এক মুঠো গোলাপ ১৯

10 1 0
                                    

এক মুঠো গোলাপ
১৯
_____
(দু’মাস পর)

বোর্ড এক্সাম শেষ হয়েছে তিনদিন আগে।  দেখতে দেখতে এইচএসসিও কমপ্লিট হলো আমার।
শুনলাম এর মাঝে নিদ্র রংপুরে আসবে। অফিশিয়াল  কাজে ইন্ডিয়া গিয়েছিলো গত সপ্তাহে। বিরাট বড় প্রজেক্ট ছিলো।  সাকসেসফুল হওয়ায় একটা লং টাইম ছুটি পেয়েছে। 
আমাদের দেখা নেই অনেকদিন ।  জিদ করলাম এবার আমাকে টাইম দিতেই হবে ।  জীবনে প্রথমবার সে আমার কথা শুনছে মনে হয়।  সবসময় তো হুকুমজারি করতেই পছন্দ করে। 
এমনিতেও আমি ওর ওপরে রেগে আছি।  উমম রাগ নয় এটাকে অনুরাগ বলা যায়।
নিদ্র আর অর্পিতা আপুর সম্পর্কটা বেশ গভীর ছিলো। তাদের কতশত স্মৃতি,  কাছে আসার গল্প ডায়েরিবন্দী করা আছে। 
পড়তে পড়তেই জেলাস ফীল করেছি আমি।  নিদ্র আমাকে কখনো কাছে টানে নি।  না নিজে থেকে হাগ করেছে, আর না কিস।
আমিই সবসময় ওকে জড়িয়ে ধরতাম তাও আবার জোর করে। 
আগের গার্লফ্রেন্ড এর সাথে কত কত স্মৃতি জমিয়েছে আর আমাকে ধমকের ওপরেই রাখে। 
.....
-- সুপ্ত কি করছিস?
চুলে টাওয়াল পেঁচাতে পেঁচাতে সুপ্তর ঘরের দিকে আসছে রাফনিদ।  বড় আপুর কণ্ঠ শুনে শোয়া থেকে উঠে বসলো সুপ্ত।
-- কিছু করিনা।
-- শোন তোর ভাইয়া আসছে আজ।  ওকে একটু কল কর তো। 
-- আমি কেন কল করবো।  তোমার বর তুমি কল করবা। 
-- আমার ওর সাথে ঝগড়া চলছে।  আমি কল করতে পারবো না।  তুই কর। 
-- আবার ঝগড়া! তুমি এত ঝগড়ুটে কেন আপু? সাধাসিধা ভাইয়া টাকে  সবসময় বকাঝকা করো। 
-- এ্যাই চোপ।  এসেছে ভাইয়ার চামচা।  সে অপরাধ  করে এজন্য বকা খায়।
-- ভাইয়া আর অপরাধ! আমি বিশ্বাসই করিনা। 
-- উমমহ্। বিশ্বাস করে না।  উনি মনে হয় দুধে ধোয়া তুলসীপাতা! বেশি তর্ক না করে যেটা করতে বলেছি করো। 
-- নাও আমার ফোনটা,  তুমি ফোন করো। 
-- আমি বলেছি না তোকে করতে?
চোখ পাকিয়ে ধমক দিলো আপু।  আমি মুখ ফুলিয়ে ভাইয়াকে কল করলাম।  প্রথমবার রিসিভ হলো না। 
আপুকে বললাম_
-- ভাইয়া কল রিসিভ করে না।  ব্যস্ত মনে হয়। 
-- এত কিসের ব্যস্ততা তার? আবার কল দে।  বারবার দিবি,  দেখি কতক্ষণ না রিসিভ করে থাকতে পারে। 
বোনের হুকুম,  না মেনে যাই কোথায়। 
আপুকে পাশে বসিয়ে অনবরত কল করতে থাকলাম ভাইয়াকে। 
আরো পাঁচ সাতবার কল দেবার পর একবার রিসিভ হলো।  ওপাশ থেকে ভাইয়ার ঘুম জড়ানো কণ্ঠস্বর ভেসে আসলো_
-- কি ব্যাপার শালিকা এতবার কল?
আমি কি বলবো খুঁজে পেলাম না।  কিছু না ভেবেই বললাম_
-- ভাইয়া,  আপু আপনার সাথে কথা বলতে চায়। 
আমার কথা শুনে আপুর চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।  ভাইয়াও ফোনের ওপাশ থেকে বিস্ময়ে মৃদু চিৎকার দিলেন_
-- আ্যাঁহ?
আমি আপুর দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করে বললাম_
-- হ্যাঁ।  দাঁড়ান দিচ্ছি। 
আপুর দিকে ফোন বাড়িয়ে দিতেই সে সটান দাঁড়িয়ে গেলো।  আমার হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে কল ডিসকানেক্ট করে দিলো, এরপর বাহুতে দুম করে একটা কিল বসিয়ে বললো_
-- একটা কাজও ঠিকঠাক পারেনা।  তোর কাছে আসাই আমার ঘাট হয়েছে। 
ফোন ফেরত দিয়ে ধপ ধপ পা ফেলে চলে গেলো সে।  আমি বোকার মত বসে রইলাম।  আপুর এত রাগ কেন?
আর ভাইয়ার সাথে কি এমন হয়েছে যে কথা বলাই বন্ধ । 
অদ্ভুত!
_____
সন্ধ্যের একটু পর নিদ্র রংপুরে নামলো।  এবার অফিসের গাড়ি করেই সে এসেছে ।  সুপ্তকে অবশ্য বলেনি আজই রংপুরে নামবে,  জাস্ট বলেছে এর মাঝে একদিন আসবে ।  এখন তো এসেই পড়েছে।  দারুণ সারপ্রাইজ দেয়া যাবে মেয়েটাকে।
নিদ্রর গাড়িটা যখন বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছে তখন বারান্দায় বসে ছিলেন নুহাশ। 
গাড়িটা যে তার একমাত্র ছেলে নিদ্রর, তা চিনতে সমস্যা হলো না নুহাশের। 
অজান্তেই ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠলো তার।  তড়িঘড়ি করে ভেতরে গিয়ে কাজের ছেলে আবদুল কে আদেশ করলো নিচে গিয়ে নিদ্রের লাগেজ গুলো নিয়ে আসতে। 
মিসেস নুহাশ তখন রান্নাঘরে পাকোড়া ভাজছিলেন।  উনি কেবল গলা বাড়িয়ে প্রশ্ন করলেন_
-- এত উত্তেজনা কিসের?
-- আরে আমার ছেলে এসেছে।  এতদিন বাদে ছেলেটাকে দেখবো ।  কি আনন্দ । 
এক্সাইটমেন্ট চেপেই রাখতে পারছেন না যেন নুহাশ সাহেব। 
মিসেস নুহাশ স্বামীর কথায় মৃদু হেসে নিজের কাজে মনোযোগ দিলো। 
অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তার সাহেবের এই হাসি হাসি মুখটায় বিষাদের ছায়া নামবে। বহু কষ্টে কান্না চেপে ঘরের কোণে বসে রইবেন তিনি। 
প্রতিবারই এমন হয়। 
মাঝেমধ্যে  মনে হয় বাবা ছেলের মধ্যে বিরাট দেয়ালটা তৈরি হয়েছে তারই কারণে। 
নুহাশ সাহেব তাকে বিয়ে না করলে হয়তোবা সব স্বাভাবিক থাকতো। 
কিন্তু ঐ সময়টাতে যে একটা সাপোর্টের খুব প্রয়োজন ছিলো মানুষটার।  ভালোবাসার খাতিরেই তো তাকে একা ছাড়তে পারেনি। 
একটা দীর্ঘশ্বাস গোপন করে চোখের কোলে আসা জলটুকু মুছে নিলেন মিসেস নুহাশ। 
,
প্রফুল্লচিত্তে নিদ্রর  লাগেজগুলো টেনে নিয়ে আসছে আবদুল। এত করে বলার পরেও সে নিদ্রকে একটা লাগেজও ধরতে দিলো না। 
আবদুলের পেছন পেছন ফোন চাপতে চাপতে দোতলায় উঠে এলো নিদ্র। 
চৌকাঠেই নুহাশ হাসিমুখে দাঁড়িয়ে ।  বাবা-র দিকে এক পলক তাকিয়ে আবদুল কে ডাকলো নিদ্র_
-- আবদুল ভাই , বড় চাচাদের ফ্ল্যাটে লাগেজ গুলো নিয়ে যান। 
নিদ্রর কথা শুনে থেমে গেলো আবদুল ।  নুহাশ সাহেবের দিকে তাকালে দেখতে পেলো,  বেচারার চেহারার হাসিখুশি ভাবটা উঠে গিয়ে মেঘাচ্ছন্ন আকাশের ন্যায় একরাশ অন্ধকার জায়গা করে নিয়েছে । 
খুব খারাপ লাগলো আবদুলের।  একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সে লাগেজ নিয়ে ওপরের সিঁড়িতে পা রাখলো। 
নুহাশ সাহেবও মাথা নিচু করে চোখের পানি আড়াল করে ফেললেন। 
নিদ্র আর ওপরে না গিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লো,  একটু শান্তি দরকার তার। 
______
ব্যালকনিতে বসে গভীর মনযোগে ফেইসবুকিং করছিলাম এমন সময় নিদ্রর নম্বর থেকে কল ।  সাধারণত এরকম টাইমে ও কল করে না, খানিক অবাকই লাগলো। 
ব্যালকনির থাইটা টেনে দিয়ে কল রিসিভ করলাম। 
-- তুমি এই অসময়ে?
-- নিচে আসো,  আমি তোমার বাসার সামনে। 
-- হোয়াট? আর ইউ জোকিং!
-- নো ,  আ'ম নট।  ব্যালকনিতে আছো না? মাথা বাড়িয়ে দেখো,  আমি গলির মোড়ের চায়ের দোকানটার সামনে। 
আমি  মাথা বাড়িয়ে দেখলাম ও সত্যি সত্যি চায়ের দোকানের বেঞ্চটার ওপরে বসে।
চোখ বড় বড় করে মৃদু একটা চিৎকার দিলাম,
-- আই কান্ট বিলিভ। 
-- বিলিভ হবে,  নিচে নেমে আসো। 
-- এক্ষুনি আসছি,  এক মিনিট দাঁড়াও। 
ওকে আর কিছু বলতে না দিয়ে দৌড়ে নিচে নেমে আসলাম।
ভাগ্যিস বাসায় বাপি ছাড়া আর কেউ নেই।  মা-আপু দু'জনেই শপিংয়ে গিয়েছে।  বাপিও নিজের রুমে ঘুম। 
এই সুযোগ টাই কাজে লাগালাম। 
,
রাস্তায় বেশ গাড়িঘোড়া চলছে।  এমতাবস্থায় তো ওকে জড়িয়ে ধরা সম্ভব নয়, কিন্তু আমার মনও মানছে না। 
বাসার গলিতে দাঁড়িয়ে ওকে হাতের ইশারায় এদিকটায় আসতে বললাম।
ও মৃদু হেসে এপারে আসতেই, ওর হাত টেনে আড়ালে নিয়ে এসে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। 
ও দু হাতে আমার কোমর জড়িয়ে হাসতে হাসতে শুধালো_
-- আমার শুভ্র গোলাপটা কেমন আছে?
-- এতদিন মুষড়ে পড়েছিলো।  আজ তোমার ছোঁয়ায় প্রাণ ফিরে পেলো যেন। 
ওর গলায় মুখ গুঁজে  উত্তর দিলাম। 
ও আমার গালে একটা চুমু খেয়ে বললো_
-- আমাকে বাসায় নিয়ে যাবে না?
-- হুমমহ??
আমি চকিতে তাকালাম ওর দিকে। 
ও ভ্রু নাচিয়ে প্রশ্ন করলো_
-- কি?
-- তুমি আমার বাসায় যাবা?
-- হ্যাঁ যাবো ।  চলো। 
কোমরে হাত রেখে স্বাভাবিক ভাবেই উত্তর দিলো ও।  আমি যেন আজ ঝটকার ওপর ঝটকা খাচ্ছি । 
-- নিদ্র বাসায় বাপি আছে। 
-- আরো ভালো, শ্বশুর মশাই কে সালাম দিয়ে আসবো।
ওর মুখভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে না মজা করছে।  আমি এবার একটু ভয় পেয়ে গেলাম।  বাপি জানলে জুতোপেটা করে বাড়ি ছাড়া করবেন আমাকে। 
-- কি হলো? আমার ডেয়ারিংবাজ বউটা ভয় পেয়ে গেলো বুঝি!
-- আমি বিলিভই করতে পারছি না তুমি আমার বাসায় যেতে চাইছো। 
-- চলো বিলিভ করাই। 
ও আমার কোমর ছেড়ে দিয়ে হাত চেপে ধরলো।  তারপর আমার বাসার দিকে পা বাড়ালো।  ওর এমন অদ্ভুত আচরণ দেখে আমি বিস্ময়ে হতবাক। 
আমার বিস্ময় ভাব কাটলো যখন গেইটের সামনে উপস্থিত হলাম। 
ত্রস্তে হাত ছাড়িয়ে চোখ বড় বড় করে চারিদিক পর্যবেক্ষণ করে নিলাম, কেউ দেখছে কি না!
ভাগ্যিস অন্যান্য বাসার মানুষজন কেউ ব্যালকনিতে নেই।  গলাটা যথাসম্ভব খাদে নামিয়ে নিদ্রকে ধমক দিলাম_
-- এভাবে টেনে নিয়ে আসে? পাছে কেউ দেখে নিলে!
-- তখন তো আরো ভালো। প্রেমে বদনাম হয়ে বিয়ে করে ফেলবো একদম। 
-- তুমি পাগল হয়ে গিয়েছো আজ। 
-- ঠিক কথা।  এখন গেইট খোলো,  আমি খুলতে গেলে শব্দ করবো কিন্তু। 
-- নিদ্র তুমি সত্যিই আমার বাসায় যাবা?
-- অফকোর্স।  কতখানি জার্নি করে এসেছি জানো? এক মুহুর্ত বিছানায় গা দিতে পারিনি,ছুটে এসেছি তোমার সাথে দেখা করবো বলে। 
এ কথা শুনে আমি সরু চোখে ওর পানে  তাকালাম। 
আবছা আলো-অন্ধকারেই মনে হলো, নিদ্রর চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ। 
মনটা গলে গেলো।  সব চিন্তা বাদ দিয়ে গেইট খুলে ওকে নিয়ে বাসায় প্রবেশ করলাম । 
খুব লুকিয়ে চুরিয়ে দোতলা অবধি নিয়ে আসার পর চিন্তায় পড়ে গেলাম ভেতরে কীভাবে ঢুকবো?
বাপি যদি জেগে থাকেন!
ওকে ফিসফিসিয়ে বললাম_
-- তুমি এখানেই দাঁড়াও আমি ভেতরে গিয়ে দেখি বাপি উঠলো কি না!
ও মাথা নেড়ে সায় দিলো। 
ওকে দরজার আড়ালে রেখে পা টিপে টিপে ভেতরে চলে গেলাম। 
বাপির রুমের সামনে এসে উঁকি দিতেই দেখি বিছানায় কাত হয়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন বাপি। 
যাক ভাগ্য সহায় আছে। 
এক মুহুর্ত দেরি না করে নিদ্রকে ইশারা করলাম ভেতরে আসতে। 
ও বিশ্ব জয়ের হাসি দিয়ে আয়েশ করে ঢুকলো। 
অমন রাজার চাল দেখে সুপ্ত মনে মনে টিপ্পনী কাটলো, "উমহ্ হাঁটার সিস্টেম দেখো।  ধরা খেলে ঝাঁটার বাড়ি খেতে হবে সেই খেয়াল জনাবের নেই"
ও আগেও আমায় পড়াতে এসেছে বাসায় তাই আমাকে আর নতুন করে রুম চেনাতে হলো না।  একা একাই আমার রুমে চলে গেলো। 
আমি দরজা ভালোমতো আটকে নিজের রুমে গিয়ে দেখি বিছানায় লম্বা করে শুয়ে পড়েছে সাহেব। 
আমাকে দেখতেই আহ্লাদী স্বরে বললো_
-- সুপ্ত শিয়রে বসে আমার মাথাটা টিপে দাও তো। 
-- আমি?
-- অফকোর্স তুমি।   তোমার নামই তো সুপ্ত।
-- উমমহ আমি তোমার মাথা টিপে দিতে পারবো না,  তুমি ফ্রেশ হয়ে শোও। 
-- উহুম।  আমি ফ্রেশ ট্রেশ হতে পারবো না, আমার পা চলছে না।  ঘুম পাচ্ছে।  আসো তো।
-- পারবো না আমি। 
-- সুপ্ত।  তুমি না আসলে কিন্তু আমি তোমায় ধমক দিবো।  ধমকে তোমার বাপি জেগে যাবে। 
তখন কিন্তু আমাকে দোষারোপ করতে পারবা না।
-- তুমি কি আমায় ভয় দেখাচ্ছো?
-- তোমার যদি তা-ই মনে হয় তাহলে তা-ইইই। 
ভাবলেশহীন ভাবে উত্তর করলো ও। 
এই ছেলের আচরণে যা পরিবর্তন    এসেছে,  বলা যায় না কি থেকে কি করে ফেলে।  না পেরে আমি দরজা লক করে ওর শিয়রে গিয়ে বসলাম। 
বসামাত্র সাহেব উপুড় হয়ে আমার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়লো আর দু হাতে কোমর জড়িয়ে নিলো। 
ওর তপ্ত নিঃশ্বাস আমার জামা ভেদ করে পেটে আছড়ে পড়ছিল ।  অজানা শিহরণে আমার শরীর থরথর করে কাঁপতে শুরু করলো। 
ও হয়তোবা বুঝতে পেরেছিল ।  মাথা তুলে ভ্রু কুঁচকে বললো_
-- কি হলো মাথা টিপ দাও? আগে চুলগুলো টেনে দাও। 
আমি কম্পিত কণ্ঠে বললাম_
-- দিচ্ছি। 
আলতোভাবে ওর চুলে হাত বোলাতে শুরু করলাম আমি।  ও চোখ বন্ধ করে মুখ গুঁজে পড়ে রইলো আমার কোলে। 
বেশ কিছু সময় অতিবাহিত হবার পর ও উঠে গিয়ে পাশে বালিশে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়লো।  আমার হাত ধরে হেঁচকা টানে বুকে ফেলে শক্ত করে চেপে ধরে বললো_
-- আমি ঘুমোবো।  তুমি পাহারা দাও কেউ যেন না আসে। 
-- তা নাহয় দিলাম বাট আমাকে এভাবে চেপে ধরলা কেন?
-- আমার ইচ্ছে । 
ভাবলেশহীন জবাব দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো ও।
আমি পুনরায় অবাক, বিস্মিত এবং হতভম্ব হয়ে ওর মুখপানে তাকিয়ে থাকলাম। 
অজান্তে আমার কণ্ঠ থেকে বেরিয়ে এলো_
-- তুমি অনেক চেইঞ্জ হয়ে গিয়েছো নিদ্র। 
-- নতুনভাবে শুরু করছি।  এমন নিদ্রকেই অভ্যেস করে নাও। 
চোখ বন্ধ রেখেই উত্তর দিলো ও। 
আমি জানিনা কেন হুট করে আমার চোখের কোল ভিজে উঠতে শুরু করলো।  আমি শুরু থেকে এমন নিদ্রকেই চাইছিলাম।  এতটা দিন মনে হয়েছে সম্পর্কে আমি একাই রয়েছি,  নিদ্রর দিকটা মৌন। 
আজ মনে হচ্ছে  নাহ্, আমরা দু'জনেই সম্পর্কে আছি। 
আমার জীবনের সবচাইতে বড় প্রাপ্তি  বুঝি এটাই। 
আমি নিদ্রর চিবুকে ঠোঁট চেপে কেঁদে ফেললাম। 
ও আমাকে পরম যত্নে আগলে নিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো_
--   স্যরি ফর এভ্রিথিং আ্যন্ড আই রিয়্যালি লাভ ইউ।  চলো আজ থেকে সব নতুন ভাবে শুরু করি। 
আমি ওর চোখে চোখ রেখে আর্দ্র কণ্ঠে বললাম_
-- তুমি সত্যিই নিদ্র তো!
-- সন্দেহ আছে?
চোখ খুলে,ঠোঁট কামড়ে প্রশ্ন করলো ও। 
আমি মাথা নেড়ে বললাম_
-- বিরাট সন্দেহ। 
-- তাহলে আগের ফর্মে ফিরে যাই?
-- নাহহ্। 
ঠোঁট উল্টে মৃদু চিৎকার দিলাম আমি।  ও এক গাল হেসে বললো_
"পাগল একটা"
চলবে?
sinin tasnim sara
[ম্যালাদিন পর 🥴]

এক মুঠো গোলাপМесто, где живут истории. Откройте их для себя