#১০

538 14 2
                                    

#আলোছায়া
#নাইমা_জাহান_রিতু
#পর্ব_১০

সন্ধ্যায় আকাশের রঙ বদলায় নানান ভঙ্গিমায়। কখনো কখনো সূর্য অস্ত হবার সাথেসাথে আকাশে ভেসে উঠে জ্বলজ্বল করা রশ্নিচিহ্ন আবার কখনোবা ঘন আঁধারে ছেয়ে যায় চারিদিক। মাগরিবের নামাজ শেষে মৈত্রীকে নিয়ে ছাদে উঠে মুন্নি সরকার সেই দৃশ্য প্রত্যহ অবলোকন করলেও হঠাৎ আসা ফোন কলে আজ সে কাজে ব্যাঘাত ঘটলো। জায়নামাজ ছেড়ে উঠে ফোন রিসিভ করে সে সালাম দিতেই ওপাশ থেকে ভেসে এল এক মেয়েলী কণ্ঠস্বর। 
"ভালো আছেন? শরীর ভালো তো আপনার?"
ভ্রু কোঁচকালেন মুন্নি সরকার।
"ঠিক আছি.. কে আপনি?"
"আপনি আমায় চিনবেন না। আমি পিংকি রহমান।"
"পিংকি? তো আপনি আমায় কীভাবে চিনলেন?"
"আপনার দুঃসম্পর্কের ভাগনী উল্লাসী আছে না? উল্লাসীর কাছ থেকেই।"
মুন্নি সরকার ভ্রুজোড়া আরও খানিকটা কোঁচকাতেই ওপাশ থেকে পিংকি রহমান বললেন,
"শুনলাম আপনি আপনার ছেলের জন্য পাত্রী দেখছেন?"
"আমার ছেলে?"
"হ্যাঁ.. আপনার ছেলে। উল্লাসী বললো.."
"কী বলেন এসব? উল্লাসী কেনো এই কথা বলবে! তাছাড়া আমার কণ্ঠ শুনে আপনার এতই বুড়ো মনে হয় যে ছেলের বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজবো? বা উল্লাসী আমার ভাগনী?"
মুন্নি সরকারের ঝাঁজালো স্বরে দিশেহারা হয়ে পড়লেন পিংকি রহমান। উল্লাসী তাকে রাত আটটার পর কল দিতে বলেছিল। তবে অতি উৎসাহের বসে সময় পেরুবার আগেই কল দিয়ে বসেছে সে! এনিয়েই কি নারাজ হয়েছেন মহিলাটি? নাকি তার মনমেজাজ ভালো নেই? তবে কি ভুল করে ফেললেন তিনি? ঢোক গিললেন পিংকি রহমান। গলার স্বরে কোমলতার আভাস ফুটিয়ে বললো,
"আপনার কি মনমেজাজ ভালো নেই? খালু কি আশেপাশে কোথাও নেই? থাকলে দিন.. তার সাথেই কথা বলি।"
"মানে? কার খালু? কোন খালু?"
"ইয়ে মানে আপনার স্বামী.."
বিস্ময়ের শিখরে পৌঁছে গেলেন মুন্নি সরকার। কিছুক্ষণ নীরব থেকে সে তীক্ষ্ণ সুরে বললেন,
"ইয়ার্কি করেন আমার সাথে? বয়স কত আপনার? আপনি আমারে খালা বানান? বয়স কতো আপনার?"
"জ্বি? আমি তো থার্টি এইটে পা দিলাম।"
"ওরে আমার ভ্যাবাকান্দী! আটত্রিশ বছরের বুড়ি হয়ে তুমি আমায় খালা ডাকো? বাঁদরামির জায়গা পাওনা? একবার এসো আমার কাছে। পিটিয়ে তোমার পাছা লাল না করে দিলে আমার নাম মুন্নি সরকার নয়!"
রাগে গজগজ করতে করতে ফোনের লাইন কেটে দিলেন মুন্নি সরকার। মহিলাটির সাহস দেখে রীতিমতো অবাক সে। তার বয়সই বা কত হলো? এর মাঝেই আটত্রিশ বছরের একজন মহিলা তাকে খালা বানিয়ে দিচ্ছে? আর হাসানকে খালু? অদ্ভুত! সোফা ছেড়ে উঠে পড়লেন মুন্নি সরকার। মৈত্রীকে খুঁজতে পাশের ঘরের দিকে এগুতেই আবারও বেজে উঠলো তার ফোনের রিংটোন।

আলোছায়া Donde viven las historias. Descúbrelo ahora