পর্ব-১৪

466 8 0
                                    

আগামি পর্বের পর...

আগামীকাল মন্দারমণি সি বিচে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে "এ. বি ইন্ডাস্ট্রিস এবং লাজবন্তিস"-এর কোলাবোরেশনে আয়োজিত গ্র্যান্ড ফ্যাশন শো "নাইনটিস এন্ড নাউ" যেখানে ওরা নাইনটিসের ফ্যাশন স্টাইলের সাথে প্রেসেন্ট ফ্যাশন স্টাইলকে ফিউস করেছে। এই নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের বিনোদন পেজ গুলোতে ইতিমধ্যেই লেখালেখি শুরু হয়ে গেছে এছাড়া অনেক ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সরও এই শো সম্বন্ধে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আর তা হবেনাইবা কেন এ. বি ইন্ডাস্ট্রিস যথেষ্ট গ্র্যান্ড স্কেলে এই শোয়ের প্রচার করেছে।
তাছাড়া লাজবন্তিস তার শুরুর সময় থেকেই উচ্চবিত্তর পাশাপাশি মধ্যবিত্তদের সাধ্যের মধ্যেও বেস্ট কোয়ালিটি দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তাই এইবার তারা মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের জন্য নতুন কী আনতে চলেছে সেই নিয়ে বেশ ভালোরকমই হাইপ ক্রিয়েট হয়েছে।
এককথায় এই ফ্যাশন শোয়ের সফলতার ওপর নির্ভর করছে, এই শোয়ে ইনভেস্ট করা বিশাল এমাউন্টের টাকা ইনভেস্টারদের থেকে তোলা আর তার সাথে ইন্ডিয়ান মার্কেটে নিজেদেরকে এস আ প্রেস্টিজিয়াস ফ্যাশন ব্র্যান্ড হিসাবে ইন্ট্রোডিউস করা।
.
.
.
সূর্য বেশ কিছুক্ষন আগেই অস্ত গেছে। ধীরে ধীরে সন্ধ্যা তার তারাখচিত কালো কেশরাশি ছড়িয়ে দিচ্ছে সমস্ত আকাশ জুড়ে। তবে দিগন্তে যেখানে সমুদ্র আর আকাশ একসাথে মিশেছে সেখানে গোধূলির রক্তিম আভা এখনো কিছুটা লেগে আছে সন্ধ্যার অন্ধকার এখনো তাকে ঢেকে দিতে পারেনি। অরণ্য একদৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে গভীরভাবে কিছু ভেবে চলেছে। নিজের খেয়ালে ও এতটাই হারিয়েছিল যে রোশনি কখন ওর পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে সেটা টের পায়নি।
-আন্টির কথা ভাবছিস?
চকিতে পিছনে ফিরে তাকালো অরণ্য।
-ও তুই!! কখন এলি? মডেলরা সবাই পৌঁছে গেছে তো আর ড্রেসেসগুলো ঠিক জায়গায় রাখা হয়েছে?
-বাপরে বাপ তুই তো পুরো প্রশ্নবিচিত্রা খুলে বসেছিস দাড়া একটা একটা করে উত্তর দিচ্ছি।
প্রথমত আমি আর আমার টিম এই আধঘন্টা আগে এলাম। সেকেন্ডলি রাহুল মডেলদের নিয়ে এই দশমিনিট হলো রিসর্টে ঢুকলো। আর ফাইনাল প্রশ্নের উত্তর সমস্ত ড্রেস যত্ন সহকারে গুছিয়ে রেখে রুমের চাবি কথার হাতে অর্পণ করে এসেছি। ব্যাস তোর প্রশ্নের সমস্ত উত্তর আমি দিয়ে দিয়েছি এবার তুই আমার প্রশ্নের উত্তরটা দেতো।
-তুই ঠিকই ধরেছিস মায়ের কথাই মনে করছিলাম। লাজবন্তী নামের একটা ছোট বুটিক ওপেন করার কত স্বপ্ন ছিল মায়ের। কিন্তু স্বপ্ন থাকলেও অর্থ ছিলনা সেইসময়। আর যখন অর্থের জোগাড় হলো তখন মানুষটাই আর থাকলোনা।
শুধু ট্রাজেডিটা কেমন ভাব, আজ মায়ের স্বপ্ন "লাজবন্তিস"-এর বাস্তব রূপায়ণ ঘটেছে। তারই ছোট্ট পার্সোনাল ডাইরির পাতায় থাকা ডিসাইনের অনুকরণে তৈরি পোশাক কালকে ওতো বড়ো ইভেন্টে শো করা হবে। অথচ মানুষটা কিছুই দেখে যেতে পারলোনা। ক্যান্সার নামক মারণ রোগ শেষ করে দিলো তাকে।
অবশ্য তোর কাছে আর নতুন করে কী বলার আছে। এ. বি ইন্ডাস্ট্রিসের জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত সমস্ত ঘটনার সাথেই যতটা আমি আর বাবা জড়িত ততটাই জড়িত আছিস তুই আর রক্তিম আঙ্কেল, তাই সমস্তটাই তো তোর জানা।
তাই কালকের ইভেন্টটাকে সাকসেসফুল হতেই হবে এতে আমার মায়ের সম্মান জড়িয়ে আছে।"
-চিন্তা করিসনা দেখবি সব ভালোই হবে। আচ্ছা বাবা তো বললো যে কাজটার জন্য অভিনব আঙ্কেল দিল্লি গিয়েছিল সেটা প্রায় কমপ্লিট হয়ে এসেছে। তো আঙ্কেল কী কালকের ইভেন্টে আসছেন নাকি একেবারে কাজ শেষ হলে তারপর ফিরবেন?
-বাবা আজ বিকালের ফ্লাইটে দিল্লি থেকে ফিরছে সো আর কিছুক্ষনের মধ্যেই কলকাতায় পৌঁছে যাবে। তারপর রেস্ট নিয়ে একেবারে কাল সকালে সুমিত আর মাসি মেসোর সাথে এখানে আসবে। আচ্ছা জিজু আর তিন্নি কালকে আসছে তো?
-নারে তিন্নির কালকে নাচের পরীক্ষা আছে তাই ওরা কেউই আসতে পারবেনা।
-ইস কালকেই পরীক্ষা হতে হলো।
- ছাড় কী আর করা যাবে। নে এবার রিসর্টের দিকে। সন্ধ্যা হয়ে এলো এবার না ফিরলে সবাই ভাববে আমরা দুজনে বোধহয় হারিয়ে গেছি।
-ঠিক আছে চল।
অরণ্য হাসতে হাসতে বললো।
অরণ্য আর রোশনি রিসোর্টের দিকে এগিয়ে গেলে পাশের একটি ঝাউ গাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে একজন মহিলা। সে আর অন্য কেউ নয় শালিনী। এতক্ষন ধরে ও অরণ্য আর রোশনির সমস্ত কথাই শুনেছে। অরণ্যর মিলিয়ে যাওয়া অবয়বটার দিকে জ্বলন্ত চোখে তাকিয়ে হিসহিসে স্বরে
-কালকের ইভেন্ট আমি কিছুতেই সফল হতে দেবোনা মিস্টার অরন্য বিশ্বাস। ওই দুটাকার মেয়েটার জন্য তুমি আমাকে রিজেক্ট করেছিলে না। এবার ওকে সামনে রেখে এমন চাল চালবো যে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে "লাজবন্তীস" ফ্যাশন ব্যান্ডের নামও ডুববে আর তোমার ইমোশনের ওপর আঘাত করার দোষে তোমার প্রেমিকাকেও তুমি নিজের জীবন থেকে দূরে সরাবে। আসলে কী বলতো এই ইমোশন ব্যাপারটা না বড্ড খারাপ জিনিস, কাউকে এতোটাই অন্ধ করে দিতে পারে যে সে ঠিকভুল বিচার করার জ্ঞানটাই হারিয়ে ফেলে এন্ড তোমার সাথেও সেটাই হতে চলেছে।
.
.
.
ইভেন্টের দিন, সন্ধ্যাবেলা

লাভ মি লাইক ইউ ডু 🔞Where stories live. Discover now