টাইম ক্রাইম [পর্ব 11]

11 1 0
                                    

নেক দেরি হয়ে গেল তা এখন বেরোনো দরকার, ইনফরমার অপেক্ষা করবে, রাত্রি দুটো বেজে গেছে। তাড়াতাড়ি বেরোনো দরকার। এবার শুধু ঘুঘু ধরার পালা।

আলমারিটা খুলে স্যুটকেসটা নিয়ে নিলাম ও নীল কোর্ট পড়ে বেরিয়ে এলাম ফোনটা চার্জ থেকে খুলে। স্যুটকেসটা নিয়ে নিলাম এই জন্যেই যে, এই সব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চোখে চোখে রাখা ভালো। কখন কী বলতে কী ভ্যানিশ হয়ে যাবে।
বলা যায় না, এইসব কাজে বিশ্বাসী লোকেদেরও বিশ্বাস করতে সন্দেহ হয়। দরজায় চাবি দিয়ে দিলাম। যাহ্! আবার কারেন্টটা চলে গেল। ভাললাগে এরকম, গ্রাম্য এলাকায় একটু বেশিই কারেন্ট যায়, কী আর করা যাবে স্যুটকেস থেকে লাইটটা বার করলাম।

লাইট জ্বালিয়ে নিঃশব্দে সিঁড়ি দিয়ে নামতে থাকলাম। জুতোটা কিন্তু খাসা হয়েছে, চললে কোন আওয়াজই হয় না। শ্রুতির এইসব দিকে ভালোই আইডিয়া আছে মানতে হবে। খুঁজে খুঁজে ভালোই জুতোটা বার করেছে কিন্তু।
মেয়েটা কিন্তু বড্ড ভালোবাসে, ওর জন্য মন কেমন করে। যদি ওকে আর না দেখতে পাই, যদি চিরকালের মতন হারিয়ে যাই। কিন্তু মন , না মন থেকে তাকে কোনদিন হারাতে পারবোনা। সে আমার মনে হৃদয়ে বেঁচে থাকিবে আজীবন, যুগ যুগান্তর ধরে।

একি কিসের আর্তনাদ? কার গোঙানি? আমি হন্তদন্ত হয়ে এগিয়ে গেলাম আওয়াজ এর উৎস লক্ষ্য করে।

একি, কে ওটা? কারা ওখানে?

আমি এগিয়ে আসতেই কে যেন একজন ছুটে পালালো। হাতে তার ছুরি- রক্ত লেগে। ধপাস করে পড়ে গেল একজন সদর দরজা থেকে একটু দূরে, চেনা চেনা লাগলো। আমি দ্রুত এগিয়ে গেলাম ঘটনাস্থলের কাছে।
একি, এযে বাড়ি মালিক, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে মাটিতে। গরম রক্ত বেরোচ্ছ তার ক্ষতস্থান থেকে। কিন্তু সে জীবিত আছে। আমি দৌড় দিলাম খুনির দিক উদ্দেশ্য করে,সে গলির ভেতর প্রবেশ করল। কিসের যেন একটা আওয়াজ হল ঠং করে।
আমি তার পিছু অনুসরণ করে তাকে তাড়া করলাম। হ্যাঁ সে ছুটছে, সে আমার প্রায় হাতের নাগালে, আর একটু, আর একটু, আর একটু হলেই আমি তাকে পাকড়াও করে ফেলবো নাহ্ হলোনা, আর তাকে ধরা গেলনা। কোথায় কোন শালা বাঁশের টুকরো ফেলে রেখেছিল, তাতেই পা পিছলে একেবারে আলুর দম। তারপর সে উধাও। (চিস) একটুর জন্য ফসকে গেল। আরে, এতো বড্ডো ভূল করে ফেললাম। বাড়ি মালিকের কাছে আগে যাওয়া প্রয়োজন ছিল তারা এখন চিকিৎসার প্রয়োজন, শোচনীয় অবস্থা। ধাওয়া করার থেকে তার জীবন বাঁচানোটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ভুল করে ফেললাম। আর ধাওয়া করেই বা কি উদ্ধার করলাম, সেইতো পালিয়ে গেল। এর চেয়ে ওনার পাশে থাকলে ভাল হত। ওনাকে মৃত্যুর মুখে ফেলে কী বড়ই ভুল করলাম আমি। রাগ ধরছে নিজের প্রতি, এ আমি কেমন মানুষ রে বাবা। একজনকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে চলে গেলাম।

আমি তাড়াতাড়ি বহু কষ্টে পথ খুঁজে ফিরে এলাম। ওই তো দেখা যাচ্ছে হালকা হলুদাভ আলোয় বাড়ি মালিক কে, উনি এখনো জীবিত আছেন, ওইতো নড়ছেন, চোখের পাতাও পড়ছে। ওনাকে বাঁচাতেই হবে। কিন্তু হল আরেক দুর্ঘটনা। বাড়ি মালিকের কাছে যেইনা যাবো, দেখি কার যেন ছুটে আসছে এইদিকেই, আমার দিকে। সবই অচেনা মুখ, তা অচেনা তো হবেই। হাতে সব ধারালো অস্ত্র, ধীরে ধীরে মুখগুলো আরও স্পষ্ট হচ্ছে। একটা মুখ চেনা ঠেকলো। হ্যাঁ তাইতো, কে? কে? কে? আর ভাববার সময় নেই, এখনই পলায়ন করতে হবে। জানি বিপদ ঘনিয়ে এসেছে, পালানো ছাড়া উপায় নেই। আমি ছুট দিলাম স্যুটকেস হাতে, নীল কোর্টটার জন্য ঘামটা একটু বেশিই দিচ্ছে বৈকি। কী কাজের জন্য বেরিয়েছিলাম, কী সব ঘটে গেল। তা এইলাইনে এসব নতুন কি, এ তো হামেশাই ঘটে।
...

টাইম ক্রাইমDonde viven las historias. Descúbrelo ahora