গল্প= সিনিয়র গার্লফ্রেন্ড থেকে সিনিয়র বউ(পর্ব-20)
লেখক=মুসকান এর আব্বু
.
আমি আর আয়েশা হাসতে লাগলাম।
.
সুমন-ওই দেখ নাফিস ভাইয়া;আমাদের দিকেই তো আসতেছে😳
আমি-সবাই দ্রুত কল এ জয়েন হও😬
.
সবাই কল এ জয়েন হওয়ার পরে কানে earbud লাগালাম কিন্তু শুধু এক কানে।
.
আমি-শোন,আমি যদি কোনো কথা বলি সেটাই বলবি একটু বাড়িয়ে বা একটু কমিয়ে অথবা অন্য কথা বলবি না।
আয়েশা-ঠিক আছে🙃
.
এদিকে নাফিস ভাইয়া আমাদের কাছাকাছি চলে এসেছে।
.
নাফিস-তোমার সাথে কিছু কথা আছে।
আয়েশা-এখানেই বলো
নাফিস-এখানে বলা যাবে না।আমার সাথে একটু ওই পাশে চলো😊
.
আয়েশা আমার দিকে তাকালে আমি সম্মতিসূচক মাথা নাড়লাম।আয়েশা আর নাফিস ভাইয়া আমাদের থেকে একটু দূরে গিয়ে বসলো।কিন্তু আমরা তিনজন একে অন্যের কথা শুনতে পারতেছি।
.
নাফিস-তুমি এসব কি শুরু করেছো?🙁
আয়েশা-কেন কি করলাম আবার?🙄
নাফিস-তোমার আর লিআসের এত ঘনিষ্ঠতা আমার ভালো লাগতেছে না☹️
আয়েশা-ভালো লাগতেছে না মানে?লিআস আমার বেষ্টফ্রেন্ড😌(আমি বলতে বলছি)
নাফিস-তাই বলে সবসময় ওর সাথে ঘোরাঘুরি করতে হবে?সব জায়গায় লিআসকে নিয়ে যেতে হবে?😨
আয়েশা-তোমার কি এই কথা বলার অধিকার আছে?😒(আমি বলতে বলছি)
নাফিস-মানে কি বুঝাইতে চাইতেছো তুমি?😑
আয়েশা-আমার জন্য কি তোমার কোনো সময় আছে?😒
নাফিস-তোমাকে কি সময় দেই না?🤔
আয়েশা-বেশ কিছুদিন ধরে তোমাকে কল দেই,sms দেই কিন্তু কোনো খবর নেই তোমার। আমার সাথে কথাও বলো না😕
নাফিস-আমি কাজে ব্যস্ত তাই.....(কথা শেষ করতে পারলো না)
আয়েশা-মেয়েদের সাথে তোমার এত কি কাজ শুনি? Beauty par lour চালু করছো নাকি?😤
নাফিস-..............😣
আয়েশা-আমি আমার ফ্রেন্ডদের সাথে একটু ভালো থাকতেছি,সেটা তোমার ভালো লাগতেছে না?😠
নাফিস-
আয়েশা-এখন চুপ কেন😡
আমি-আর কিছু বলিস না,নাফিস ভাইয়াকে বলার সুযোগ দে😊
.
কিছুক্ষন আমি আর সুমন কোনো কথা শুনতে পারলাম না।ভাবলাম নেটওয়ার্ক এর সমস্যা।কিন্তু একটু পরেই আমরা ভুল প্রমানিত হয়ে গেলাম।
.
নাফিস-আমার অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে😥(আয়েশার হাত ধরে)
আয়েশা-আমার হাত ছেড়ে দাও😤(হালকা ঝাকি দিয়ে)
নাফিস-একটু বোঝার চেষ্টা করো।আমি কোনো মেয়ের সাথে কথা বলবো না।তোমাকেও সময় দিবো।কিন্তু আমার সাথে এমন করো না😢
আয়েশা-তোমরা সব ছেলেরা একইরকম।একজন থাকতেও আরো প্রয়োজন হয়😤( আমি বলতে বলেছি)
নাফিস-তুমি বিশ্বাস করো এমন কিছু না।😩
আয়েশা-আমার জানা আছে।এখন আমাকে এসব বলবে কিন্তু কয়েকদিন পরে আবার আগের মতো😠
নাফিস-বিশ্বাস করো আর কখনো এমন কিছু করবো না।ওরা শুধু আমার এলাকার ছোটবোন🤧(গলার স্বর ভারী হয়ে এসেছে)
আয়েশা-ছোটবোন থেকে ছোটবউ হতে সময় লাগে না😠(সুমন বলতে বলেছে)
নাফিস-দয়া করে এমন করো না আমার সাথে😢 (কণ্ঠস্বর এমন যে এখনই কেদে ফেলবে)
আয়েশা-ক্ষমা করতে পারি,তবে আর কখনো যদি তোমায় কোনো মেয়ের সাথে দেখি তাহলে আমাকে আর পাবে না😏
নাফিস-ওয়াদা করতেছি আর কখনো এমন হবে না☺️
.
আমি আর সুমন মুচকি হেসে দাঁড়িয়ে গেলাম।তারপর আয়েশার কাছে গেলাম।
.
আমি-তোর সমস্যা তো সমাধান হলো এবার আমাকে সাহায্য করিবি😁(আয়েশাকে উদ্দেশ্য করে)
আয়েশা-এটাই শেষ বার,মনে আছে তো?😒
আমি-আরে আছে😉
নাফিস- তোমরা নিয়ে কথা বলতেছো?🙄
.
নাফিস ভাইয়ার কথা শুনে আমরা ৩ জন হেসে উঠলাম😆।ভাইয়া আমাদের দিকে বড় চোখে 😳তাকিয়ে আছে।এরপর আয়েশা,নাফিস ভাইয়াকে সব বললো।আয়েশার কথা শুনে নাফিস যেন একটু অবাক😲
.
নাফিস-এদিকে আসো তুমি😊(আমাকে উদ্দেশ্য করে)
আমি-জ্বী ভাইয়া বলেন☺️(ভাইয়ার কাছে গিয়ে বসলাম)
নাফিস-বড় ভাইয়াকে শায়েস্তা করা,তাই না??😬(আমার কান ধরে)
আমি-ভাইয়া ব্যথা লাগতেছে😫
নাফিস-যাও ছেড়ে দিলাম।কিন্তু পরে দেখে নিবো তোমাকে😏
আমি-যা ইচ্ছা করেন ভাইয়া।তবে আপনার ওয়াদা এর কথা ভুলে যাইয়েন না😁
আয়েশা-এখন তোর সমস্যা মিটে গেলেই হলো😌(আমাকে উদ্দেশ্য করে)
আমি-হয়তো সময় লাগবে☺️
.
কিন্তু আমি জানতাম না যে আমার সমস্যা সমাধানের জন্য সময় আর লাগবে না।আয়েশা আর নাফিস ভাইয়াকে রেখে আমি আর সুমন অন্যদিকে চলে আসলাম যাতে তারা নিজেরা একটু একান্ত সময় কাটাতে পারে।😉
.
সুমন-নাফিস ভাইয়ার কন্ঠটা শুনে আমার অনেক হাসি পাইছে😂
আমি-আমারো।যে বড় ভাইকে দেখে আমাদের ডিপার্টমেন্ট ভয় পায়,গার্লফ্রেন্ড এর সামনে সেই বড় ভাই কি অবস্থা হইসে দেখছিস?🤣
সুমন-আমি ইংরেজ দের শাসন দেখি নাই,কিন্তু পিচ্চি গার্লফ্রেন্ডকে তার চেয়ে বড় বয়ফ্রেন্ডকে শাসন করতে দেখেছি🤣
.
দুজনেই খুব হেসে নিলাম।আজকে যেন আমাদের গল্প শেষ হইতেছে না।🤣😂🤣😂
.
এদিকে মীম দ্রুত ফ্রেশ হয়ে ফারিয়ার ঘরে গেল।
.
মীম-কিরে তোর কত সময় লাগে?🤔
ফারিয়া-বাব্বাহ এত তাড়াতাড়ি ready তুই?
মীম-কেন ready হইতে কত সময় লাগে শুনি?
ফারিয়া-আগে তো ১ ঘন্টার কম সময়ে ready হইতে পারতি না।আর আজকে🤨
মীম-আগে লাগতো দেখে যে এখনো লাগবে তা তো নয়😏
ফারিয়া-আচ্ছা একটু অপেক্ষা কর,রকি আসতেছে।
মীম-তোর বয়ফ্রেন্ড আসতেছে কেন?🙄
ফারিয়া-আরে গাধা রকি আমাদের সাথে যাবে তাই।
মীম-তাহলে আমি যাবো না
ফারিয়া-কেন কি হলো আবার?
মীম-তোরা ২ জন প্রেম করবি আর আমাকে দারোয়ান রাখবি?😑
ফারিয়া-আরে না।এমন কিছু না।আর তোর যদি এমন কিছু মনে হয় তাহলে তুই যেই শাস্তি দিবি মেনে নিবো।খুশি?☺️
মীম-এইবার ঠিক আছে।মনে থাকে যেন😒
.
ফারিয়া আর মোবাইলে কল আসলো।ফারিয়া কল ধরলো না।দ্রুত সেজেগুজে মীমকে নিয়ে বের হয়ে গেলো।
.
রকি আজকে privet car নিয়ে আসছে।এই গাড়িটা মীমের পরিচিত।যখনি ওরা ৩ জন কোথাও যেত,রকি এই গাড়িটা নিয়ে আসতো।
.
রকি-কি ম্যাডাম,এত সময় লাগে?😊(ফারিয়াকে উদ্দেশ্য করে)
ফারিয়া-মেয়েদের ready হইতে একটু বেশি সময় লাগে,বুঝতে হবে তোমার😉
রকি-কেমন আছো মীম?☺️
মীম-ভালো ভাইয়া।আপনি?🙂(fake smile)
রকি-ভালো।এখন চলো যাওয়া যাক।
ফারিয়া-আমি সামনে বসি,তুই পিছনের সিটে বস☺️(মীমকে উদ্দেশ্য করে)
মীম-তুই আর ভাইয়া সামনে বসে প্রেম করবি আর আমি পিছনে বসে কষ্ট পাবো নাকি?তুই আমার সাথে পিছনের সিটে বসবি😁(ফারিয়েকে হাত ধরে টান দিয়ে)
ফারিয়া-শয়তান বেডি😝
মীম-আমি শয়তান ঠিক আছি😅
.
মীম,ফারিয়া উঠে গল্প শুরু করলো।আর রকি গাড়ি চালাতে লাগলো। প্রায় ১০ টা ০৫ এর দিকে গাড়ি থামলো।
.
রকি-আমরা এসে গেছি☺️
মীম-এটা কোন জায়গা?
ফারিয়া-আগে নাম,পরে বলতেছি।
মীম-এটা তো লিআসের ভার্সিটি।তুই আমাকে এখানে নিয়ে আসলি কেন?😲(অবাক)
ফারিয়া-আগে ভিতরে চল।
.
মোবাইলে কল আসলো, মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি আয়েশা।
.
আমি-........(কিছু বলার সুযোগ পেলাম না)
আয়েশা-ওই অনেক বড় সমস্যা হয়ে গেছে রে
আমি-কি হইসে?🙄
আয়েশা-তোর মীম আমাদের ভার্সিটিতে😑
আমি-মানে?🤨
আয়েশা-মীম এর সাথে একটা মেয়ে আর একটা ছেলে।৩ জন আমাদের ক্যাম্পাসে ঢুকলো😑
আমি-তুই অন্য কাউকে দেখছিস হয়তো।মীম এখানে আসবে কিভাবে?😏(অবিশ্বাস এর সুর)
আয়েশা-আরে সত্যি আমি মীমকে দেখেছি🙂(দৃঢ় ভাবে)
.
আমি এবার একটু নড়ে চড়ে বসলাম।
.
আমি-মীম এখানে কিভাবে আসলো?আর আমার ক্যাম্পাস চিনলো কিভাবে?🤔
আয়েশা-সেটা পরে জানা যাবে।এখন কি করবি সেটা ভাব।কিছু না করলে আমাদের plan নষ্ট হয়ে যাবে😬
আমি-কিছু হবে না।শোন তুই আমার সাথে কথা বলতে বলতে আমার কাছে আয়।একদম ন্যাকা ন্যাকা ভাব করে কথা বলবি।পিচ্ছি পোলাপান প্রেমে পরলে যেমন করে কথা বলে ঠিক ওইভাবে😁
আয়েশা-যদি আমার সামনে মীম চলে আসে
আমি-এটা হলে আরো ভালো হয়😁
আয়েশা-মানে বুঝলাম না🙄
আমি-মীম তোকে অনুসরন করতে করতে আমার কাছে পৌছাবে।আর এটা হলেই আমাদের অর্ধেক কাজ শেষ।মীমকে কি দেখিতে পারতেছিস?
আয়েশা-হ্যা,৩ জন মনে হয় তোকে খুজতেছে🙂
আমি-তুমি মীমের সামনে দিয়ে আসবি।আর মোবাইল laud speaker এ থাকবে।তুই যে মীমকে চিনিস,সেটা যেন মীম বুঝতে না পারে😁
আয়েশা-ঠিক আছে।
আমি-আমরা বাগানের পাশে বসে আছি।তুই চলে আয়।
.
যেহেতু নাফিস ভাইয়াকে সব বলা হইসে তাই নাফিস ভাইয়া কিছু মনে করলো না।
.
আয়েশা-আমার যেতে হবে এখন
নাফিস-best of লুচক😉
আয়েশা-thanks.তুমি এখানেই বসো আমি একটু পরে কল দিবো তোমাকে😊
নাফিস-ঠিক আছে।
.
আয়েশা মোবাইলে loud speaker এ দিয়ে আমার সাথে কথা বলতে বলতে আসতে লাগলো।যখনি মীম এর কাছাকাছি চলে আসলো তখন আয়েশা একটু কাশি দিল।আর আমি বুঝলাম যে মীম কাছাকাছি।আয়েশাকে দেখে মীম চিনে ফেললো।
.
মীম-ওই মেয়েটাই তো😳
রকি-হ্যা,ওটাই তো আয়েশা।☺️
.
আমি-তুমি এত দেরী করতেছ কেন জানু?😚
আয়েশা-আমার বাবুটার অনেক কষ্ট হইতেছে।আমি এখনি তোমার কাছে আসতেছি😊
আমি-জানু একটু তাড়াতাড়ি আসো না।আমার আর ভালো লাগতেছে না😚
আয়েশা-আমারো তোমাকে ছাড়া ভালো লাগতেছে না বাবু।আমার পাখা থাকলে কত ভালো হতো।উড়ে উড়ে তোমার কাছে যেতে পারতাম😍
আমি-জানু তুমি তাড়াতাড়ি আসো আমি রাখলাম😚
আয়েশা-ঠিক আছে বাবু।উম্মা😘
.
আমাদের কথাগুলো শুনে মীমের চোখ দিয়ে পানি পরতে থাকে😢
.
মীম-চল এখান থেকে।আমি আর এখানে থাকবো না😢(কাদতে কাদতে বলে)
ফারিয়া-এতদুর কি এমনি এমনি আসছি নাকি?🤨
মীম-তুই শুনলি না ওদের কথা?😫
ফারিয়া-আজকে তুই যদি লিআসকে নিজের ভালোবাসা দিয়ে আপন করে নিতে পারিস,তাহলে পারবি আর না হলে ওকে ভুলে যাবি।আজই শেষ🙂
মীম-কিন্তু……..😔
ফারিয়া-তুই এটা ভুলে যাস না যে,লিআস কিন্তু তোকে একসময় পাগলের মত ভালোবাসতো। হয়তো এখনো সেরকমই ভালোবাসে😉
.
মীম যেন কিছুটা শক্ত হলো।
.
ফারিয়া-চল আয়েশার পিছনে যাই।তাহলেই লিআসকে পাওয়া যাবে।☺️
.
ওরা ৩ জন আয়েশার পিছনে যেতে লাগলো।আর আয়েশা দ্রুত হেটে আমার আর সুমনের কাছে চলে আসলো।
.
আয়েশা-ওরা আমাকে অনুসরণ করতেছে😬
আমি-জানি আমি।এখন তুই নাফিস ভাইয়াকে কল দে(আয়েশাকে উদ্দেশ্য করে)
.
আয়েশা নাফিস ভাইয়াকে কল দিলে,আমি বুঝিয়ে দিলাম যে কি করতে হবে।এরপর সবাই আবার group call এ join হলাম।পিছনে তাকিয়ে দেখি….......😲😲
.
.
সবাই আমাকে সমর্থন করবেন।আমার ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন।সবাই ভুল থেকেই শিক্ষা নেয়।আমাকে সবাই সাহায্য করবেন যাতে ভালো একটা গল্প আপনাদেরকে উপহার দিতে পারি।ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।আর খারাপ লাগলে ইনবক্সে যা ইচ্ছা বলতে পারেন,সমস্যা নাই।
.
….........আল্লাহ সবার সহায় হোক…………….
.
…………........….ধন্যবাদ………………………….
.
.
.
.