আমার আর মেয়েটি একসাথে সাইকেল চড়ার গল্প

649 18 0
                                    

-এই শামস ! আব্বু ঐ দিকে যেও না ।
আম্মুর কথা শুনে সাইকেলের ব্রেক চাপতেই হল । বিকেল বেলা একটু শান্তি মত সাইকেল চালাবো তারও উপায় নাই ।
এই আম্মু গুলো এমন কেন হয় ? সব কাজেই কেবল বাঁধা আর বাঁধা ? কি হবে ঐ দিকে গেলে ? পরিস্কার রাস্তা ।
আম্মু তো নিজেই হেটে এল ঐ দিক থেকে ।
তাহলে ?
আমার আবার একটা অভ্যাস খুব আছে । কেউ কোন একটা কাজ করতে মানা করলে আমার কেন জানি সেই কাজটাই আরো বেশি বেশি করতে ইচ্ছা করে । আমি আম্মুর চলে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করি ।
-শামস আসো বাসায়, আসো । এখনই তোমার স্যার আসবে ।
-এই তো আম্মু আসছি । আর একটু চালাই ।
আম্মু আর দাড়াল না । আম্মু চলে যেতেই আমি সাইকেলের প্যাডেল চালালাম ঐ দিকে । মনের ভিতর খানিকটা কৌতূহল তো রয়েছে ।
গতকাল এদিকে আসলাম তখন তো আম্মু কিছু বলল না । তাহলে আজ আবার কেন মানা করল ?
কিছুদুর যেতেই বুঝলাম কারনটা । গলির একদম শেষ মাথায় মেয়ে দুটিকে দেখলাম সাইকেল চালাচ্ছে ।
আমি মেয়ে দুটিকে খুব ভাল করে চিনি । বড় লোক বাপের মেয়ে । টুইনস । বর্ণা আর স্বর্ণা । চরম ফাজিল কিসিমের । আমরা তো মাঝে সাঝে ইভটিজিং করি আর এই মেয়েদুটো করে এডাম টিজিং ।
আর ওদের বাপও মাশাল্লাহ । বিখ্যাত ক্রিমিনাল । এমন কোন আকামের ব্যবসা নাই যে সে করে না ।
গলির শেষ মাথায় এদের বিশাল বাড়ি রয়েছে । আম্মু এদের ভাল করেই চিনে । এদের বাপকেও ভাল করে চিনে । তাই এদিকে আসতে মানা করেছে ।
আমি আর একটু এগিয়ে গেলাম । ফাজিল কিসিমের মেয়ে হলে কি হবে বর্ণা আর স্বর্ণার চেহারা আসলেই খুব সুন্দর । সুন্দর মেয়ে কার না ভাল লাগে ?
আমি ঠিক করলাম ওদের ঠিক সামনে থেকে একটা চক্কর মেরে আসবো । মেয়ে দুটো কখন কি করে বসে কে জানে ।
আমি একটু দুরে গিয়ে আবার ঘুরতে যাবো ঠিক তখন দুইবোন আমার দিকে দ্রুত এগিয়ে এল আমি ঠিক মত সাইকেল ঘুরাতেও পারলাম না সরাসরি আমার সাইকেলের সামনের চাকার সাথে ধাক্কা মেরে দিল ।
-সরি, শামস ভাইয়া ! 

দুই বোন একসাথে বলে উঠল । তারপর কি হাসি । আমি কোন মতে পড়তে পড়তে নিজেকে বাঁচালাম । এই শক্ত পিচের উপর যদি পড়তাম তাহলে আমার খবরই ছিল ।
আচ্ছা ফাছিল মেয়ে তো !
আম্মু ঠিকই বলেছিল । এখানে আসাটাই উচিত্‍ হয় নি । আমি কিছু না বলেই সাইকেল ঘুরাতে লাগলাম । পিছনে তখন দুইবোন হেসেই চলেছে । একটু মেজাজ খারাপ হল । এই রকম ভাবে মেয়ে দুটোর কাছে অপদস্ত হলাম ।
আবার কিছু বলতেও পারলাম না ।

পরদিন যখন সাইকেল চালাচ্ছিলাম ঠিক করলাম যে আবার ঐ দিকটাতে যাবো । কাল যেমন দুই টুইনস বোন আমার সাইকেলে ধাক্কা মেরেছে আজ আমি ধাক্কা মারবো । কাল আমি প্রস্তুত ছিলাম না কিন্তু আজ আমি প্রস্তুত আছি ।
একবার কেবল আসুক ।
কিন্তু আজকে গিয়ে কেবল একজন কে দেখতে পেলাম ।
স্বর্ণা ।
ওরা দুজন টুইনস হলেও ওদের চেহারার মধ্যে বেশ অমিল আছে । আর সবচেয়ে বড় অমিল হল ওদের চুলে । বর্ণার চুল ছোট করে কাটা আর স্বর্ণার চুল বেশ লম্বা । আমাকে দেখেই দেখলাম স্বর্ণা এদিকে এগিয়ে আসছে ।
আজও কি ধাক্কা মারবে নাকি ?
আসুক আজ ! মজা বুঝাবো !
আমার সামনে এসে স্বর্ণা বলল
-শামস ভাইয়া ভাল আছেন তো ?
-হুম আছি । 

বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০২)Nơi câu chuyện tồn tại. Hãy khám phá bây giờ