সাবিনা মেহনাজের চিঠির জন্য অপেক্ষা করতে করতে আমার মনে হয়, জীবনের এই সংকটময় সময়ে আমার উচিত ফয়সল ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলা। মোবাইলে ফয়সল ভাইয়ের নাম্বারটা খুঁজলাম। খুব অবাক করা ব্যাপার। নিত্যপ্রয়োজনীয় এ নাম্বারটা ফোনে নেই। কেমনে এটা হলো? আমি কি ভুলে নাম্বারটা ডিলিট করেছি? মনে করতে পারছি না। গত ছয় মাসে সুপর্ণার সঙ্গে দিন-রাত কাবার করা কিছু সময় গেছে। এর মধ্যে আমি কাজ করেছি নাকি খেয়েছি না কোথাও গেছি আমার মনে পড়ে না। সম্ভবত গত ছয় মাসে ফয়সল ভাইকে একবারের জন্যও ফোন দেয়া হয়নি। মে বি। হয়তো উনি একবার দু'বার দিয়ে থাকবেন। ঠিক মনে নেই। একটা ব্যাপার হতে পারে। এই ছয় মাসে একবার আমার হ্যান্ডসেট বদল হয়েছে। হয়তো আগের হ্যান্ডসেটে ফয়সল ভাইয়ের নাম্বার সেভ হয়েছিল। সেট বদল করার সময় সিমের সঙ্গে নাম্বারটা আসেনি। কিন্তু উনি ফোন করলে তো নাম্বারটা থাকার কথা। তার মানে উনি অনেকদিন আমাকে ফোন করেন না। শুধু ফেসবুকের ওয়ালে কমেন্ট করেন। কিন্তু যদি কোনোভাবে উনি বুঝতে পারেন, আমার সেটে তার নাম্বার নেই তাহলে খুব মর্মাহত হবেন। আমি তাকে একটা মেসেজ দেই, ফেসবুকে। ফয়সল ভাই। কল মি অ্যাট ওয়ান্স। আরজেন্ট। নো ব্যালান্স অন মাই সেল।
অনলাইনে ছিল ফয়সল। সঙ্গে সঙ্গে ফোন করল।
নাম্বারটা আসলেই ফোনে নেই। বললাম, ভাই আবারও তিন্নি বিষয়ক জটিলতা। আপনার সঙ্গে দেখা করতে চাই।
এত সুন্দরী মেয়ের এখনও বিয়ে হয় না কেন বুঝলাম না। ওই পার্ট তুমি শেষ করতে পারো নাই? এক কাজ করো। সন্ধ্যায় এনামে আসো। বিয়ার খেতে খেতে কথা বলব। ওকে?
ফয়সল ভাই হস্তরেখা বিশারদ। লম্পট ব্যক্তি। প্রতি সন্ধ্যায় বিয়ার সহযোগে আহার সারেন। নিদ্রা যাওয়ার আগে আর কিছু খান না। এনাম রেস্টুরেন্ট ও বার তার প্রিয় এলাকা। বড় লম্বা সাইজের অ্যাটলাস বিয়ার খান প্রতি সন্ধ্যায় চারটা। ঘুমান রাত তিনটায়, ওঠেন ছয়টায়। অ্যাটলাস না পেলে হ্যানিকেন খান। অস্ট্রেলিয়ান ভল্লুক বলেন এইটারে। পরিকল্পনা কমিশনে চাকরি করেন। আমি সন্ধ্যা বেলা এনামে গিয়ে দেখি টু সিটেড একটা টেবিলে বসে আছেন। সামনে দুইটা চিলড অ্যাটলাস।