১৩তম পর্ব: বৃষ্টিতে বিষাদ

82 10 2
                                    

"জানো ভাইয়া রোদেলা আপু বৃষ্টি একদম পছন্দ করে না।"

আসমান ল্যাপটপে কাজ করছিল। আলিয়ার কথা শুনে চট করে মুখ তুলে বলল, "বলিস কি! বৃষ্টি ভালোবাসে না?"

"ভালোবাসা তো দূরে থাক একদম সহ্যই করতে পারে না। বৃষ্টি গায়ে লাগলেই কেমন যেনো করে ওঠে। মনে হয় এসিড লেগেছে আর ঐ জায়গায় জ্বালা করায় এমন রিয়্যাকশন।"

আসমান হাসতে হাসতে বলল,
"এসিডই তো, বৃষ্টির পানিতে তো এসিডিক। হয়তো এই এসিডের ভয়েই মিস রোদেলা বৃষ্টি থেকে দূরে থাকে।"

"ভাইয়া মজা করছি না আমি।"

"হুম...ব্যপারটা খুব সিরিয়াস মনে হচ্ছে!"

আসমানের চোখে মুখে চিন্তার ছাপ দেখা যাচ্ছে। আলিয়া আবার বলতে শুরু করলো,
"অন্য কেউ হলে এতো মাথা ঘামাতাম না কিন্তু রোদেলা আপুর ব্যপারটাই আমাকে ভাবাচ্ছে।"

আসমান চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল, "হুমমম....  ঠিক বলেছিস।"

"মানে তুমি একবার ভাবো যে মানুষটার কাছে এই পৃথিবীর বিলাসিতা অর্থহীন, যে প্রকৃতিকে অসম্ভব রকমের ভালোবাসে তার বৃষ্টিতে এমন এলার্জি?"

"এলার্জি? মিস রোদেলা কি তোকে বলেছে যে উনার বৃষ্টিতে এলার্জি আছে?"

"আরে নাহ্, আমি তো জাস্ট কথার কথা বললাম।"

"ওহ্। বাট মানুষের বৃষ্টিতে এলার্জি থাকাটাও অস্বাভাবিক কিছু না।"

"যদি এলার্জি থাকতো তাহলে তো আমাকে সেদিনই বলতো যে আমার এলার্জি আছে তাই আমি ভিজবো না।"

আসমান চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল, "আমার কি মনে হয় জানিস, মিস রোদেলার বৃষ্টি রিলেটেড কোনো ডার্ক ম্যাটার আছে।"

"আমারও সেটাই মনে হচ্ছে ভাইয়া।"

"তুই চিন্তা করিস না এতো। সময় হলে আমি উনার এই বৃষ্টি ভীতি দূর করে দিবো।"

আলিয়া অবাক হয়ে বলল, "তুমি দূর করবে?"

আসমান তখনও ল্যাপটপে মুখ গুঁজে কাজ করে যাচ্ছিল। আলিয়ার প্রশ্ন শুনে কাজ করতে করতেই মুচকি হাসি দিল। আলিয়া তার ভাইয়ের এই মুচকি হাসির অর্থ বুঝলো না। কিন্তু কি একটা কথা ভেবে তার মনটা অসম্ভব খুশিতে ভরে উঠলো। সে যা ভাবছে সেটা হলে মন্দ হবে না। বরং যা হবে তা হবে সবচেয়ে সুখকর। একেবারে আলিয়ার মনের মতো যা সে এতোদিন ধরে স্বপ্ন দেখে এসেছিল। ইতোমধ্যে আলিয়া অলির পাশে বসে বসে অনেক কিছুই ভেবে ফেলেছে। সুন্দরের রাজ্যে সে হারিয়েও গেছে। আলিয়ার মনে হলো এক্ষুণি মায়ের কাছে যাওয়া দরকার। তার ভাবনার সঞ্চার মায়ের মধ্যেও ঘটাতে হবে।

রোদেলার মেঘলা জীবন(সম্পুর্ণ)Where stories live. Discover now