পর্ব-২০

914 6 0
                                    

আগের পর্বের পর...

সকালের একফালি রোদ জানলার কাচ ভেদ করে অরণ্যের মুখে এসে পড়তে ঘুমটা ভেঙে গেলো ওর আর সাথে সাথেই ওকে জড়িয়ে শুয়ে থাকা কথাকে দেখে মনটা ভরে গেলো ওর।
আগের দিন রাত্রে বৃষ্টি হওয়ার দরুন আজ ভোরের দিক থেকে বাইরের প্রকৃতিতে কিছুটা ঠান্ডাভাব মিশেছে। তাই কথা উষ্ণতা খোঁজার জন্য একেবারে অরণ্যের প্রশস্ত বুকের সাথে লেপ্টে আছে। কথাকে এইভাবে দেখে অরণ্যের মনে পড়ে গেলো বারো বছর আগের ওর ত্রয়োদশী রূপের কথা সেও জ্বরের ঘোরে উষ্ণতা আর ভরসার আশ্বাসের জন্য ঠীক এইভাবেই ফুটফুটে বিড়াল ছানার মতো ওকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মুখ গুঁজে শুয়ে থাকতো।
কথাকে একটু জ্বালানোর ইচ্ছা মনে জাগলেও ওর ঘুমন্ত মুখটা দেখে আপাতত সেই ভাবনাকে আপাতত মন থেকে ঝেড়ে ফেললো।
একবার দেওয়াল ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে নিয়ে কথার কপালে একটা ছোট্ট চুম্বন এঁকে বিছানা থেকে উঠে পড়লো ও। তারপর কথার গায়ে চাদরটা ঠিকমতো দিয়ে মেঝেতে ছড়িয়ে থাকা ওদের ভিজে পোশাকগুলো নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
.
.
.
ঘুম ভাঙতে কথা দেখলো অরণ্য স্নান সেরে ওয়াশরুম থেকে বেরোচ্ছে। ওকে উঠে পড়তে দেখে অরণ্য বললো
-তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও আমি ব্রেকফাস্ট বানাচ্ছি।
-হুম।
বলে উঠতে গিয়েও তলপেটে আর কোমরে হালকা ব্যাথার টের পেয়ে আবার বসে পড়লো কথা। অরণ্যকে এইকথা বলবে কী না বলবে যখন সেই চিন্তায় ব্যাস্ত ছিল তখন অরণ্যের ডাকে নিজের ভাবনা থেকে বেরিয়ে এলো ও।
.
.
.
কথাকে তলপেটে হাত চেপে বসে থাকতে দেখে অরণ্য কথার কাছে এগিয়ে এসে ওর মুখটা নিজের দুহাতের মধ্যে নিয়ে বললো
-আবার বসে পড়লে, কষ্ট হচ্ছে?
-না মানে...
-পেইন হচ্ছে এটা বলতে এতো লজ্জার কী আছে। ইট ওয়াস ইওর ফার্স্ট টাইম দ্যাট ইউ গেট ইন্টিমেট উইথ সামওয়ান সো দিস পেইন ইস ভেরি ন্যাচারাল।
এন্ড সরি কালকে আমার এতোটাও ওয়াইল্ড হওয়া উচিত হয়নি আই হ্যাড টু বি কেয়ারফুল।
অরণ্যের স্বরে গিল্টিনেস দেখে কথা অরণ্যের কোমরটা নিজের বাহুবন্ধনির মধ্যে জড়িয়ে ধরে বললো
-অ্যাকচুয়ালি আই লাইক মাই ওয়াইল্ড লায়ন ভেরি মাচ। সো তার ওয়াইল্ডননেসের জন্য এটুকু পেইন নাহয় আমি সহ্য করে নিলাম।
-ওকে পেইন যখন আমার দেওয়া তখন তা থেকে রিলিফের ব্যবস্থাও আমিই করবো। জাস্ট ফাইভ মিনিটস্ ওয়েট করো।
কথাগুলো বলে অরণ্য ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। কয়েকমিনিট পরে বেরিয়ে এসে কথাকে কোলে করে নিয়ে আবার ওয়াশরুমে ঢুকে কথাকে মৃদু উষ্ণ জল থাকা বাথাটাবটায় বসিয়ে দিয়ে বললো
-টেক আ হট বাথ এন্ড ইউ উইল ফিল রিলিফ।
কথার গালে একটা কিস করে ওয়াশরুমের দরজাটা টেনে দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলো ও।
.
.
.
প্রায় কুড়ি মিনিট পর কথা ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং রুমে এসে দেখলো অরণ্য ইতিমধ্যেই টেবিলে ব্রেকফাস্ট সাজিয়ে ফেলেছে।
একটা চেয়ার টেনে কথা বসতে বসতে বললো
-বাঃ বাঃ কতো ভাগ্য আমার দি অরণ্য বিশ্বাস আমাকে ব্রেকফাস্ট সার্ভ করছে ভাবা যায়!
কথা গালে হাত দিয়ে অবাক হওয়ার ভঙ্গি করে বললো।
-তোমার এই ওভারএক্টিংয়ের জন্য নেক্সট মান্থে তোমার স্যালারি থেকে দশ টাকা কেটে নেবো।  এমনিতেও দিস ইস নট দা ফার্স্ট টাইম যে আমি তোমাকে নিজে হাতে কিছু কুক করে খাওয়াচ্ছি। দারিংবাড়ির জঙ্গলে আমার সাথে কাটানো পাঁচদিনের কথা ভুলে গেলে। তোমাকে নিজে হাতে ম্যাগি আর প্রোটিন শেক বানিয়ে খাইয়েছিলাম।
-সো ফানি ইনস্ট্যান্ট নুডলস বানানো আর গরম জল করে তাতে প্রোটিন শেক গোলাকে যদি কুকিং করা বলা হয় তাহলে তো ফোনে স্ক্রিনশট তোলাকেও ফটোগ্রাফি বলা যেতে পারে তাইনা।
-ফালতু বকবক করে আমার মাথাটা না খেয়ে টেবিলে সাজানো খাবারগুলো খাও।
অরণ্য গম্ভীরভাবে বললো।
-এই জন্যই না ভালো লাগেনা যেই দেখছে নিজে আমার সাথে কথায় পারবেনা ওমনি বকে ধমকে চুপ করিয়ে দেবে।
নিজের মনে বিড়বিড় করে বললো কথা। তারপর আর কিছু নাবলে একবার অরণ্যর দিকে তাকিয়ে ঠোঁট বাঁকিয়ে চুপচাপ খাওয়া শুরু করলো।
অরণ্য এতক্ষন ধরে কথার ভাবভঙ্গি পর্যবেক্ষণ করে মিটিমিটি হাসছিলো সেটা দেখে কথা বললো
-পাগল হয়ে গেলে নাকি!
-হ্যাঁ সাথে একটা ঝগরুটি বাচ্ছা মেয়ে নিয়ে এসেছি কিনা তাকে সামলাতে গিয়েই মনে হচ্ছে পাগল হয়ে যাচ্ছি।
অরণ্য গলার স্বরে রসিকতার ভাব এনে বললো।
-দিস ইস নট ফেয়ার রণ। মানছি আমি তোমার থেকে দশ বছরের ছোটো তাবলে তুমি আমাকে সারাক্ষন বাচ্ছা বাচ্ছা বলবে এটা মেনে নিতে পারবোনা। আই এম এন এডাল্ট নাউ।
-ওলে বাবা বাচ্ছা মেয়েকে বাচ্ছা বললেই খালি রেগে যায়। না না বেবি কাঁদেনা।
অরণ্য কথার নরম গালটা আলতো করে টেনে বললো।
-রিয়েলি!! ইয়েস্টারডে নাইটে একসাথে স্পেন্ড করা মোমেন্টের পরেও তোমার আমাকে বাচ্ছা মনে হয়।
রাগের মাথায় কথাটা বলে ফেলেই জিভ কাটলো রূপকথা। এতক্ষনে ওর মুখে লেগে থাকা রাগটা সরে গিয়ে একরাশ লজ্জার লাল রং এসে জড়ো হলো।
এই এক বড্ড বাজে স্বভাব ওর রাগের মাথায় ভাবনাচিন্তা না করে এমনসব কথা বলে ফেলে যে ওকে টিজ করার সাবজেক্ট ও নিজেই অন্যের কাছে মেলে ধরে।

অরণ্য খুব ভালো করেই জানতো যে রূপকথাকে একবার রাগিয়ে দিতে পারলে ও কাল রাতের কথাটা একবার না একবার তুলবেই আর তাতে ও খুব সহজেই কথাকে টিজ করার সুযোগ পাবে। আর এতক্ষনে সেটা পেতেই অরণ্য আর দেরি না করে বললো
-কাল রাতের মোমেন্ট,,, উমম অ্যাকচুয়ালি আই ওয়াস স্লিপি দেন তাই তুমি এখনো বাচ্ছাই আছো না এডাল্ট হয়েছো তখন বুঝতে পারিনি। ওকে নো ওয়ারি লেটস রেক্রিয়েট দ্যাট মোমেন্ট।
অরণ্য মুখে একটা ডেভিল হাসি ফুটিয়ে বললো। তারপর কথাকে নিজের বাহুবন্ধনির মধ্যে টানতে গেলেই কথা একলাফে চেয়ার থেকে উঠে বললো
-আমার এখন ওইসবের মুড নেই আই এম ভেরি হাংরি নাউ।
কথাটা বলেই রূপকথা টেবিল থেকে নিজের খাবার প্লেটটা নিয়ে একছুটে গেস্টরুমে ঢুকে দরাম করে দরজা বন্ধ করলো।
-আরে আসতে যাও পড়ে যাবে। হাঃ হাঃ হাঃ।
কথাকে ঐভাবে পালতে দেখে নিজের পেট ধরে অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো অরণ্য।
.
.
.
❤️ক্রমশ❤️

লাভ মি লাইক ইউ ডু 🔞Where stories live. Discover now