ভোর ৪টা ৫ মিনিট।
রোদেলা শুয়ে আছে তার চিরচেনা নীলচে রঙা ঘরে। একটা স্বপ্ন দেখে তার ঘুম ভেঙে গিয়েছে। তবে সেটা সুস্বপ্ন না দুঃস্বপ্ন তা মনে করতে পারছে না। শুয়ে শুয়ে রোদেলা সেই চেষ্টাতেই আছে। ভাবতে ভাবতে যখন সে দেখল স্বপ্নটা কি সেটা মনেই করতে পারছে না তখন সেই চেষ্টা ছেড়েই দিল। ঘড়িতে ৪ টা বেজে ৩০ মিনিট। আশেপাশের মসজিদ গুলো থেকে ফজরের আযান শোনা যাচ্ছে। ফজরের নামাজ বিছানা ছেরে উঠল রোদেলা। হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে ওযু করে নিল। নামাজ শেষ হওয়ার পড়েও জায়নামাজ ছেড়ে উঠেনি সে। একদিন না একদিন তো সবাইকেই এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হবে। রোদেলাকেও নিতে হবে, রোদেলার বাবা মাকেও নিতে হবে। তাই সবসময় তার আল্লাহ্র কাছে একটাই চাওয়া যে তিনি যেন তাদের তিনজনকে একসাথে তার কাছে ডাকেন।
ভোর হয়ে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে জায়নামাজ ছেড়ে উঠল রোদেলা। মায়ের শরীরটা একটু খারাপ তাই আজ সে ঘুমাচ্ছে।
বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো রোদেলা। শীতল বাতাস বইছে। কেন যেন মনের কোণে এক অস্থিরতা টের পাচ্ছে সে। কিন্তু কিসের এই অস্থিরতা সে বুঝতে পারছে না। মায়ের শরীর ভালো না। তাই হয়তো মনটা এতো ছটফটে হয়ে আছে। সুর্যরাজ মশাই উদয় হচ্ছেন ধীরে ধীরে। এক সোনালী আভায় চারিদিক ছেয়ে গেছে। ভোরের এই সোনালী আভায় তার মায়াবী মুখটা যেন আরও বেশি মায়াবী দেখাচ্ছে।
বারান্দায় রাখা দোলনাতে বসে পড়ল রোদেলা। এই দোলনাটা রোদেলার ভীষণ প্রিয়। ক্লাস ফাইভের বোর্ড পরীক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার পর বাবা খুশি হয়ে দোলনাটা উপহার দিয়েছিলেন। তবে দোলনাটা আর পাঁচটা দোলনার থেকে অদ্ভুত। অদ্ভুতের জায়গাটা দোলনার রঙে। রংধনু রঙা দোলানার দিকে অনেকেই অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে। আধ শোয়া অবস্থায় দোলনায় বসে রইল রোদেলা। ধীর গতিতে দোলনা দুলছে। সেই সাথে মৃদু শীতল বাতাস। বারান্দার কোণঘেঁষা দুটো বেলী ফুল গাছে ১৭টি বেলী ফুল ফুটেছে। সেই ফুলের মায়াকারা ঘ্রাণে ভোরে গেছে বারান্দা। এই বেলীর ঘ্রাণটাই যেন রোদেলাকে ঘোরের মধ্যে নিয়ে যাচ্ছে। দুলতে দুলতে কখন যে ঘুমের দেশে চলে গেছে বুঝতেই পারে নি রোদেলা।
ESTÁS LEYENDO
রোদেলার মেঘলা জীবন(সম্পুর্ণ)
Romanceকিছু কিছু মানুষের জীবন তো পরিপুর্ণতায় ভরপুর থাকে। কিন্তু সব পুর্ণতার মাঝেও যেন এক অপূর্ণতা এসে গ্রাস করে। মানুষের জীবনে কখন কি আসে তা কেউ বলতে পারে না। তাই সবসময়ই প্রস্তুত থাকতে হয় যেকোনো ধাক্কাকে সামলানোর। কিন্তু ধাক্কা আসবে কোন দিক থেকে?