#আলোছায়া
#নাইমা_জাহান_রিতু
#পর্ব_১৫জ্যোৎস্নাভরা গভীর রাত। চাঁদটা ধীরেধীরে বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আকাশজুড়ে বইছে ঝিরিঝিরি মলিন বাতাস। মনের জানালায় হাজারো স্মৃতি দিচ্ছে উঁকি। যার ভারে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে বেশ। সিগারেটের আগুনের দিকে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে দক্ষিণের জানালা ধরে দাঁড়ালো মুবিন। বিস্তর এই আকাশপানে চাইলেই বুকের ভেতরটায় চাপা কষ্ট অনুভব হয় তার। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তবে সিগারেটের এই ক্ষুদ্র অগ্নিকণার দিকে চাইলে তা হয়না। বরং প্রাণটা তার ভরে যায়। বেশ শান্তি অনুভব হয়। কেনো হয় তার সাথে এমনটা? কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে কি?
মনে চলা প্রশ্নের জবাব না পেলেও সদর দরজায় কড়া নেড়ে উঠায় সেদিকে এগুলো মুবিন। দরজা খুলে তার বাল্যকালের বন্ধু আনিসকে দেখে বেশ অবাক হলেও খুশিতে প্রাণ জুড়িয়ে গেল তার। আনিসের কাঁধ থেকে তার ব্যাগ মেঝেতে নামিয়ে রেখে জড়িয়ে ধরলো তাকে।
"আরে ব্যাটা! কাঁদিয়ে দিবি নাকি? ছাড় এখন.. গোসলটা নিয়ে আসতে দে। তোর বাড়িতে ঢুকতে না ঢুকতেই সামনের ডাস্টবিনে পা পড়েছিল আমার।"
আনিসের কথায় তাকে ছেড়ে দিয়ে হেসে উঠলো মুবিন। হাতের পেশিতে বেশ জোরে একটা ঘুষি মেরে বললো,
"আগে বলবি না? দ্রুত গোসল নিয়ে আয়। ডানে গিয়ে সোজা গেলেই যে বাথরুম আছে ওটাতে যা।"
"তা যাচ্ছি.. সিগারেট হবে? একটা সিগারেট দে.. টানতে টানতে যাই।"
"তুই এখনো ভালো হলি না!"
মৃদু হেসে মুবিন সিগারেটের প্যাকেট বাড়িয়ে দিতেই তা হাতে নিল আনিস। মাথার কোঁকড়ানো চুলগুলো হালকা নেড়ে বললো,
"অনেক কথা আছে.. গ্রামে গিয়েছিলাম। এসে বলছি।"
"যা.."
আনিস গোসলের জন্য ছুটতেই দরজা বন্ধ করে তার ব্যাগপত্র ঘরে রেখে ফোন নিয়ে সোফায় এসে বসলো মুবিন। আনিস তার বাল্যকালের বন্ধু হলেও পরম কাছের ঘনিষ্ঠ একজন। যাকে নিঃসংকোচে বলা যায় মনের সকল কথা। তবে মাঝে দুবার ব্যবসায় লসের উপর লস খেয়ে সে পারি জমিয়েছিল সৌদিতে। তারপর থেকে যোগাযোগ একরকম বন্ধই হয়ে গিয়েছিল তাদের মাঝে। তবে এর ভেতরেই যে আনিস দেশে ফিরে গ্রামেও পারি জমিয়েছিল তা সম্পর্কে একদমই অবগত নয় সে।