তিন মাস পর তিন্নি ফোন করেছে। বন্ধু। এই একটা কথা বলার পর থেমে আছে। চুপ করে আছে।
বলো।
কী বলব?
কেন ফোন করেছ?
কেন, আমি ফোন করতে পারি না?
তা তো পারোই। কিন্তু করো না তো।
তুমি করো? আমি বুইঝা উঠতে পারি না শুভ, তুমি এত বছরের একটা সম্পর্ক একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিংকে শেষ পর্যন্ত একটা শরীরের বন্ধনে এনে বেঁধে ফেললা কেমনে।
আমি এ রকম করেই ভাবি। আমার মনে হয়, তুমি আমার নও। মনে হয়, তোমার ওপর আমার কোনো অধিকার নেই।
চুমো দিলেই অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে?
হবে।
ওকে। বলো কোথায় আসতে হবে। কবে দেখা করবে বলো।
এই অনুভব কি তোমার ভেতর থেকে এসেছে?
দেখো, আমি অনেক ভাবলাম এই কয় মাসে। আমি তোমাকে হারাতে চাই না। আমি কখনো চাইনি যে তোমার সঙ্গে এমন সম্পর্ক হোক। কারণ আমি জানি, একবার রহস্য খুলে গেলে আর আমার প্রতি তোমার কোনো আকর্ষণ থাকবে না।
এইটা ঠিক না। দেখো আমাদের বন্ধুত্ব ঠিক থাকবে।
বলো, কবে কোথায় কীভাবে দেখা করবে?
রওনক আর নওরোজ নেপাল গেছে। হয়তো এখন তারা কোনো বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দলে ভিড়ে শাং-রি-লার সন্ধানে হিমালয়ের পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরছে। অপূর্ব অসাধারণ রওনক। আমার সব গল্প ওকে বলেছি। সুপর্ণা ও তিন্নির কথাও। রওনক বলেছে, তিন্নির সঙ্গে আমার বিয়ে হলে সে বড় একটা পার্টি দেবে। রওনক পৃথিবীতে বিরল সেই মানুষদের দলে, ঈর্ষা যাদের স্পর্শ করেনি। স্বামীর প্রেমিকাদের সে ভালোবাসে, প্রেমিকের প্রেমিকাদেরও ভালোবাসে। রওনক হলো চিরযৌবনা ক্ষিপ্র সেসব খাপখোলা তলোয়ার, সময় যাদের গায়ে সামান্য মরিচা ফেলতে পারেনি।
আমি রওনককে বলি, ধরো তিন্নি যদি কোনো দিন এসে আমাকে বলে, তুমি শুধু আমার।
তুমি শুধু তারই হবে।
তোমার কোনো দাবি থাকবে না?