আগের পর্বের পর...
একটা অজানা অস্বস্তিতে ঘুমটা ভেঙে গেলো অরণ্যর। গায়ে থাকা হালকা চাদরটা সরিয়ে বিছানার ওপর উঠে বসলো ও। দেওয়ালে থাকা দামি এন্টিক ঘড়িটা দুবার ঢং ঢং করে জানিয়ে দিলো রাত দুটো বাজছে। বিছানা থেকে উঠে ওয়াশরুমের দিকে এগিয়ে গেলো অরণ্য।
ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে ব্যালকনিতে আসতেই সামনের লনে অপরূপ দৃশ্যটা দেখে কিছুক্ষণের জন্য মোহিত হয়ে গেলো। অস্ফুটেই মুখ দিয়ে উচ্চারিত হলো "নীলপরী।"
লনের ঘনসবুজ ঘাসের গালিচায় খালি পায়ে আনমনে হেটে চলেছে কথা। রাতের হালকা বাতাস ওর খোলা চুলগুলোর সাথে খুনসুটি করে চলেছে। শিশিরসিক্ত ঘাসের স্পর্শে মাঝে মাঝে শিহরিত হচ্ছে ও। চন্দ্রালোকিত লনের আলো অন্ধকার ঘেরা পরিবেশে নীল চিকনকারী কুর্তি পরিহিত কথাকে রূপকথার গল্পের পরীদের মতোই মায়াবীনি লাগছে।
প্রেয়সীর এরকম মোহময়ী রূপে বেশ কিছুক্ষন আছন্ন হয়েছিল অরণ্য। তারপর কিছু একটা মনে পরায় ব্যালকনি থেকে রুমে এসে নাইট ড্রেসটা চেঞ্জ করে একটা টিশার্ট আর ট্রাউসার পড়ে নিয়ে নীচে নেমে গেলো।
.
.
.
-নাইট ওয়াক কমপ্লিট হয়েছে?
অরণ্যর কথায় একটু চমকে উঠে পিছনে তাকালো কথা। নিজের ভাবনায় এতটাই বিভোর ছিল যে অরণ্য কখন একটা ট্রেতে কফিকাপ আর কুকিস নিয়ে ওর পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে বেচারি বুঝতেই পারেনি।
-ওঃ স্যার আপনি!! এইভাবে হঠাৎ করে কেউ ডাকে!! আমিতো ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম।
অরণ্য নিজের হাতে থাকা ট্রেটা বাগানে রাখা ছোটো টি টেবিলটার ওপর নামিয়ে রেখে পাশে থাকা চেয়ারটায় বসে বললো
-আচ্ছা সরি সরি আমার হঠাৎ করে তোমাকে ডাকা উচিত হয়নি। কিন্তু আমার দোষগুলো ধরা ছেড়ে আপাতত কফিতে চুমুক দিয়ে বলো কেমন বানিয়েছি এটা।
অরণ্যর কথাগুলো শুনে কথা হালকা হেসে ওর পাশের চেয়ারটায় বসতে অরণ্য ওকে টেনে নিয়ে নিজের কোলে বসিয়ে দিলো।
-স্যা.. স্যার কী হলো এটা!
কথার লজ্জা জড়ানো কথাগুলো শুনে অরণ্য ওর ঠোঁটে নিজের আঙুল দিয়ে স্লাইড করে একটা কফি কাপ ওর হাতে ধরিয়ে হাস্কি ভয়েসে বললো
-জাস্ট এনজয় দিস মোমেন্ট।
এর পরের মুহূর্তগুলোয় দুজনেই কোনো কথা না বলে গরম কফির প্রতিটা সিপ্-এর সাথে একে অপরের নিবিড় সান্নিধ্য উপভোগ করতে থাকলো।
.
.
.
কেটে গেছে বেশ কিছুটা খুনসুটি ভরা মুহূর্ত। আদুরে বিড়ালের মতো অরণ্যের বুকে মুখ গুঁজে ওর কোলে বসে আছে কথা। ওর ঘাড় আর গলার উন্মুক্ত অংশে ফুটে আছে অরণ্যের আদুরে অত্যাচারের বেশ কিছু চিহ্ন। অরণ্য চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে হালকা হাতে কথার চুলের মধ্যে বিলি কেটে চলেছে। ওর গলায় থাকা বেশ কিছু লাভ বাইটের চিহ্ন বুঝিয়ে দিচ্ছে যে আদরবাসার মুহূর্তটা একতরফা ছিলোনা। দুজনেই সমানভাবে সেটা উপভোগ করেছে। অক্টোবরের রাতের পরিবেশে হালকা ঠান্ডা ভাবে থাকলেও সেটা আপাতত প্রেমের উষ্ণতার কারণে ওদেরকে স্পর্শ করতে পারছেনা।
কালকে ওদের দুজনেরই ভীষণ ব্যাস্ত সিডিউল আছে তাই অরণ্য ঠিক করলো এবার ভিতরে গিয়ে কয়েক মুহূর্ত ঘুমিয়ে নেবে। সেই জন্য কথাকে ডাকতে গিয়ে বুঝলো সে ইতিমধ্যেই ঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছে। তাই অরণ্য কথাকে আর না ডেকে ওকে কোলে তুলে নিয়ে বাড়ির দিকে এগোলো। তারপর কথাকে যত্ন সহকারে গেস্টরুমের বিছানায় শুইয়ে দিয়ে অরণ্য নিজের বেডরুমের দিকে চলে গেলো।
.
.
.
সাতটার অ্যালার্মটা বাজার সাথে সাথেই ঘুম ভেঙে গেলো অরণ্যের। চটপট ফ্রেশ হয়ে নীচে নামতে যাবে ,,,, এমন সময় নিচ থেকে কিছু ছিটকে পড়ার শব্দ আসায় কয়েকটা সিঁড়ি প্রায় টপকে নীচে নামলো অরণ্য। কিন্তু নীচে নেমে ওর ওপেন কিচেনে অরেঞ্জ জুসে স্নান করে দাঁড়িয়ে থাকা কথাকে দেখে হাসবে না কাঁদবে ভেবে পেলোনা।
আসলে অনেকটা বেলা হয়ে গেলেও অরণ্য ঘুম থেকে উঠছেনা দেখে কথা ঠিক করেছিল ব্রেকফাস্টটা ও নিজেই বানিয়ে নেবে। চিকেন স্যান্ডউইচটা ঠিকঠাক বানিয়ে নিলেও সমস্যা হয় অরেঞ্জ জুসটা বানানোর সময়। অরণ্যর কিচেনে থাকা অত্যাধুনিক জুসারটা ঠিকঠাক এসেম্বল না হওয়ায় ওটা অন করার কিছুক্ষন পরেই কভারটা ছিটকে গিয়ে সমস্ত জুস কথার গায়ে পরে ওকে একপ্রকার স্নান করিয়ে দেয়।অরণ্যকে ওর দিকে তাকিয়ে হাসতে দেখে কথা বাচ্চাদের মতো কাঁদতে শুরু করলে অরণ্য ওর দিকে এগিয়ে গিয়ে চোখের জল মুছিয়ে বলে
-কী হলো কথা হোয়াই আর ইউ ক্রায়িং?
-এইরকম অবস্থায় আমি অফিস কী করে যাবো।
কথা ফোঁপাতে ফোঁপাতে বললো।
-ও এই ব্যাপার, ডোন্ট ওয়ারি ডার্লিং আই হ্যাভ আ সারপ্রাইস ফর ইউ। বাট তার জন্য কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হবে। তুমি আপাতত ফ্রেশ হয়ে আমার একটা ট্রাউসার আর টিশার্ট পড়ে নাও।
.
.
.
অরণ্য আর কথা নিজেদের ব্রেকফাস্ট সেরে উঠছে এইসময় অরণ্যর বাড়ির ডোরবেলটা বেজে উঠলো। অরণ্য এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলতে গেটকিপার ওর হাতে দুটো পার্সেল দিয়ে গেলো। ও পার্সেলগুলো নিয়ে কথাকে দিয়ে বললো
-দিস ইস আ স্মল সারপ্রাইস ফর ইউ। হোপ ইউ উইল লাইক ইট। যাও তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আসো।
.
.
.
গেস্টরুমে এসে পার্সেলগুলো খুলে কথা দেখলো একটাতে খুব সুন্দরভাবে সাদাসুতোর কাজ করা গোলাপি রঙের একটা শাড়ি এবং প্রয়োজনীয় এক্সেসরিস আছে এবং অন্য পার্সেলটায় আছে শাড়িটার সাথে ম্যাচিং একজোড়া ডিজাইনার স্যান্ডেল।
.
.
.
❤️ক্রমশ❤️
YOU ARE READING
লাভ মি লাইক ইউ ডু 🔞
Romanceচারিদিকের ঘন অরণ্যের দিকে তাকিয়ে বুকটা ভয়ে কেঁপে উঠলো কথার। ঘুরতে ঘুরতে আবার সেই একজায়গায় চলে এসেছে। কী করে এই ঘন অরণ্য থেকে বেরোবে ও। আর কিছুক্ষন পরেই সূর্য অস্ত যাবে তখনতো অরণ্যের পরিবেশ আরও ভয়ঙ্কর হয়ে যাবে। ভয় আর চিন্তায় মাথাটা যন্ত্রনায় ছিঁড়ে যা...