ইরিনের মন ভালো নেই। খুব আফসোস হচ্ছে কেন এই কাজ করলো সে ! তাও আবার এই মানুষটার জন্য ! আজ প্রথমবার নিজেকে প্রচন্ড বোকা মনে হচ্ছে । কেন পি.এইচ .ডি টার কথা ভুলে গেলাম ? রিম্পোর কথাও খুব মনে পরছে। কিন্তু এই লোকের সাথে আর কিছুতে থাকা সম্ভব নয়। যাওয়ার একটা ব্যবস্থা করা দরকার।
ইরিন ব্লু প্রিন্টের কাগজ খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছে। কিন্তু কি যেন গোলমেলে। নিজেও বুঝে উঠতে পারছে না। ওর তৈরি ব্লু প্রিন্টটাই তো এটা ? বারবার কাগজটা নেড়েচেড়ে দেখছে ।অন্য কারো তো এ ব্যাপারে জানবারই কথা নয় , তাহলে ওর নয় তো আর কার হবে ?
ইরিন : কি যেন ? কিছুই ভালো লাগছে না। প্রফেসর কে এবার দেখাবো কি ? না না তাহলে সব ফাঁস হয়ে যাবে ।
কাগজপত্র সব গুছিয়ে রেখে ইরিন বারান্দায় গেল । চাঁদের সে এক অপরূপ মায়াবী দৃশ্য। ইরিন ভাবছে : এই মায়া , সৌন্দর্য , অপরূপ দৃশ্য কখনো ভোলা সম্ভব নয়। আজ ইরিন তার তৈরি কৃত্রিম জগতে। ঠিক যেমন যেমন ভেবেছিল তার চাইতেও বেশি সুন্দর সব কিছু। শুধু যে মানুষটার জন্য এত কিছু সে ছাড়া সব কিছুই সুন্দর । চেয়েছিলাম আমাদের দুজনের মাঝে যেন অন্য কেউ না থাকে , কিন্তু তৃতীয় ব্যক্তি যেন কোনোভাবেই পিছু হটতে চাইছে না।
ইরিন চোখ বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। হঠাৎ কে যেন পেছন থেকে ইরিনের চোখ ধরেছে খুব শক্ত করে। ইরিন দু হাত দিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে।
ইরিন : কে ? কে ? ছাড়ুন বলছি ?
প্রফেসর : ধুর্ বোকা ! আমি ছাড়া আর কে আছে এখনে। চলুন একটা জিনিস দেখাই।
ইরিন : কিন্তু চোখ তো ছাড়ুন।
প্রফেসর : না , আগে আসুন তো।
প্রফেসর যেন টানতে টানতে কোথায় নিয়ে এলো । চোখ খুলতেই দেখে সাগরের বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে বালুর ওপর আর তার মাথার ওপর রাশি রাশি তারা মিট মিট করে জ্বলছে। এভাবে কখনো খোলা আকাশে সে তারা দেখে নি।
প্রফেসর : কি সুন্দর তারা, দেখেছেন !
ইরিন একটা বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো : খুব ইচ্ছে ছিল , প্রিয় মানুষের হাত ধরে এভাবে তারা দেখবো । আসলে সব কিছু সবার জন্য ভালো হয় না ।
প্রফেসর : হুম , ঠিক বলেছেন । সব কিছু সবার জন্য ভালো হয় না । ধরুন এই মুহূর্তে আমরাই দুজনের প্রিয় মানুষ হতে পারতাম কিন্তু ....
ইরিন : কিন্তু ?
প্রফেসর : কিন্তু তা তো নই আমরা । আমাদের প্রিয় মানুষেরা এখানে আমাদের মাঝে তো থাকতে পারতেন , কিন্তু তাও তো নেই ,বলেই প্রফেসর কেমন একটা অদ্ভুত হাসি দিলেন।
ইরিন : খুব মিস করছেন ওনাকে তাই না ?
প্রফেসর শুধু মাথা নাড়লেন।
ইরিন : তাহলে যাওয়ার ব্যাপারে ভাবছেন না কেন ?
প্রফেসর : ইরিন ! আপনার কি মনে আছে , আমরা কম্পিটিশনের জন্য একটা গেজেট তৈরি করছিলাম ?
ইরিন শুধু মাথা নাড়ল কিন্তু ভেতরে ভেতরে কেমন একটা ভয় পেল।
প্রফেসর : এখন আমাকে বলুন কেন এমন করলেন ?
ইরিন মাথা নিচু করে বসে আছে । খুব ভালোভাবেই বোঝা যাচ্ছে প্রফেসর কিছুই ভুলে জাননি , সবই মনে আছে । অর্থাৎ ইরিনের গেজেটে ভুলে যাওয়ার অপশনটি কাজ করে নি।
কিছুক্ষণ পর প্রফেসরের দিকে তাকিয়ে দৃঢ় কন্ঠে বললো : ভুলটাও আমার আর দোষটাও , যে কোনো শাস্তি পেতে আমি তৈরি ।
![](https://img.wattpad.com/cover/164775597-288-k770526.jpg)
YOU ARE READING
ইরিনের সিক্রেট সোসাইটি
Romanceইরিনের রিজাইনিং লেটার জমা দেওয়ার পরই দেখা হয় প্রফেসর নিকের সাথে। তারপর....