আজ অনেক বছর পর নিজের জন্মদিনেও মনটা হালকা লাগছে রোদেলার৷ অন্যান্য বছরগুলোতে এই দিনটায় নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে চুপ করে বসে থাকে রোদেলা৷ তবে আজকে কেনো যেনো সেটা করতে মন চাইছে না রোদেলার।
অলিকে কোলে তুলে নিয়ে অসংখ্য চুমু খেতে শুরু করলো রোদেলা। চুমু খাওয়া শেষে প্রাণ ভরে অলিকে দেখতে লাগলো৷ ভেবেছিল ওর এই জামাগুলো বোধয় কোনোদিন আর কারো গায়ে উঠবে না। কিন্তু আজ উঠবে। আজ রোদেলা তার ছোট্ট পরীকে ফিরে পেয়েছে। মন ভরে পরীটাকে সাজাবে রোদেলা।
নায়লা রোদেলার ঘরে ঢুকে দেখলেন রোদেলা অলিকে সেই যত্ন করে রেখে দেওয়া জামা পড়াচ্ছে। মেয়ের হাসোজ্জল মুখ দেখে মায়ের মনে যেনো শান্তির বাতাস বইতে শুরু করলো। রোদেলা মন ভরে অলিকে সাজালো। সাজানো শেষে আলমারি থেকে একটা লাল শাড়ি বের করলো। নায়লা বললেন,
"আজকে লাল শাড়ি পড়তে ইচ্ছা করলো বুঝি?"
"হ্যা আজকে আমরা মা মেয়ে লাল টুকটুকে হয়ে যাবো!" কথাটা বলেই থমকে গেলো রোদেলা। মেয়ে? অলি তো ওর মেয়ে না? তাহলে কেনো অলির মধ্যে নিজের ছোট্ট পরীটাকে খুঁজে পায় রোদেলা?
নায়লা দেখলেন অলিকেও লাল জামা পড়িয়েছে রোদেলা। অলিকে নিজের মেয়ে বলে সম্বোধন করলো। কিছুক্ষণের জন্য থমকে গেলেও পরক্ষণেই আবার হাসিতে রোদেলার মুখ ভরে উঠলো। রোদেলা বলল,
"মা তুমি একটু অলিকে দেখো। আমি গোসল করে এসে শাড়িটা পড়বো।"
রোদেলা বাথরুমে যাওয়ার পর আসমান ঘরে ঢুকলো। দরজায় দাঁড়িয়ে সবই শুনেছে আসমান। নায়লা মনে মনে বলল, "ছেলেটা কি রোদেলার কথা শুনেছে? কিনা কি মনে করেছে? কিছু কি বলবো? না থাক, আমিই আবার অস্বস্তিতে পড়ে যাবো।"
আসমান নায়লাকে বলল, "আন্টি আমি অলিকে নিয়ে আমার ঘরে যাচ্ছি। মিস রোদেলা বের হলে উনাকে বলবেন আমার ঘরে আসতে। আসি।"
আসমান ঘরের দরজার সামনে গিয়ে বলল, "আন্টি আজকে রাতে কিন্তু আমরা এখানে খাবো। জমিয়ে রান্না করবেন কিন্তু। আর সন্ধ্যায় আমি কেক আনবো।"
আসমানের কথা শুনে নায়লা হতবাক। কি বলছে ও! এসব করতে গেলে রোদেলা আবার রেগে যাবে! ও তো কিছুই জানে না। কালকে তো দেখলো রোদেলার অবস্থা! আচ্ছা..আজকে তো সকালবেলা অনেকক্ষণ ছিল ও রোদেলার সাথে। রোদেলা কি কিছু বলেছে ওকে? নাহ্ মেয়েটা খুব সেনসিটিভ। আসমান ওর এতোটাও কাছের না যে ওকে জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর অধ্যায়টা নিজের মুখে বলবে। নায়লা বসে রইলেন বিছানার উপর। রোদেলা বাথরুম থেকে বেড়িয়ে আসতেই দেখে অলি ঘরে নেই। নায়লাকে জিজ্ঞেস করলো রোদেলা,
YOU ARE READING
রোদেলার মেঘলা জীবন(সম্পুর্ণ)
Romanceকিছু কিছু মানুষের জীবন তো পরিপুর্ণতায় ভরপুর থাকে। কিন্তু সব পুর্ণতার মাঝেও যেন এক অপূর্ণতা এসে গ্রাস করে। মানুষের জীবনে কখন কি আসে তা কেউ বলতে পারে না। তাই সবসময়ই প্রস্তুত থাকতে হয় যেকোনো ধাক্কাকে সামলানোর। কিন্তু ধাক্কা আসবে কোন দিক থেকে?