প্রফেসর: কিছুই যখন কারো মনে পড়ছে না। তখন আর কি করার বলুন। আমার মনে হয় এখন আর মাথায় প্রেসার দিয়ে লাভ নেই। চলুন সমুদ্রের পাড় থেকে ঘুরে আসি।
ইরিন: হুমম্।
প্রফেসরের বারান্দায় আমাদের বাইরে বের হওয়ার দরজাটা। কি আশ্চর্য! দরজাটা তো আমার ঘরে হওয়ার কথা ছিল, ইরিন ভাবছে। তবে কি আমারই কোনো ভুলের কারণে এমন হয়েছে? হতে পারে, ঐ সময় আমি সবকিছু নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলাম। ঠান্ডা মাথায় তো কাজটা করিনি!
একটা ছোট্ট দ্বীপ। তার এক পাশে বিশাল সমুদ্র। আর অপর দিকে বিশাল পাহাড়। সৈকত থেকে একটু দুরে একটা ছোট্ট পাহাড়ে আমার এই বাড়ি। এই দ্বীপের যতদূর পর্যন্ত চোখ যায় আর কোথাও কোনো মানুষের চিহ্ন নেই। এমনকি কোনো বাড়ি ঘর পর্যন্ত নেই। আর আমাদের এই বাড়ি বলতে সব কিছুই আমার ডিজাইন করা।দুটো বেডরুম, যার সাথে রয়েছে দুটো ছোট বারান্দা। তবে বাড়ির মেইন গেইট টা প্রফেসরের বারান্দায়। একটা মাঝারি আকারের ডাইনিং রুম, যার একপাশে কিচেন আর অন্য দিকে একটা বিশাল লিভিং রুম। লিভিং রুমটা বাড়ির একদম পেছন দিকে। এর সাথে রয়েছে একটা বিশাল বারান্দা। বারান্দাটা পাহাড়ের সাথে। পাহাড় থেকে এখানে দিয়ে নেমে আসা ঝর্ণা একটা ছোট পুকুর তৈরি করেছে। আর আমাদের বারান্দা দিয়ে এই পুকুর বরাবর নেমে গেছে সিঁড়ি। এক অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝখানটা আমার এই স্বপ্নের বাড়ি আর সাথে এই স্বপ্নের মানুষ। ভাবতেও অবাক লাগে আজ আমি আর প্রফেসর এভাবে, এখানে, একসাথে!
সৈকতের বালুতে হাঁটতে হাঁটতে এক জায়গায় বসলাম। এতক্ষণ ধরে দুজনেই হারিয়ে গিয়েছে প্রকৃতির মাঝে। হঠাৎ প্রফেসর নীরবতা ভেঙে জিজ্ঞেস করলেন,
প্রফেসর: তো ইরিন! যাওয়ার ব্যবস্থা তো আর এখনই হচ্ছে না। কিন্তু খাওয়ার ব্যবস্থা! ওটা ছাড়া তো বেঁচে থাকা দায় হবে!ইরিন বড় করে হাসি দিয়ে, আরে সে আর কি ব্যাপার আমি তো, বলতে যেয়েই থেমে গেল ইরিন। কি বলতে যাচ্ছিলাম? এখনই তো ধরা পড়ে যেতাম। চুপ করে ভাবতে লাগল।
প্রফেসর: হুমম্ আপনি?
ইরিন: ওহ , তাই তো! কি হবে এবার? চলুন বাড়ি গিয়ে দেখি আগে কিছু পাওয়া যায় কি না? নইলে আদি মানবের মত খাবার খুঁজতে হবে আর কি!
প্রফেসর ইরিনের দিকে কেমন একটা হাসি দিলেন, যার মানে ইরিন ধরতে পারল না।
দুজনে বাড়ি ফিরে খাবারের খোঁজে লেগে গেল। ইরিন ভালো করেই জানে কোথায় কি পাওয়া যাবে, তা সে খাবারই হোক বা অন্য কিছু! তারপরও শুধুমাত্র দেখানোর উদ্দেশ্যে সে কিচেন থেকে শুরু করে সব জায়গায় দেখতে লাগলো।
প্রফেসর: ইরিন! এই দিকে আসুন। জলদি!
ইরিন: কি হয়েছে?
প্রফেসর ফ্রিজ দেখিয়ে: টাডা! এখানেই সব। যাক আর আদিমানব হতে হল না আপনাকে।
ইরিন মনে মনে বলছে ওটা কথার কথা ছিল জনাব!
ইরিন: চলুন তবে আগে পেটের ডিমান্ড পূরণ করি। পরে বাকিটা দেখা যাবে।
প্রফেসর: হুমম্ তাই তো। আর দেখারই বা কি আছে? এক সপ্তাহ আগে একটু মুক্ত হাওয়ায় ঘুরে নেই। এরপর ফেরার প্রস্তুতি নেব। এমন পরিবেশে আর এমন ভ্যাকেশন চাইলেই কি আর পাওয়া যায়? অবশ্য আপনার যদি আপত্তি না থাকে!
ইরিন: তা তো ঠিকই। আপত্তি নেই আমার।
ইরিন ভাবছে প্রফেসর হঠাৎ একটু বেশিই চেন্জ নয় কি? বুঝতে কষ্ট হচ্ছে এই মূহুর্তে আমার কি খুশি হওয়া উচিত হবে কি না?প্রফেসর: পেছন দিকের ঝর্ণাটা কিন্তু অসাধারণ!
ইরিন: হুমম।
প্রফেসর: মিস রিমি থাকলে হয়তো আরো ভালো হত কি বলেন? আপনি একা ফিল করতেন না।
কোনো মতে রাগ সামলে ইরিন বলল: আমি একা ফিল করছি আপনাকে কখন বললাম। আর এমন সুন্দর একটা জায়গায় একা সবচেয়ে ভালো এনজয় করা যায়। কারোর প্রয়োজন পড়ে না।
প্রফেসর: হুমম্। কিন্তু এই মূহুর্তে আপনি একা অনুভব করছেন আর আমি তা বুঝি।
ইরিন: আপনি কিছুই বোঝেন না।
ইরিন মনের চাপা কষ্ট নিয়ে উঠে গেল।প্রফেসর মনে মনে বলতে লাগল: এটাই তো চাই!
YOU ARE READING
ইরিনের সিক্রেট সোসাইটি
Romanceইরিনের রিজাইনিং লেটার জমা দেওয়ার পরই দেখা হয় প্রফেসর নিকের সাথে। তারপর....