গল্প= সিনিয়র গার্লফ্রেন্ড থেকে সিনিয়র বউ(পর্ব-22)
লেখক=মুসকান এর আব্বু
.
কফি শেষ করে বিল আমি দিলাম।এর পর কফি হাউস থেকে বের হয়ে হাটতে লাগলাম। মীম হটাৎ থেম গেল।এমন একটা কথা বলো যেটা আমি কল্পনা করতে পারি না।
.
আমি-কি হলো থামলে কেন?
মীম- চলো না দূরে কোথাও যাই☺️
আমি-মানে কোথায় যাবা?
মীম-আজকে সারাদিন আমি তোমার সাথে কাটাতে চাই☺️
আমি-আমি তো ভাবছিলাম তুমি সারাজীবন আমার সাথে কাটাবা কিন্তু এখন দেখি😅
মীম-এই শয়তান আমি কখন বললাম যে শুধু একদিন কাটাবো তোমার সাথে?😒
আমি-একটু আগেই তো বললা আজকে আমার সাথে কাটাতে চাও🙄
মীম-হইসে বাদ দাও।চলোনা কোথাও যাই।একটু দূরে☺️
আমি-আচ্ছা চলো যাই।
.
আমি সবাইকে ডাক দিলাম।
.
আয়েশা-কিরে কি হলো?(আমাকে উদ্দেশ্য করে)
আমি-তেমন কিছু না।আমি আর মীম আজকে একটু আলাদা একটা জায়গায় যাবো☺️
সুমন-যাবিই তো।এখন কি আমাদের কথা তোর মনে থাকবে?😐
নাফিস-তোমার কেউ থাকলে তুমিও যাইতা।কিন্তু তুমি তো দেবদাস🤣(সবাই হাসতে লাগলো)
সুমন-ধুর ভালো লাগে না।তোদের মত বন্ধু থাকতে আমাই এখনো সিঙ্গেল কেন?😑
নাফিস-আরে ভাই তোমারো হবে।চিন্তা করো না।
আয়েশা-আচ্ছা ঠিক আছে যা।তবে সন্ধ্যার মধ্যেই আমার বাড়িতে আসবি।আজকে আমরা সবাই মিলে একটা ছোট পার্টি করব😉
আমি-ঠিক আছে।
নাফিস-লিআস,তোমরা কি বেশীদুরে যাবা?
আমি-এখনো বলতে পারতেছি না ভাইয়া।
নাফিস-আমার বাইকটা নিয়ে যাও।তাহলে তোমাদের সুবিধা হবে।ঢাকার জ্যাম তো জানোই😊
আমি-ধন্যবাদ ভাইয়া।কিন্তু আমার অন্য একটা প্ল্যান আছে😁
আয়েশা-আবার কি প্লান করছিস তুই?তোরে নিয়ে আর পারা গেলো না😤
আমি-কথাটা আগে শোন
আয়েশা-এই তোর এইটা মাথা নাকি প্ল্যান এর ফ্যাক্টরি?😆
মীম-আসলে আমরা আজকে রিক্সায় ঘুরবো🙈
আয়েশা-how romantic😍aww🙊
আমি-আচ্ছা তোদের সাথে সন্ধ্যায় দেখা হবে ইনশাআল্লাহ।☺️
আয়েশা-ঠিক আছে।দেরী করবি না
.
আমি আর মীম একটু দূরে এসে রিক্সা নিলাম।
.
আমি-আসসালামু আলাইকুম মামা।
রিক্সাচালক-ওয়ালাইকুম আসসালাম।মামা কই যাইবেন?
আমি-মামা তোমার যেখানে ভালো লাগে নিয়ে চলো😁
রিক্সাচালক-মামা এইডা কোনো কথা কইলেন?
আমি-আরে মামা বইলো না,তোমার মামী আজকে জেদ করতেছে রিক্সায় ঘুড়বে তাই বের হইছি।কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নাই যাওয়ার😁(মীমেকে কাধ দিয়ে হালকা নারা দিয়ে)
রিক্সাচালক-তাইলে কোন জায়গায় যামু মামা?
মীম-মামা আপনি আমাদের আহসান মঞ্জিল নিয়ে চলেন😊
রিক্সাচালক-ঠিক আছে।
আমি-মামা এই করো কি তুমি?তোমার মামীরে নিয়া যাইতাছি হুড তুইলা দাও😁
রিক্সাচালক-মামা মনে আছিলো না😅
.
রিক্সাচালক মামা হুড তুলে দিয়ে রিক্সা চালাতে লাগলেন।
.
আমি মীমের দিকে অপরুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।মীমকে কত সুন্দর লাগতেছে।মীম 🙈লজ্জায় আমার দিকে তাকাতে পারছে না।
.
আমি মীমের থুতনিতে আলতো করে ছুয়ে দিলাম।তারপর মীমের মাথাটা উপরের দিকে তুলতেই আবার নামিয়ে নিল।🙈
.
মীমের লাল গালদুটো দেখে ইচ্ছা হচ্ছিল আদর করে দেই।কিন্তু রিক্সায় ব্যাপারটা উচিত হবে না।
.
মীম লজ্জায়🙈 কথা বলতে পারতেছে না তাই আমি কথা বললাম।
.
আমি-এইযে মহারানী ভিক্টোরিয়া 😁
মীম-হুম বলো☺️
আমি-এটা কিভাবে সম্ভব?আগে তোমাকে ওই নামে ডাকলে রাগ করতা এখন দেখি রাগ করতেছো না😯(কিছুটা অবাক)
মীম-সেটা আমার ব্যাপার😏
আমি-ঠিক আছে।এখন আমাকে একটা সাহায্য কর😊
মীম-কি সাহায্য?🙄
আমি-তোমার দুই হাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে ফেলো
মীম-কেন?আমাকে দেখতে কি খারাপ লাগতেছে?😐
আমি-নাহ।তোমাকে দেখে নিজেকে কন্ট্রোল করতে খুব কষ্ট হইতেছে😅
মীম-তো কন্ট্রোল করতে বলেছে কে?🙈
.
আমি যেন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারতেছিলাম না।আমি বুঝে উঠার আগেই মীম কাত হয়ে আমার বুকের মাঝে মুখ লুকালো আর আমাকে জরিয়ে ধরলো।আমার শরীরে একটা শিহরন বয়ে গেলো।
.
আমিও মীমকে জড়িয়ে ধরলাম।মাঝে মাঝে মীমের দিকে তাকাতেই চোখে চোখ পরতেছিল আর মীম আরও শক্ত করে ধরতেছিল।
.
এক অদ্ভুত অনুভুতি দুইজনের মাঝে বয়ে চলেছে।আমিরা দুই জনেই কেমন যেন অন্য জগতে চলে গিয়েছি।কীভাবে যে ১.৩০ ঘন্টা পার হয়ে গেছে বুঝতেই পারি নাই।
.
হটাৎ শুনতে পেলাম কেউ আমাদের ডাকতেছে।সামমে তাকিয়ে দেখি রিক্সাচালক মামা হাসতেছে।
.
রিক্সাচালক-মামা নামেন,আইসা পরছি।😁
আমি-এত তাড়াতাড়ি পৌঁছে গেলাম?😅
রিক্সাচালক-যেমন কইরা আছিলেন তাতে আপনেগো ১ বছর পার হইয়া গেলেও ১ মিনিট মনে হইবো😁
আমি-মামা দেখি সেই রোমান্টিক😆মামা কত দিবো আপনাকে?
রিক্সাচালক-২০০ দেন মামা😊
আমি-এইযে মামা নেন আপনার ২০০ আর এইযে ২০ টাকা।চা খাওয়ার জন্য দিলাম😉
রিক্সাচালক-মামা ভালো থাইকেন🤩(খুশি হয়ে)
মীম-তোমাকে যত দেখতেছি ততই তোমাকে আবিষ্কার করতেছি।😗
আমি-কেন কি করলাম আবার?
মীম-তুমি জানো লোকটা ভাড়া বেশি চাইতেছে।তুমি কিছু না বলে সেইটাকা তো দিলা সাথে আরো কিছু টাকা দিয়ে দিলা☺️
আমি-আমি তাকে মাত্র ২০ টাকা দিছি।এই ২০ টাকা আমাদের কাছে থেকে অনেকভাবেই খরচ হয়ে যায়।আমরা খেয়াল করি না
মীম-লোকটাও কত খুশি☺️
আমি-ঠিক বলেছো।এই ২০ টাকা পেয়ে লোকটা অনেক খুশি হয়েছে যেটা অমূল্য।আর রিক্সাচালক মামা এর খুশি দেখে আমি যে কতটা শান্তি পেয়েছি সেটা বলে বুঝানো যাবে না😌
মীম-আমারো অনেক ভালো লেগেছে......😌
আমি-এখন চলো ভিতরে যাই।
মীম-হ্যা চলো।
.
আমি আর মীম অনেক্ষন ঘুরাঘুরি করে একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম।
.
খাবার খাওয়া শেষ করে আবার একটা রিক্সা নিয়ে হাতিরঝিল গেলাম।
.
হাতিরঝিল লেকের পাশে ঘাসের উপরে বসলাম।দেখলাম আমাদের মত অনেক জুটি বসে আছে।
.
আমি মীমের একটা হাত ধরে আছি।মীম একবার আমার দিকে তাকাইতেছে আবার অন্য দিকে তাকাইতেছে।
.
আমি-তো ম্যাডাম বললেন না তো আমার প্ল্যান কেমন ছিল?😁
মীম-আমাকে কাদাতে খুব ভালো লেগছে,তাই না?
আমি-আরে না।আচ্ছা সত্যি যদি এমন হতো আমি আর আয়েশা সম্পর্কে আছি😁
মীম-তোরে খুন করে ফেলতাম😤 (আমার গলায় হাত দিয়ে)
আমি-তুমি না আমাকে ভালোবাসো তাহলে আমাকে খুন করবা কিভাবে?😏
মীম-তুই অন্যকারো হওয়ার চেয়ে তোকে খুন করাই ভালো😡
আমি-বুঝতে পেরেছি আয়েশার কথাই সত্যি
মীম-কোনটা?🤨
আমি-আমার জীবন তেজপাতা হয়ে যাবে😅
মীম-নারে শয়তান তোর জীবন আমি পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবো শুধু কোনো মেয়ের সাথে কথা বলিস।😡
আমি-এমনিতেও কোনো মেয়ের সাথে আমি কথা বলি না🤓
মীম-তোরে আমি বিশ্বাস করি না।তুই যে পাজি, তোরে বিশ্বাস না🤨
আমি-এখন বিশ্বাস করাইতে হলে কি করতে হবে আমার?😐
মীম-তোর ফোন দে।😑
.
আমি ফোন দিতেই আমার সবকিছুর পাসওয়ার্ড,কোড এমনকি gmail নিজের ফোনে add করে নিল।
.
আমি-এটা কি হলো?🙄
মীম-আমার জিনিসেকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমা😏
আমি-তাই বলে এসব?এটা তো রীতিমতো নির্যাতন😵
মীম-একদম চুপ।দরকার হলে আমি শাড়ি পরবো আর তোরে আচলে বেধে রাখবো😏
আমি-ঠিক আছে।তুমি যা বলবা তাই হবে😐
মীম-একটু অপেক্ষা কর তোর আইডিতে একটু দেখি তুই কার কার সাথে কথা বলেছিস😤
.
মীম আমার আইডিতে ঢুকা মাত্রই ওর চোখ লাল হয়ে উঠলো😠
.
মীম-এই তুই কোনো মেয়ের সাথে কথা বলিস না।তাই না?😤
আমি-তাই তো।😊
মীম-এই জানোয়ার তাহলে তোর ফ্রেন্ডলিস্টে এত মেয়ে কেন?🤬(আমার কান ধরে)
আমি-এমনিতেই।ছাড়ো ব্যাথা লাগছে😫
মীম-এমনিতেই না?তুই ওদের সাথে কথাও বলেছিস দেখতে পাচ্ছি।😡
আমি-আরে মাঝে মাঝে একটু লেখালেখি করি।তাই কয়েকজনের সাথে একটু কথা বলেছি।
মীম-এই তোর লেখা মেয়েরা পড়ে কেন?তোর লেখ শুধু ছেলেরা পরবে।😤
আমি-আচ্ছা ঠিক আছে।
মীম-আর একটা মেয়ের সাথেও কথা বলবি না😤
আমি-আর জীবনেও বলবো না,এবারের মত মাফ করে দাও😩
মীম-ঠিক আছে দিলাম😤
.
আরো কিছুক্ষন বসে থেকে আবার রিকশা নিয়ে আয়েশার বাসায় গেলাম।
.
আয়েশা-এই প্রথম দেখলাম সঠিক সময়ে হাজির😲(আমাকে উদ্দেশ্য করে)
নাফিস-আরে মাত্র তো পরিবর্তন শুরু এর,আরো কত পরিবর্তন হয় সেটাই দেখো।😆
আমি-ভাইয়া আপনিও আয়েশার সাথে তাল মিলাইতেছেন?😔
নাফিস-কি করবো ভাইয়া বলো,নারীদের ক্ষমতা এখন পুরুষের চেয়ে বেশী😅
আমি-তাই বলে?🙄
নাফিস-এখন থেকেই সব দোষ নিজের ঘারে নেয়া শিখো, তাছাড়া পরে ঝামেলায় পরবে😊
আমি-তাই নাকি ভাইয়া?😆
নাফিস-হ্যা।আরো শোন দোষ যেই করুক সেটা পুরুষের নিজের করে নিতে হবে।আর sorry পুরুষকেই বলতে হবে।😄
.
আমি আর নাফিস ভাইয়া জোরে জোরে হাসতে লাগলাম।🤣🤣
.
আয়েশা-দাঁড়াও তোমারে দেখাইতেছি 😏
নাফিস-আরে আমি তো মজা করতেছি😅
.
মীম-আচ্ছা ফারিয়া আর রকি কোথায়?🤔(আয়েশাকে উদ্দেশ্য করে)
আয়েশা-ফারিয়া তো রান্নাঘরে আর রকি...🤔
নাফিস-আমি রকি আর সুমনকে একটু বাহিরে পাঠাইছি কিছু জিনিস আনতে☺️
মীম-ও আচ্ছা।
আমি-শোন আমি আর মীম ছাদে গেলাম। আমাদেরকে একটু পরে ডেকে নিস।☺️
আয়েশা-ঠিক আছে যা।☺️
.
আমি আর মীম ছাদে যেতেই মীম হাটুগেরে আমার সামনে বসে পরলো।আমার সামনে একটা আংটি 💍তুলে ধরলো।আর আংটি তুলে ধরতেই আমার চিনতে আসুবিধা হলো না যে এই আংটি আমি কিনেছিলাম মিমের জন্য।
.
মীম-কি আমাকে পরিয়ে দিবে না?
আমি-হ্যা অবশ্যই।
.
মীমের হাতে থেকে 💍আংটি নিয়ে অকে পরিয়ে দিলাম।মীম আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আমিও মীমকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।
.
মীম-তোমার সাথে ঝগড়া করতে করতে কখন যে তোমাকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি জানিনা।সেদিন তোমাকে ভুল বুঝে তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি,আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো😭(কান্না করে)
আমি-এই পাগলি কান্না করো না😚
মীম-আগে বলো আমাকে ক্ষমা করেছো😢
আমি-ক্ষমা করতে পারি তবে একটা কাজ করতে হবে😊
মীম-কি কাজ?🙄
আমি-ভালবাসি বলতে হবে😁
মীম-সকালেই তো বললাম।🙈
আমি-এখন আবার বলতে হবে।না বললে....
মীম-আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি লিআস😍 (আমার কানের কাছে ধীরে ধীরে বলল)
আমি-আমিও তোমায় অনেক ভালোবাসি আমার মুসকান এর আম্মু,আমার রাগী মহারানী ভিক্টোরিয়া😍
.
কথাটা বলার সময় আমি মীমের কোমরে হাত দিলাম আর আমি মীমের কানের লতিতে আলতো করে আমার দাত ছোয়ালাম আর একটা পাপ্পি 😘দিলাম।মীম যেন জড়ে কেপে উঠলো।আমাকে এত শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো যেন মীম চাইছিল আমাকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে ফেলতে।
.
আমারো এই সময়টা ভালো লাগছিল।সারাজীবন যেন এভাবেই পার করে দিতে পারবো😌
.
দীর্ঘক্ষন পরে মীম হালকা করে মাথাটা এলিয়ে দিল।মীম আমার দুই হাত দিয়ে আমার মাথা ধরে আছে আর আমি শক্ত করে মীমের কোমর জড়িয়ে আছি।
.
ধীরে ধীরে আমাদের মুখমন্ডল কাছাকাছি যাইতেছে।আমার ঠোঁট ক্রমশ মীমের ঠোঁটের দিকে আকৃষ্ট হয়ে,মীমের রসালো ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
.
আমরা দুইজন এখন ঘোরের মধ্যে আছি; আমাদের নিশ্বাস ভারী হয়ে গেছে।মীম লজ্জায় 🙈চোখ বন্ধ করে ফেললো।আর আমার মাথা আরো শক্ত করে নিজের দিকে টানতে লাগলো।
.
এখন আমি মীমের নিশ্বাসের উষ্ণতা স্পষ্টভাবে অনুভব করতেছি।আমার ঠোঁট মীমের ঠোঁটের সাথে………………………...
.
.
সবাই আমাকে সমর্থন করবেন।আমার ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন।সবাই ভুল থেকেই শিক্ষা নেয়।আমাকে সবাই সাহায্য করবেন যাতে ভালো একটা গল্প আপনাদেরকে উপহার দিতে পারি।ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন
.
………...আল্লাহ সবার সহায় হোক…………….
…..………….ধন্যবাদ………………………….
.
.