অধ্যায়-২৩

57 1 0
                                    

প্রায় পঁচিশ মিনিট পার হয়ে গেলেও ইরিন ঘরে ফেরে না। প্রফেসর ইরিনের খোঁজে বের হয়। ইরিন সমুদ্রের সামনে বালুর ওপর বসে আছে।

প্রফেসর : ইরিন !

ইরিন : প্লিজ আপনি ঘরে যান।

প্রফেসর : আসলে....

ইরিন : কেন প্রতিবার আমাকে এভাবে আঘাত করে কথা বলেন ? আমি তো আপনার কাছে প্রতিদান চাই না। হ্যাঁ , আমার একটা ভুলের জন্য এত কিছু হয়ে গেল। এই অপরাধবোধ আমাকে ছিঁড়ে খাচ্ছে। আমি আপনাকে ভালোবাসি তার মানে এই না যে আমাকে ভালবাসাতেই হবে আপনার। কিন্তু একটু ভালো ব্যবহার কি আমি পেতে পারি না ? আমার একটা ভুলের জন্য আপনি যেভাবে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করেছেন তার কোনো তুলনা হয় না।

সেদিন রাতে আমাকে এখানে একা ফেলে যাওয়ার পর একবারের জন্যও কোনো খোঁজ নেন নি আপনি। জানেন ? আপনার প্রতিটা কথা আমার ভেতরে তীরের মত করে গেঁথেছে। আমার শরীর অসাড় জড় পদার্থ হয়ে গিয়েছিল।  হাত-পা নাড়বার মত কোনো শক্তি আমার শরীরে অবশিষ্ট ছিল। আমার আর্তনাদ , যন্ত্রণার  সাক্ষী এই আকাশ বাতাস। সারারাত এখানে পড়েছিলাম। কীভাবে কতক্ষণ পড়েছিলাম তা আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। মানুষ তো এত নিষ্ঠুর হতে পারে না ! আরেহ্ একটা জন্তু জানোয়ার দুদিন পুষলেও তার খোঁজ মানুষ নেয়। আর আমাকে আপনি মানুষও মনে করেন না।

যখনই একটু স্বাভাবিক হতে চাই তখনই আপনি  আবার আঘাত করলেন।

প্রফেসর : আসলে...

ইরিন : আসলে এটাই মনে হয় নিয়তি। যারা সত্যিকার অর্থে মন থেকে ভালবাসা চায় তারা পায় না। এই যেমন আপনি যে মেয়েটা আপনার জীবন নিতে দ্বিধা বোধ করে না আপনি তাকেই চান ! কিন্তু যে আপনার জন্য জীবন দিতে চায় সে মরে গেলেও আপনার কিচ্ছু আসে যায় না। আসলে আপনার মত মানুষ হয় না ! আর আপনি ঠিক বলতেন , আমি স্টুপিড ! অনেক বড় স্টুপিড ! কারণ দুনিয়াতে এত কোটি কোটি  মানুষ ছেড়ে আমি আপনাকে ভালোবেসেছি।

ইরিন কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে যায়। প্রফেসর বসে থাকে। এমনিতেই ড্রিংক করার কারণে মাথা ঝিম ঝিম করছে , তার ওপর এতগুলো কথা। কানের কাছে কথাগুলো অনর্গল বেজে চলেছে। আজ মনে হচ্ছে প্রফেসরের শরীর অসাড় জড় পদার্থে পরিণত হয়েছে। শরীর নাড়ানোর এতটুকু শক্তি নেই। প্রথমে ওঠার চেষ্টা করলেও বালুর ওপর পড়ে যান।

ইরিনের সিক্রেট সোসাইটি Opowieści tętniące życiem. Odkryj je teraz