পর্ব-২১

642 7 0
                                    

আগের পর্বের পর...

মন্দারমণি থেকে ফেরার দুদিন পরেই এ. বি ইন্ডাস্ট্রিসের দিল্লির অফিসের একটা প্রজেক্টে কিছু প্রবলেম হওয়ায় সেটা সামলাতে অরণ্যকে দিল্লি চলে যেতে হয়। তারপর কাজের কারণে প্রায় আড়াই মাস দিল্লিতে থাকতে হয়েছে ওকে। কথা সাথে গেলে হয়তো কাজটা একটু তাড়াতাড়ি কমপ্লিট হতো কিন্তু ঐসময় কথার মা অসুস্থ থাকার কারণে অরণ্য আর কথাকে ওর সাথে যাওয়ার জন্য বলেনি। তাছাড়া ওর অনুপস্থিতিতে কোলকাতার অফিস সামলানোর জন্যও কথার থাকা জরুরি ছিলো।
অরণ্য এবং ওর টিমের লোকেদের এই আড়াই মাসের কঠোর পরিশ্রমে সমস্ত প্রজেক্টটা সঠিকভাবে সুসম্পন্ন হওয়ার পর ফাইনালি আজ দিল্লি থেকে কোলকাতা ফিরছে অরণ্য।
প্রায় পঁচাত্তর দিনের দূরত্বের পর আজ  মেয়েটার স্নিগ্ধ মুখটা দেখতে পারবে ভেবে আলাদাই উত্তেজনা অনুভূত হচ্ছে ওর মনে। আসলে ডেডলাইনের আগে প্রজেক্টের কাজ শেষ করার জন্য আগের মাসগুলোয় এতোটাই ব্যাস্ত ছিল যে মেয়েটার সাথে কয়েকমিনিটের অফিসিয়াল ফোনকল ছাড়া আলাদা করে কথা বলার সময় করে উঠতে পারেনি অরণ্য।
.
.
.
সিকিউরিটি চেকিং পেরিয়ে এয়ারপোর্টের বাইরে এসে একটু এগোতেই অরণ্য দেখতে পেলো পরিচিত মুখটাকে, সাথেসাথেই জেট ল্যাগের ক্লান্তি কেটে গিয়ে মনটা একরাশ তরতাজা অনুভূতিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেলো ওর।
অরণ্য এগিয়ে গিয়ে কথাকে টাইটলি হাগ করলো। কথাও অরণ্যর ক্রিয়ার একই প্রতিক্রিয়া জানালো।
বেশকয়েকমিনিট কথাকে নিজের সাথে জড়িয়ে রাখার পর অরণ্য কথার কপালে একটা আলতো চুম্বন করে বললো
-চলো এবার যাওয়া যাক।
-হুম।
-মেমোরিজ লেন -এ সিট্ বুক করে নিয়েছো তো।
-হ্যাঁ। আর তোমার কাজটা হয়েছে।
-অরণ্য বিশ্বাস যখন কোনো কাজ হাতে নেয় তখন তো সেটা কমপ্লিট হতেই হবে। আজ শালিনী শর্মা বুঝবে অরণ্য বিশ্বাসের সাথে পাঙ্গা নেওয়ার রেজাল্ট কী হতে পারে।
মহেশদাকে ফোন করে ডেকে নাও।
-আজ মহেশদা আসেনি।
-ওঃ তাহলে যে ড্রাইভারকে এনেছো তাকে ডাকো।
-আজ আমি গাড়ি ড্রাইভ করবো।
-সেফলি পৌঁছাতে পারবো তো। আমার কিন্তু এখন থেকেই পেল্পিটেশন শুরু হয়ে গেছে।
অরণ্য মজার স্বরে কথাটা বলে হাসতে শুরু করলেও কথার রাগী লুকের দিকে তাকিয়ে হাসিটা সাথে সাথে মিলিয়ে গেলো।
কথা একবার তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে অরণ্যর দিকে তাকিয়ে ড্রাইভার সিটে গিয়ে বসে ব্যাকসিটের দরজাটা খুলে দিলো। অরণ্য একবার ঢোক গিলে কথার দিকে তাকিয়ে নিজের লাগেজটা ব্যাক সিটে রেখে চুপচাপ কথার পাশের প্যাসেঞ্জার সিটে বসে সিটবেল্ট লাগলো।
.
.
.
এয়ারপোর্ট থেকে প্রায় আধঘন্টা ড্রাইভিংয়ের পর 'মেমোরিজ লেন'-এ পৌঁছে গাড়ি থামালো কথা।
-আমি আগে যাচ্ছি। তুমি তাহলে আমি ফোন করলে উকিল বাবুকে নিয়ে ঢুকবে।
অরণ্য বললো।
-হুম।
ক্লান্তিমাখা স্বরে বললো কথা। সেটা টের পেয়ে অরণ্য বললো
-রূপ আর ইউ ওকে? তোমার গলার স্বরটা এরকম শোনাচ্ছে কেন।
-এমনিতে ঠীক আছি কিন্তু কয়েকদিন ধরে একটু টায়ার্ড ফিল করছি।
-তাহলে ফেরার সময় একবার তোমাকে নিয়ে ডক্টরের কাছে যাবো।
-আরে না না ওতো টেনশনের কিছু নেই আসলে এইকদিন তুমি ছিলেনা বলে সমস্ত ওয়ার্কলোডটা আমার ওপর এসে পড়েছিল সো সেইসব সামলে একটু টায়ার্ড হয়ে গিয়েছি আরকি।
-সত্যি বলছো তো।
-আরে হ্যাঁ গো বাবা। এবার তুমি যেই কাজে যাচ্ছ সেটার দিকে মন দাও।
আর শোনো তুমি শুধুমাত্র শালিনীর সাথে ভালো ব্যবহার করবে এর থেকে বেশি আর কিছু নয়।
শেষের কথাগুলো শাসানির স্বরে বললো রূপকথা।
-যথা আজ্ঞা ম্যাডাম।
অরণ্য হালকা হেসে কথাগুলো বলে কথার চুলটা আলতো করে ঘেঁটে দিয়ে গাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো।
.
.
.
ক্যাফের ভিতরে ঢুকতেই অরণ্য দেখতে পেলো শালিনীকে। শালিনীকে দেখে ওর মনে রাগের উদ্রেক হলেও ও একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে নিজেকে কন্ট্রোল করে মুখে একটা মেকি হাসি ফুটিয়ে শালিনীর দিকে এগিয়ে গেলো।

লাভ মি লাইক ইউ ডু 🔞Where stories live. Discover now