্যন্ত দিলো না।😶
.
রকি ফারিয়াকে call দিলো এবং ফারিয়া নিচে আসলো।
.
রকি-এই মীম এর কি হয়েছে?🤔
ফারিয়া-কেন বলতো?
রকি-অনেক কান্না করতেছে
ফারিয়া-কান্না করবে কেন?কিসব বলতেছো তুমি🤨
রকি-আরে সত্যি বলিতেছি
ফারিয়া-পুরো ঘটনা বলো তো
রকি-আরে সকালে লিআস এর সাথে দেখা হইসে মীম এর।তারপর লিআস shop থেকে বের হয়ে গেলো।আর মীম ওর পিছনে পিছনে গেল।একটু পর আমি গিয়ে দেখি মীম অনেক জোরে জোরে কান্না করতেছে।🙃
ফারিয়া-তুমি কই ছিলা?🤨
রকি-আমি তো একটু দুরে,shop এর ওইখানে ছিলাম☺️
ফারিয়া-তুমি মীমের সাথে সাথে গেলে সমস্যা কি হইতো শুনি🤪
রকি-.............😔(গার্লফ্রেন্ড এর প্যারা)
ফারিয়া-আর তুমি কেমন ছাত্রনেতা যে, তোমার একজন জুনিয়র ছাত্র এর সব তথ্য বের করতে পারতেছো না😒
রকি-বেবি আমি চেষ্টা করতেছি তো😅 (অসহায় ভাবে)
ফারিয়া-কচু চেষ্টা করতেছো তুমি।আজকের মধ্যে যেন লিআসের সব তথ্য পাই😤
রকি-বেবি আমি দেখতেছি
ফারিয়া-দেখতেছি না।আজকের মধ্যে সব তথ্য দিতে না পারলে আমার সাথে কথা বলবা না😡
রকি-না বেবি এমন করো না😰।চলোনা একটু ঘুরে আসি😚
ফারিয়া-যেটা বলছি সেই কাজটা আগে করো।আর আমি মীমের কাছে গেলাম
.
রকি কে আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে ফারিয়া ভিতরে চলে গেল।রকি কিছুক্ষন বিস্ময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে চলে গেলো।
.
ফারিয়া গিয়ে দেখলো জান্নাত আর জেবিন মীমের ঘরের দরজায় ধাক্কা দিতেছে এবং ডাকা-ডাকি করতেছে।অনেকক্ষন পরে মীম দরজা খুলে দিল।
.
মীমের চোখ দেখেই বুঝা যাইতেছে যে অনেক কান্না করেছে।জেবিন,জান্নাত আর ফারিয়া মীমের ঘরে ঢুকলো।
.
জেবিন-কিরে কি হইসে তোর?কান্না করছিস কেন? 🤔(মীমকে উদ্দেশ্য করে)
মীম-কই কান্না করছি?🙄
জান্নাত-তোরে দেখে বুঝাই যাইতেছে তুই কান্না করছিস🤨
মীম-আরে না পোকা পরছিল তাই চোখে একটু হাত দিছিলাম😅
ফারিয়া-তুই এবার মিথ্যে বলা বন্ধ কর।রকি আমাকে সব বলেছে😕
মীম-..........😭(শব্দ করে কান্না করে উঠছে)
জেবিন- বল কি হয়েছে😨(মীমকে জড়িয়ে ধরে)
ফারিয়া-আমার মনে হয় মীমকে কিছুক্ষন একা থাকতে দেয়া উচিত😓
জান্নাত-আমারো তাই মনে হয়।কান্না করলে মনটা হালকা হয়।পরে না হয় ওর কাছে থেকে জেনে নেয়া যাবে😞
জেবিন- আচ্ছা আমরা পরে আসবো(মীমকে ছেড়ে দিয়ে)
.
জেবিন,জান্নাত,আর ফারিয়ে মীমের ঘর থেকে বের হয়ে আসলো।মীম দরজা লাগিয়ে জোরে জোরে কান্না 😭করতে লাগলো।
.
জেবিন-কিরে তোর bf কি বলছে?🤔(ফারিয়া কে উদ্দেশ্য করে)
ফারিয়া-(রকির সাথে হওয়া সম্পুর্ণ কথপোকথন বললো)
জান্নাত-কিছু তো একটা হয়েছে
ফারিয়া-দেখি সাহেব(রকি) আজকে কি করে?কতটুকু তথ্য দিতে পারে😏
জেবিন-মীমটার জন্য সত্যি অনেক খারাপ লাগতেছে রে😨 (একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে)
জান্নাত-তোরা সকালের খাবার খেয়ে নিস।আমার খাওয়ার ইচ্ছা নাই😞
জেবিন-আমারো আর খাওয়ার ইচ্ছা নাই☹️
ফারিয়া-নিজের বন্ধবীকে এমন কষ্ট পেতে দেখলে কার খাওয়ার ইচ্ছা থাকে বলতো😟।আচ্ছা সবাই নিজের ঘরে যা।মীমকে একটু স্বাভাবিক হলে কথা বলা যাবে।
.
সবাই নিজের ঘরে গেল।আর এদিকে মীম এতই জোরে কান্না😭 করতে লাগলো যে ঘরের বাহিরে থেকেও কান্নার শব্দ শোনা যাইতেছিল।
.
এদিকে জ্যাম এর অবস্থা খারাপ দেখে আমি আর আয়েশা হাটতে হাটতেই ওদের বাসায় চলে আসলাম।
.
আমি-দোস্ত এক গ্লাস ঠান্ডা পানি দে তো।আমি অনেক ক্লান্ত😔
আয়েশা-ওই আমি মনে হয় উড়ে উড়ে আসছি।আমিও তো ক্লান্ত🤨
আমি-হইলো তারপরেও আমাকে আগে দে
আয়েশা-এই নে ধর😒(এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়ে)
আমি-ওই এইডা কি দিছোস তুই?
আয়েশা-কেন কি হইসে?
আমি-চাইলাম পানি আর দিলি 7up?🤨
আয়েশা-ফ্রিজে ঠান্ডা পানি নাই
আমি-যাক ভালোই করছোস।কতোদিন ধইরা খাই না😁
আয়েশা-তুই ভাব মারিস না
আমি-কীসের ভাব মারলাম?🙄
আয়েশা- প্রতিদিন তো কমপক্ষে ১ লিটার coke খাস তুই
আমি-আরে ওইটা coke বুঝলি?7up তো আর খাই না।আচ্ছা এটা বল আংকেল-আন্টি কই?🤔
আয়েশা-সবাই আমার ছোট ফুপুর বাড়ি গেছে।
আমি-তুই যাস নাই কেন?🤨
আয়েশা-এমনিই।আচ্ছা এখন idea টা বল
আমি-ওই আমি কি পালিয়ে যাইতেছি নাকি?যা সকালের খাবারের ব্যবস্থা কর।আর আমি সুমনকে আসতে বলি।কারণ সুমনকে ছাড়া plan করা যাবে না☺️
আয়েশা-আচ্ছা তুই call দে।আমি খাবার ready করতেছি।
.
আয়েশা রান্নাঘরে গেল আর আমি সুমনকে call দিলাম।
.
সুমন-হ্যা বল
আমি-কই আছিস তুই?🤔
সুমন-কই আবার থাকবো?আমাদের ঘরে
আমি-এখনই আয়েশার বাসায় চলে আয়।আমি আয়েশার বাসায় আছি
সুমন-কেন?
আমি-তোরে আসতে বলছি তাই আসবি
সুমন-আচ্ছা আমি আসতেছি☺️
.
সুমনের সাথে কথা বলা শেষ করে খাবার টেবিলে গেলাম।আসলে খাবার আগে থেকেই রান্না করা ছিল।আয়েশা শুধু প্লেটে সাজিয়ে দিছে।
.
আমার আবার খাইতে অনেক সময় লাগে।আয়েশা খাওয়া শেষ করে বসে আছে কিন্তু আমি খেয়েই চলেছি।আমার খাওয়া এতই ধীরগতির যে আমার খাওয়া শেষ হওয়ার আগেই সুমন চলে আসলো।☺️
.
আমি খাওয়া শেষ করে সুমন আর আয়েশাকে নিয়ে সোফায় বসলাম।
.
আমি-সুমন তোর সাহায্য করতে হবে😉
সুমন-কি সাহায্য সেটা বল
আমি-সাহায্য করতে হবে মানে করবি।যদি মরতেও হয় আমার জন্য নিজের জীবন দিয়ে দিবি😁
আয়েশা-আচ্ছা তোর idea টা তো বল
আমি-তুই কি চাস যে,নাফিস ভাইয়া তোর গুরুত্বটা বুঝুক?🤔
আয়েশা-হ্যা অবশ্যই।একটু শিক্ষা দিলেই নাফিস সোজা হবে
আমি-আর আমিও চাই মীমকে একটু কষ্ট দিতে
আয়েশা-তাহলে এখন কি করবি?🤨
আমি-ওইযে তোরে বলছিলাম,একঢিলে দুই পাখি।এমন একটা idea মাথায় আসছে যে নাফিস ভাইয়াও তোকে বুঝবে আর মীমও কষ্ট পাবে😊
আয়েশা-আর কথা না বাড়িয়ে idea টা বল
.
আমি,সুমনয়ার আয়েশাকে আমার idea টা বললাম যেটা শুনে দু জনেই আমার দিকে হা 😲 করে তাকিয়ে আছে।আমি বললাম যে.............................
.
.
গল্প ভালো ভালো/খারাপ যেমনই লাগবে সেটা comment করে জানাবেন।যদি ভুল হয়ে থাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
.
.
.