পর্ব-৫

934 11 1
                                    

আগের পর্বের পর..

রাহুল সিইওয়ের অফিস থেকে বেরিয়ে সোজা কথার কেবিনে ঢুকে গ্লাসে থাকা জলটা একনিঃশ্বাসে শেষ করে বলে
-কথা বোন আমার হ্যাটস অফ টু ইউ। কী করে পারিসরে অরণ্য স্যারের অ্যাংগার  আর এরোগেন্স সহ্য করে ওই কেবিনে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা কাজ করে যেতে। আমার অবস্থা তো এই এই পাঁচ মিনিটেই খারাপ হয়ে গেছিলো। যেন মনে হচ্ছিলো কেউ সিংহের গুহায় ঢুকিয়ে দিয়েছে আমাকে। আর কিছুক্ষন থাকলে নির্ঘাত হার্ট অ্যাটাক হয়ে মরতাম তখন আমার না হওয়া বৌটার কী হতো বলতো। সেতো বিয়ের আগেই বিধবা হয়ে যেত।
রাহুলকে এইভাবে হঠাৎ করে কেবিনে ঢুকে জলের গ্লাসের ওপর হামলে পড়তে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে গেছিলো কথা। হঠাৎ করে ছেলেটার শরীর খারাপ করলো নাকি তা বোঝার চেষ্টা করছিলো। কিন্তু এরকম উদ্ভট বক্তব্য শুনে নিজের কপাল চাপড়ালো কথা।
এই ছেলেটা অরণ্যকে কেন যে এতো ভয় পায় তা বুঝতে পারেনা কথা। অথচ অরণ্য কোনোদিন ওকে বকাবকি করেনি। ইভেন অরণ্য খুব রেগে না গেলে কোনো এমপ্লয়ীর সাথেই খারাপ ব্যবহার করেনা। যদিও কথার ব্যাপারটা আলাদা, ওকে নিচু করতে অরণ্যের আলাদা করে কোনো রিসনের প্রয়োজন হয়না।
রাহুল আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলো কিন্তু কথা ওর ঠোঁটে আঙুল দিয়ে বললো
-ব্যাস তোর বক্তব্য শেষ হয়েছে এবার তুই যা এখন থেকে। আমার এখন অনেক কাজ কাছে।
-তুই আমাকে এইভাবে বলতে পারলি তো কথা। ঠিক আছে তোর মনে হয় তো আমি তোকে ডিসটার্ব করি তাহলে আমি আর কোনোদিনও তোর সাথে কথা বলবোনা।
-আরে আমি ঐভাবে বলতে চাইনি।
ধ্যাৎ চলে গেলো। উফফ এই ছেলেটানা একেবারেই বাচ্চাদের মতো একটু রাগ দেখিয়ে কথা বললেই অভিমান হয়ে যায়। যাইহোক এখন তো আর রাগ ভাঙানোর সময় নেই অফিস শেষে নাহয় বিরিয়ানি ট্রিট দোবো। তাতে যদি বাবুর রাগ কমে।
-তাহলে আজ বিরিয়ানি ট্রিটটা পাক্কা দিছিস তো?
-তুই এখনো এখানেই আছিস!!
-আরে না না আমি চলে গিয়েছিলাম আসলে অরণ্য স্যারের ম্যাসেজটা দেবো বলে ফিরে এলাম। স্যার তোকে আধঘন্টা পর দেখা করতে বলেছেন।
-দেখলিস তো তোর ওপর কেন রেগে যাই আমি। কাজের কথাটা না বলে তুই আগে ফালতু বকবক করছিলিস। এখন যদি তুই আমাকে স্যারের মেসেজটা দিতে ভুলে যেতিস তাও ঝাড়টা তোর বদলে আমি খেতাম।
কথা বলতে বলতে ওর চোখগুলো জলে ভরে উঠলো।
-এই সরি সরি কথা। দেখ তুই প্লিজ কাঁদিসনা। প্রমিস আর এরকম ভুল করবোনা। এবার তুই কাঁদলে আমিও কেঁদে দেবো।
রাহুল কথার চোখের জলটা মুছে দিয়ে এক হাত দিয়ে হালকা করে জড়িয়ে ধরে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। সকাল থেকেই একটার পর একটা সমস্যা ঘটে চলেছে ওর সাথে। প্রথমে ভাইয়ের জ্বর আর তারপর দেরি করে আসার জন্য অরণ্য ওকে বকলো সব মিলিয়ে মনটা বিক্ষিপ্ত হয়েছিল মেয়েটার। তাই বেস্টফ্রেন্ডের তরফ থেকে এই হাগটার প্রচন্ড দরকার ছিল ওর। রাহুলের স্নেহপূর্ন বন্ধনে নিজের অস্থির মনটাকে শান্ত করে একটু স্বাভাবিক হলো কথা।
বিষাদময় পরিবেশটা ঠিক করতে বাচ্ছাদের মতো ঠোঁট ফুলিয়ে ইনোসেন্ট ফেস নিয়ে - "শুখনো কথায় কাজ হবেনা আগে বল আজকের বিরিয়ানি ট্রিটটা তুই দিবি তাহলেই কান্না বন্ধ করবো।"
কথাটা বলে রাহুলের দিকে একটা টেডি স্মাইল দিলো ও।
-উফফ দেবী তাহলে ফাইনালি নিজের ফর্মে  ফিরেছেন। তবে তুই ফর্মে থাক আর নাথাক আমাকে জ্বালানোর সুযোগ কিছুতেই ছাড়বিনা বল।
-মানে!!
-এই যে যখন ফর্মে ছিলিসনা তখন কেঁদেকেটে তোর চোখের জলে-নাকের জলে আমার নতুন শার্টটা নষ্ট করলি। আবার এখন ফর্মে ফিরে আমার পকেট কাটার ধান্দা করছিস।
রাহুলের কথা শুনে কথা ওর দিকে ঘুষি পাকিয়ে এগিয়ে গিয়ে হালকা করে ওর মুখে মারলো। রাহুলও আহত হওয়ার এক্টিং করলো। এইভাবেই খুনসুটি করতে করতে একে অপরের কাঁধে হাত রেখে দুজনেই প্রাণখোলা হাসিতে ফেটে পড়লো। তারপর দুজনেই মুখে আঙুল দিয়ে একে অপরকে চুপ করার ইশারা করলো।
-নে নে অনেক মজা হয়েছে এবার নিজের কাজে যা। ইন্টারকম খালি পড়ে আছে। তাড়াতাড়ি যা তুই না থাকলে কেউ স্যারের সাথে দেখা করতে পারবেনা।
-ওকে বাই। তুইও তোর কাজ কর। বিকালে দেখা হচ্ছে।
.
.
.
টেবিলে রাখা কফি মাগটা একটানে ছুঁড়ে ফেললো অরণ্য। মাগটা ভেঙেও নিজেকে কিছুতেই শান্ত করতে পারলোনা। যতবারই কথার রুমের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা রাহুলের কথাকে জড়িয়ে ধরার দৃশ্যটা মাথায় আসছে ততই রাগের পারদটা বেড়ে চলেছে।
"রূপ ডার্লিং অনেক অপেক্ষা করিয়েছো আমায়। আর তোমাকে ফ্রীলি ছাড়া ঠিক হবেনা। তোমাকে নিজের করে নেওয়ার সময় এবার এসে গেছে। নাউ জাস্ট গেট রেডি ফর মাই লাভ টর্চার।"
একটা ডেভিল স্মাইল ফুটে উঠলো অরণ্যের মুখে।
.
.
.
♥️ক্রমশ♥️
তো কেইসা লাগা আখরিকা সারপ্রাইস। 🤭

লাভ মি লাইক ইউ ডু 🔞Where stories live. Discover now