পর্ব-২

1.4K 7 0
                                    

আগের পর্বের পর..

কথার চেঞ্জ করা হয়ে গেলে রণ তাঁবু থেকে বেরিয়ে এলো। রণের জ্বালানো আগুনটা প্রায় নিভে এসেছিলো। ও কয়েকটা কাঠ নিয়ে ওই নিভন্ত আগুনের মধ্যে ফেলে দিলো। আগুনের শিখা পুনরুজ্জীবিত হয়ে  ক্যাম্পের আশপাশের পরিবেশকে নিজের হলুদাভ কমলা আলোয় দৃশ্যমান করে তুললো।
সেই আলোতেই রণর চোখ পড়লো কাঠের গুড়ির ওপর বসে থাকা কথার দিকে। এই স্বল্প আলো আধার মাখানো পরিবেশে মেয়েটাকে মানবিনী কম মায়াবিনী বেশি মনে হচ্ছে। বারবার মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছে ও এই কিশোরীর সারল্য ভরা সৌন্দর্যে।

-আচ্ছা তুমি কী টারজান যে এই জঙ্গলের মধ্যে থাকো।
মেয়েটির শিশুসুলভ কথায় হাসি ফুটে উঠলো রণর ঠোঁটের কোণে। মেয়েটা শরীরেই বেড়েছে কিন্তু মনটা এখনো শৈশবের সারল্যে পরিপূর্ণ আছে।
-নাগো আমি এখানে থাকিনা ট্রেকিংয়ের জন্যই এখানে আসা। আর আমার নামও টারজান নয়। আমার নাম অরণ্য বিশ্বাস। তোমার নাম কী?
-আমার নাম রূপকথা সেন।
- রূপকথা নাইস নেম বাট বড্ডো বড়ো আমি বরঞ্চ তোমায় রূপ বলে ডাকবো। তুমিও আমাকে রণ বলে ডাকতে পারো। আচ্ছা রূপ তুমি কী করে জঙ্গলের এতো গভীরে চলে এলে?
রণের প্রশ্নের উত্তরে কথা জানালো ওর পরিবার এবং আরও কয়েকটা পরিবার এই দারিংবাড়ির ট্রিপটাতে এসেছিলো। ওরা 'গ্রীনভিউ' নামক যে কটেজটায় উঠেছে তার পাশের জঙ্গলে ওরা পিকনিক করছিলো। তো গাইড পাশের একটি ছোট ঝর্ণার কথা জানানোয় তখন ও আর ওর সমবয়সীরা মিলে সেখানে যাওয়ার জেদ ধরে। ওদের পেরেন্টসরা সেইসময় লাঞ্চের অ্যারেঞ্জমেন্ট করায় গাইডের সাথে ওদেরকে ঝর্ণা দেখতে পাঠায়। সব ঠিকই ছিল কিন্তু যখন ঝর্ণার কাছে পৌঁছোয় তখনই কথার শরীরে অস্বস্তি শুরু হয়। কথা বুঝতে পারে ওর মেনস্ট্রুয়েশন স্টার্ট হয়েছে বাট লজ্জায় সেটা কাউকে বলতে পারেনা। কিন্তু স্যানিটারি ন্যাপকিন আর পিরিয়ড ক্র্যাম্পের যন্ত্রনা কমাতে পেইনকিলার ওর আর্জেন্টলি প্রয়োজন ছিল। তাই ও একা একাই কটজে ফেরার সিদ্ধান্ত নেয়। আসার সময় ওরা ঝর্ণার থেকে তৈরি হওয়া নদীর শাখা ধরে ওই জায়গায় এসেছিলো তাই ও সেভাবেই ফিরতে চায় কিন্তু ওর দুর্ভাগ্যবশত ও নদীর অন্য শাখা অনুসারে হাঁটতে শুরু করে। যার ফলে ও জঙ্গলের এই গভীর অঞ্চলে চলে আসে।
রূপের কথা শুনে অরণ্য ওদের কটেজটা কোথায় বুঝতে পারে যেহেতু ও আগেও গ্রুপ ট্রেকিংয়ের জন্য এখানে এসেছে। কিন্তু কথার এই অবস্থায় ওকে নিয়ে অতদূর যাওয়া পসিবল নয়। তাই ও কথাকে বলে যে ও ওকে সেফলি ওর বাড়ির লোকের কাছে পৌঁছে দেবে। কিন্তু ওকে তার জন্য তিন চারদিন অপেক্ষা করতে হবে যেহেতু কথাদের কটেজটা এই ক্যাম্পিংসাইড থেকে তিন ঘন্টা দূরে।
.
.
.
এই চারটি দিন যেন কথা আর অরণ্য দুজনের কাছেই স্বপ্নের মতো কাটতে থাকে।
শার্টলেস অবস্থায় কথা যখন রণকে কাঠ কাটতে দেখতো তখন প্রতিবারই ওর শিরদাড়া বেয়ে এক অজানা শীতল শিহরণ বয়ে যেত। এই প্রথম কোনো অজানা পুরুষকে এতটা কাছ থেকে দেখছে ও। রণর স্নেহ,যত্ন,নিজের বুকের মাঝে কথাকে আগলে রাখা আর ওর টল ডার্ক হ্যান্ডসম লুক সবই কথাকে রণর দিকে প্রচন্ডভাবে আকর্ষিত করেছিল। যদিও এই নতুন অনুভূতিটার নাম যে কী তা কথার জানা ছিলোনা।
শুধুই কী কথা আকর্ষিত হয়েছিল বললে ভুল হবে রণও ঠিক সমানভাবে আকর্ষিত হয়েছিল তার প্রতি। রাতের অন্ধকারে একই স্লিপিং ব্যাগের তলায় যখন কথা নিজের অসুস্থ শরীরটাকে উষ্ণতার আশ্বাস দিতে অরণ্যর বুকের মাঝে আশ্রয় নিতো তখন ওর হৃদয় প্রশান্তিতে ছেয়ে যেত। কিশোরী শরীর যে এতটাও আকর্ষণীয় হতে পারে তা রণর জানা ছিলোনা। ঘুমের মাঝে কথা যখন ওকে জাপ্টে ধরতো তখন ওর শক্ত বুকের সাথে লেগে থাকা কথার সদ্য প্রস্ফুটিত নরম বক্ষযুগল ওর মনে যৌবনের উচ্ছাসকে বাড়িয়ে তুললেও সেই কামনার স্রোতকে ও বারবার দমন করতো। প্রেয়সীকে নিবিড়ভাবে পাওয়ার ইচ্ছা মনে জাগলেও ও জানতো ওর রূপ এখনো অনেক ছোট তাই নিজের আদিম রিপুকে শক্ত হাতে শিকল লাগিয়েছিল ও।
.
.
এই চারদিনে অরণ্য নিজের যত্ন আর স্নেহ-ভালোবাসায় ওর রূপকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তুলেছে। বিচ্ছেদের সময় যে এবার আগত তা খুব ভালোভাবেই জানে রণ। না আর দেরি করা ঠিক হবেনা রূপকে ওর বাবা মায়ের কাছে পৌঁছে দিয়ে নিজের প্রেয়সীর প্রতি নিজের দায়িত্ব পালন করবে ও। আজ পঞ্চম দিনে কথাকে নিয়ে ও বেরিয়ে পড়লো গন্তব্যস্থলের উদ্দেশ্যে।
বেরোনার আগে অবশ্য প্রেয়সীর ললাটে স্নেহ চুম্বন একে প্রতিজ্ঞা করেছে,
"তাড়াতাড়ি বড়ো হয়ে যাও রূপ আমি ঠিক সময় তোমাকে নিজের করে নেবো।"
আর নিজের চিহ্নস্বরূপ দিয়েছে কাঠের তৈরি একটা ছোট্ট লকেট।
.
.
প্রায় তিন ঘন্টার পথ অতিক্রম করে রণ কথাকে 'গ্রীনভিউ' কটেজে ওর বাবা মায়ের কাছে পৌঁছে দিলো।
পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য নিয়েও নিজেদের হৃদয়ের টুকরোকে খুজে না পেয়ে পাগলপ্রায় অবস্থা হয়েছিল কথার বাবা মার। মেয়েকে পেয়েই বুকে জড়িয়ে নিলেন ওনারা আর অসংখ্য ধন্যবাদ জানালেন অরণ্যকে ওদের মেয়েকে সুস্থভাবে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।
.
.
.
কথাকে ওর বাবা মায়ের কাছে পৌঁছে দিয়ে আবার নিজের ক্যাম্প সাইডের দিকে ফিরে গেলো অরণ্য।

কটজের জানলা থেকে কথা তখনো তাকিয়ে আছে অরণ্যের মধ্যে ধীরে ধীরে আবছা হয়ে ওর রণদার অবয়বটার দিকে। মাথার মধ্যে শুধু একটা বাক্যই বেজে চলেছে,

"তাড়াতাড়ি বড়ো হয়ে যাও রূপ আমি ঠিক সময় তোমাকে নিজের করে নেবো।"
.
.
❤️ক্রমশ ❤️

লাভ মি লাইক ইউ ডু 🔞Where stories live. Discover now