২৫তম পর্ব: ৫ বছর আগে (৪র্থ অংশ)

88 7 3
                                    

আইসিউ থেকে বের হওয়ার এক সপ্তাহ পর বাড়ি ফিরলো রোদেলা। নায়লা ওকে ওকে ধরে ধরে আস্তে আস্তে ওর ঘরে নিয়ে আসলেন। ডান পায়ের গোড়ালিতে ভীষণ ব্যথা। নায়লা রোদেলাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বললেন,

"কিছুক্ষণ রেস্ট নে, একটু পর এসে গোসল করিয়ে দিব আমি। কতদিন চুলে শ্যাম্পু করা হয় না বল তো। আজ শ্যাম্পু করিয়ে বিকালে চুলে তেল দিয়ে দিব।"

রোদেলা মায়ের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়লো শুধু। নায়লা ঘর থেকে বেরিয়ে রায়হানের কাছে গেলেন। একেবারে ভেঙে পড়েছেন উনি। স্ত্রীর মুখে মেয়ের ধর্ষণের কথা শোনার পর থেকেই কেমন যেনো মুষড়ে পড়েছিলেন। থানায় গিয়েছিলেন বাস কোম্পানি আর নাম্বার অনুসারে মামলা করার জন্য। কিন্তু কোনো লাভ হয় নি। তার মেয়ের এতো বড় সর্বনাশ করলো, জানোয়ারগুলোর কি বিচার হবে না? খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন বাস কোম্পানির মালিক আসাদুজ্জামান খানের বড় ছেলে সেদিন ঐ বাসে উপস্থিত ছিল। সেদিনের ঘটনা মনে করে দেখেন শেষে খালি বাসে বাসের তিনজন ছাড়াও একটা ২৭-২৮ বছর বয়সের ছেলেও ছিল। সব কিছু জানার পরেও কিচ্ছু করতে পারেন নি তিনি। টাকা খাইয়ে পুলিশদের হাতে রেখেছে। বাবা হিসেবে নিজের উপর করুণা হচ্ছে তার।

নায়লা রোদেলাকে সুন্দরভাবে গোসল করিয়ে দিল। চুলে শ্যাম্পুও করালো। এরপর বারান্দায় বসে।রোদে চুল শুকিয়ে নিল। দুপুরে।খাওয়ানোর পরে নায়লা এসে চুলে তেল লাগাতে গেলে রোদেলা বলল,
"মা রাতে দিও তেলটা। বিকালে দীপ্র আসবে দেখা করতে।"

রোদেলার কথা শুনে নায়লা চুলে তেল লাগালেন না। দীপ্রর কথা মা বাবা না জানলেও রোদেলার এক্সিডেন্টের পর এখন সবাই জানে। রোদেলা শান্তির একটা নিঃশ্বাস ফেলল। বুক থেকে যেনো ভারী একটা পাথর নেমে গেছে। দীপ্র আর ওর পরিবার সবাই এখন রোদেলার কথা জানে। ধর্ষণের কথাটা রোদেলা প্রথম দীপ্রকেই বলে। এরপর রোদেলার বাবা আর দীপ্রই যায় থানায়। রোদেলা মনে মনে ভাবলো ঠিক মানুষকেই ভালোবেসেছে রোদেলা যে কিনা প্রেমিকা সতিত্ব হারানোর পরেও ছেড়ে চলে যায় নি। যত ঝড় ঝাপটাই আসুক না কেনো দীপ্র কখনোই ছেড়ে যাবে না।

রোদেলার মেঘলা জীবন(সম্পুর্ণ)Opowieści tętniące życiem. Odkryj je teraz