কোনো এক জ্ঞানী ব্যক্তি বলেছিলেন, শোনা হলো মনোযোগ দেয়ার উত্তম পদ্ধতি। কথাটা ডায়েরিতে তুলে নিয়েছি আমি। আমার জীবনে কথাটা বিশেষ ভূমিকা রেখেছে বলেই মনে হয়। অনেক দিন ধরে আমি শোনার অভ্যাস করেছি। আমি সাধারণত শুনি। যে কোনো আড্ডা-আলোচনায় লিসেনার হিসেবে ভূমিকা পালন করি। যে কথা বলতে পছন্দ করে তাকে বলতে উৎসাহ দিই। আমার বন্ধু তিন্নি আমাকে বলে, তো মি. লেডি কিলার। তুমি মেয়েদের পটাও কেমনে? কী করো আসলে? কেমনে তারা তোমারে দেখে ভুলে যায়? আমি বলি, দোস্ত, তুমি তো জানো, আমি দেখতে ভালো না। হোদল কুতকুতের মতো চেহারা। কথাও গুছিয়ে বলতে পারি না। পকেটের অবস্থাও তো তুমি জানো। অনলি ওয়ান থিং আই ক্যান ডু ইজ টু লিসেন। আমি শুধু শুনি। তিন্নিকে নিয়ে সমস্যা হলো, একটা সূত্র দেয়ার পর সে সেই সূত্র অনুসারে সবকিছু ব্যাখ্যা করা শুরু করে। ওইদিন থেকে মন দিয়ে ওর কথা শুনতে থাকলে তিন্নি আমাকে সতর্ক করে। তার ঘোরতর সন্দেহ হতে থাকে যে ওকে পটানোর জন্য আমি বাড়তি মনোযোগ দিয়ে ওর কথা শুনছি।
ও হয়তো ফোনে কথা বলছে, কোনো একটা ঘটনার বিবরণ দিচ্ছে। আমি মন দিয়ে শুনতে থাকলে বলে, হারামজাদা, এখন কি তুমি আমারে পটাইতেছো?
মানে কী? কখন তোমারে পটাইলাম? কী আজব কথা কও। তুমি তো আমার বন্ধু। তোমারে পটানোর কোনো দরকার আছে আমার?
ক্যান, তুমি সেদিন কইলা না যে তুমি শুধু শোনো? শুনে শুনে তুমি মেয়েদের পটাও? কয়দিন থেকে আমি লক্ষ করতেছি আমি কথা বললে তুমি মন দিয়ে শোনো। ব্যাপার কী? তুমি কি আমারে পটাইতে চাইতেছো?
টিন। তিন্নিকে সংক্ষিপ্ত করে আমরা টিন ডাকি। কবে কী বলছি তুমি ওইটা নিয়া পইড়া রইছো। তুমি জানো না, আমি মাঝে মাঝে বানায়া বানায়া কথা বলি, তুমি তো জানো, নাকি? তুমি জীবনেও আমারে কাউরে পটাইতে বা প্রেম করতে দেখছো, বলো?
তিন্নি একটু আশ্বস্ত হয়।
শোনো, তুমি ভবিষ্যতে আর কোনোদিন বানায়া বানায়া কথা বলবা না, ঠিকাছে? আর শোনো, কোনো দিন যেন না দেখি যে তুমি মন দিয়া আমার কথা শুনতেছো। তাইলে তোমার খবর আছে। তুমি মন দিয়া কথা শুনলেই ক্যান জানি আমার হাসি লাগে। মনে হয় তুমি আমারে পটাইতে চাইতেছো।