দরজাটা খুলতেই যা দেখলাম, তাতে আমার চোখ খুলে পড়ে হাতে চলে আসার উপক্রম হলো। দেখলাম, স্টোর রুমের ভেতরে এককোণায় বসে আছে তেয় এবং হেইরান। দুইজনের মুখ চুপসে আছে, তেয় তো না পারে কান্না করে দেয়। এতোরাতে স্টোর রুমে ইঁদুরের মতো এই দুইটা কী করছে!! তাড়াতাড়ি গিয়ে ওদের কাছে দাঁড়াতেই তেয় গড়গড় করে বলতে লাগলো,
- " আমাদের কোন দোষ নেই। আমি নিষ্পাপ! " বলেই চুপ করে গেলো। খেয়াল করে দেখলাম, তেয় এখনো হেই এর একটা হাত ধরে আছে। মাথাটা গরম হয়ে গেলো। এই চিপকী একসাথে কয়জনের পেছনে লাগছে! হবি ভাইয়ের লেজ মোটামুটি ছিঁড়ে ফেলেছে ঝুলে থাকতে থাকতে, এখন আবার তেয়! রেগে মেগে তেয় কে জিজ্ঞেস করলাম,
- " তুমি সাধু না নিষ্পাপ সেটা পরের বিষয়, আগে বলো হেই এর হাত এখনো ধরে রেখেছো কেন?" আমার কথায় তেয় ওর আর হেই এর হাতটা পেছনে লুকিয়ে ফেললো। এবার আমার ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলো। তাড়াতাড়ি ওর কাছে গিয়ে একটানে হাতটা পেছন থেকে টেনে সামনে আনলাম। এবার যা দেখলাম, তাতে আমি রাগ হবো,নাকি অবাক- সেটাই বুঝতে পারছিনা। তেয় আর হেই এর হাত শক্ত হয়ে জোড়া লেগে আছে, সম্ভবত সুপার গ্লু এর কারণে। কিন্তু এমন অদ্ভুত কাজ ওরা করতে গেলো কেন!
- " এসব কী তেয়? এভাবে হাতে গ্লু লাগিয়ে জোড়া বেঁধে ঘুরছো কেন? এবার হেই ভ্যাঁ করে কেঁদে দিয়ে বললো,
- " অ্যালোহা, প্লিজ সাহায্য করো আমাদের!" বলে কি মেয়েটা! ওদের সাহায্য করবো! তাও আমি! এবার তেয় বললো,
- " কাহিনীটা বলি- রাতে খাবারের পর আমি প্রতিদিন একটু হাঁটাহাঁটি করি, সেটা তো জানোই। আজও বাড়ির ভেতরেই হাঁটছিলাম। হঠাৎ ইউনা বললো ফ্রিজ থেকে ওর জন্য ঠাণ্ডা পানি নিয়ে আসতে। আমিও গেলাম। কিন্তু ফ্রিজে হাত দেয়ার সাথে সাথেই আমার হাতে কি একটা যেন লেগে গেলো। দৌঁড়ে ওয়াসরুমে গিয়ে হাতে পানি দিতে যাচ্ছিলাম, তখনি হেইও এদিকেই আসছিলো। ইউনার সাথে ধাক্কা খেয়ে হেই এর হাতেও আমার হাতে থাকা জিনিসটা লেগে যায়। আর তখন থেকেই এই জোড়া লাগা হাত নিয়ে ঘুরছি।এরপর সবার চোখ বাঁচিয়ে কোনরকমে লুকিয়ে এখানে এসেছি। ভুলেও যদি সখিনা আন্টি দেখতে পারে, তাহলে আমাকে মেরে কালকে দুপুরে ছাদে শুকাতে দিবে। " শেষের কথাটা বলার সময় তেয়কে দেখে মনে হচ্ছিলো বেচারা চরম ভয় পেয়েছে। আমি কিছু বলতে যাবো, এমন সময় পেছন থেকে সিনেমার ভিলেনদের মতো আগমন ঘটলো ইউনার। ও এসেই একটা হাসি দিয়ে বললো,
- " তোমাদের একসাথে হাতধরা অবস্থায় খুবই সুন্দর লাগছে দেখতে, যেমনটা বিকেলে ছাদে লেগেছিলো। " ওর কথা শুনেই আমার মাথায় ঢুকলো, এ কাহিনীর রচয়িতা কে। বিকেলে তেয় হেই এর হাত ধরে হবি ভাইয়ের কাছ থেকে এনে নিজের পাশে বসিয়েছিলো,তার আর ঐ ভুলের জন্য এখন পার্মানেন্টলি দুইজনের হাত এক করে দিয়েছে এই ইউনা। ভাবা যায়! এই মেয়ের ভালোবাসাও ভয়ানক পর্যায়ের! তেয়ও এতোক্ষণে বুঝে ফেলেছে বিষয়টা, আর সেটা ওর চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। এতক্ষণের অসহায় চেহারায় এখন মুচকি মুচকি হাসির আভাস পাওয়া যাচ্ছে। আমরা ৩জন স্টোর রুমেই বসে আছি, এমন সময় ইউনা উঠে কই যেন গেলো। কিছুক্ষণ পরে একটা মগে কি যেন এনে দুইজনের হাত সেটাতে ডুবিয়ে সেই হাত ছাড়ালো। হাত ছাড়া পেতেই হেই মুখে একটা শুকনো হাসি দিয়ে বললো,
- " এ বাড়িতে অনেক অদ্ভুত অদ্ভুত ঘটনা ঘটে।" ইউনা পেছন থেকে বলে উঠলো,
- " সবই সখিনা আন্টির দোয়ার বরকতে " বলেই দাঁতে দাঁত চেপে একটা হাসি দিলো। হেই চলে যেতেই আমি বের হয়ে যাবো, এমন সময় দেখলাম- তেয় ইউনাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে হাসতে হাসতে বলছে,
- " এতো হিংসা! তুমি শুধু একবার বলে দিতে, তাহলে আমি সবছেড়ে তোমার কাছে চলে আসতাম!" বলেই হা হা করে হাসতে লাগলো। ইউনা অদ্ভুত ভাবে তেয় এর দিকে তাকিয়ে আছে। আশ্চর্য বিষয় হলো, তেয় এর এমন খোঁচা মারা কথা শোনার পরেও উল্টা কোন কথা না শুনিয়ে মাথা নিচু করে বেরিয়ে গেলো ইউনা।
YOU ARE READING
secret admirer (Complete)
Fanfictionআসসালামু আলাইকুম। এটি সম্পুর্ণ কাল্পনিক গল্প। কারো সাথে মিল পেলে লেখক বা পোস্ট দাতার কোনো দোষ নেই। ভুল গুলো ক্ষমা সুলব দৃষ্টিতে দেখবেন ff : sceret admirer jung hoseok ( jhope) Writer -Alloha Sarsalmaz গল্পটা আমার লেখা নয় আমার এক বড় আপুর লেখা।...