শ্রীরামপুর মিশন(১৮০০-১৮৪৫) |
শ্রীরামপুর মিশন ভারতের প্রথম নিজস্ব প্রচারক সংঘ। ১৮০০ সালের ১০ জানুয়ারি উইলিয়াম কেরী ও তার ভ্রাতৃগণ এই মিশন স্থাপন করেম।মিশন হুগলি জেলার দুটি স্থান থেকে বাংলায় যীশুর বাণী প্রচার শুরু করে। এই জেলার ব্যান্ডেলে প্রথম ক্যাথলিক চার্চ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৫৯৯ সালে।এর দুইশো বছর পর (১৮০০) শ্রীরামপুর প্রোটেস্টেন্ট চার্চ গড়ে ওঠে। এই চার্চ ও মিশন প্রতিষ্ঠা করেন উইলিয়াম কেরী (১৭ অগাস্ট ১৭৬১)। তারই উদ্যোগে ১৭৯২ সালে ব্যাপটিস্ট মিশনারি সোসাইটি গঠিত হয়। কেরী ও টমাস ১৭৯৩ সালে এই সোসাইটির প্রতিনিধি হিসেবে বাংলায় খ্রিষ্টধর্ম প্রচার করতে আসেন। প্রথম কয়েকমাস কিছু সংকট মোকাবিলার পর কেরী উত্তরবঙ্গের মদনাবতীতে প্রতিষ্ঠিত হন এবং বাইবেল অনুবাদ, বিদ্যালয় স্থাপন, ধর্ম প্রচার এবং প্রভৃতির মাধ্যমে মিশনের কাজ শুরু করেন।এখানে প্রথম খ্রিস্ট মন্ডলী গঠিত হয়। আঠারো শতকের শেষের দিকে কেরীর সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য আরও কয়েকজন মিশনারিকে বাংলায় পাঠানো হয়। তাঁরা ইংরেজ সরকারের মিশনারি বিভাজন এড়াবার জনা ডেনিশদে শ্রীরামপুরে আশ্রয় নেন। এখানে কেরী অর্থ তহবিলের ভার নেন এবং বাইবেল অনুবাদের কাজ পরিচালনা করেন। মার্শম্যান বিদ্যালয় এবং ওয়ার্ড মুদ্রণ পরিচালনার দায়িত্ব নেন। ফাউন্টেনের ওপর ভার পড়ে গ্রন্থাগার গড়ার। ১৮০০ সালের ২৪ এপ্রিল শ্রীরামপুর মিশন চার্চের উদ্বোধন হয়। কেরী হন চার্চের পুরোহিত এবং মার্শম্যান ও ওয়ার্ড সহকারী পুরোহিতের ভার নেন। এই মিশন ছিল স্বনির্ভরশীল। মার্শম্যান বিদ্যালয়, ওয়ার্ড প্রেস এবং কেরী ফোর্ট উইলিয়ম কলেজে অধ্যাপনা করে নিজেদের ভরণপোষণ ও মিশানের কাজ চালাতেন।
শ্রীরামপুর মিশন প্রেস থেকে পরবর্তীকালে রামায়ণ, মহাভারত, পাঠ্যপুস্তক ইত্যাদি প্রকাশিত হয়েছিল। ১৮১৮ সালে এই মিশন থেকে দিগদর্শন সমাচার দর্শণ নামক পত্রিকা দুটি প্রকাশিত হয়।বাংলা গদ্যের সম্প্রসারণের জন্য সাময়িক পত্র বিরাট ভূমিকা পালন করে।