একটি ফেসবুক পোষ্ট & ঝড়ের পূর্ভাবাস !!

747 22 3
                                    

 সকাল থেকে অপেক্ষা করছি । যে কোন সময় ঝড় এসে পড়তে পারে । অবশ্য যে কাজ করেছি আমি ভেবেছিলাম এঞ্জেলিকা কাল রাতেই আমাকে ফোন করবে ।
কিন্তু করে নি ।
আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে ও আজ হাজির হবে । তারপর মোটামুটি ঝড় তুলে দেবে ।
নিউইয়ার্ক বাসী যেমন স্যান্ডির জন্য অপেক্ষা করছে আমি তেমন অপেক্ষা করছি সাইক্লোন এঞ্জেলিকার জন্য ।
আমোরে এঞ্জেলিকা ।
অবশ্য আমি ঠিক এখনো জানি না এঞ্জেলিকা ঠিক কি বেগে আমার উপর ঝাপিয়ে পড়বে । তবে সব রকম প্রস্তুতি মুলক ব্যবস্থা আমি নিয়েই রেখেছি । দেখা যাক !
ঘড়িতে যখন সাড়ে দশটা বাজে এঞ্জেলিকা অফিস রুমে এসে ঢুকলো ।
আমি প্রতিরোধ মুলক ব্যবস্থা আরো জোরদার করলাম । এঞ্জেলিকা খুব স্বাভাবিক ভাবে আমার সামনের চেয়ারটাতে এসে বসল ।
আমি প্রতিরোধ আরো জোরদার করলাম ।
প্রথম ধাক্কাট ঠিকমত প্রতিহত করতে পারলেই আমি যুদ্ধে জয়ী হব । এঞ্জেলিকা এখনও চুপ করেই বসে আসে ।
আসলে প্রবল ঝড়ের আগে যেমন একটা দমকা হাওয়া ছাড়ে আভাস দেয় যে বড় কোন কিছু আসছে এটা তারই লক্ষ্যন ।
আমি এঞ্জেলিকাকে বছর দুয়েক ধরে চিনি । খুব ভাল করেই ওর স্বভাব আমি চিনি । বড় রকমের ঝগড়া শুরু করার আগে ও এই নিরবতা ।
-এই সানিয়াত টা কে ?
এঞ্জেলিকার প্রথম কথা ।
আমি বিগলিত হাসি দিয়ে বললাম
-কোন সানিয়াত ?
এঞ্জেলিকার চোখ একটু ছোট হল ।
-সানিলা সানিয়াত । তোমার ফেসবুক ফ্রেন্ড ।
-আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড ? সিওর তুমি ?
-মোশাররফ ফাজলামী করবা না । তুমি খুব ভাল করে জানো আমি কি বলছি ।
-এই নামে তো ...
-মিস্টার মোশাররফ মিথ্যা কথা বলবা না ।
আমি বুঝতে পারছি এঞ্জেলিকা নিজের রাগটা চেপে রাখার চেষ্টা করছে কিন্তু খুব বেশিক্ষন রাখতে পারবে বলে মনে হয় না । আমাকে বলল
-ফেসবুক অন কর ।
-কি ?
-ফেসবুক অন কর ।
আমার ফেসবুক অনই ছিল ।
এঞ্জেলিকা আমাকে ওয়ালে দেখিয়ে বলল
-এটা কে ?
আমি এমন একটা ভাব করলাম যেন এই নাম আমি প্রথম দেখছি । এঞ্জেলিকা ভুরু কুচকে আমার দিকে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষন । তারপর বলল
-তুমি এটাকে চিনো না ? এমনি এমনি একশটা কমান্ট করলো মানুষ ? তারমধ্যে দেখছি তোমার নিজেরই তো তিরিশটা । কি লিখেছ এতো ? আর কোন মেয়ে তোমার ওয়ালে পোষ্ট করবে কেন ?
-আরে কত মেয়েই পোষ্ট করে ।
-শোন তোমার দেশি মেয়েদের মত আমাকে তুমি ভুগোল বোঝাতে পারবা না । তুমি এমন কি টম ক্রুজ না যে মেয়েরা তোমার পিছে পিছে আসবে । তোমার ওয়াল প্রেমের বানী লিখে ভরিয়ে ফেলবে । আমার হৃদর তোমার হাতে দোলে । আহা দোলে । ফাজিল মেয়েটা আবার লিখেছে দোলাও । তিনবার লিখেছে দোলাও ! আর তুমি দোলাচ্ছ ?
-দেখো যে কেউ লিখতে পারে ! আমি কি করবো ?
এঞ্জেলিকা আমার দিকে ঠান্ডা চোখে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষন । তারপর বলল
-তোমার ব্লগে এক ছোট ভাই আছে না কেমন ন্যাকা ন্যাকা গল্প লিখে । ঐ গল্প পড়ে নিজেকে ঐ গল্পের নায়ক ভাবতে শুরু করেছ ? শোন মিস্টার হুসেন মোহাম্মদ মোশাররফ, জীবনটা তোমার ঐ ব্লগারের লেখা ফাউল গল্পের মত না যে তুমি যা করবা আর মেযে গুলো সব মুখ বুজে সহ্য করে নিবে ? তা তুমি ভেবো না । আমার বাবাকে তুমি চেনা না ?
আমার খুব ইচ্ছা করছিল বলি যে কেন তুমি চেনো না ? কিন্তু এই কথা বললে এঞ্জেলিকা রাগে ফেটে পরবে । এমনিতেই বেশ রেগে গেছে ও ।
আমার মনে হল এবার সত্য কথাটা বলে দেওয়াই উচিত্‍ ।
এঞ্জেলিকার বাবার কানে যদি কথা যায় তাহলে ব্যাপারটা একটু ঘোলা হয়ে যাবে । ওর বাবা রোমের বিখ্যাত ল ইয়ার দের একজন । ফান না আবার গলায় ফাঁস হয়ে দাড়ায় ।
এঞ্জেলিকা উঠে দাড়াল ।
-আমোরে একটু শোন !
-তোমার সাথে আমার কোন কথা নাই । আমি আমার বাবার কাছে যাচ্ছি ।
-হেই বেবি ! একটু শোন । বেবি । আমোরে ! এঞ্জেলিকা শুনো ।
কিন্তু কে শুনে কার কথা ?
এঞ্জেলিকা আর দাড়ালই না ।
আমি পড়লাম মহা চিন্তায় । এই যে হুমকি দিয়ে গেল তাতে তো একট একটু চিন্তার বিষয় তো বটেই ।
সব দোষ ঐ ফাজিলটার । আমার আর এঞ্জেলিকার সব কিছু ঠিক মতই চলছিল । কিন্তু ঐ ব্যাটা অপু তানভীরের কথা শুনতে গিয়েই এই ঝামেলাটা সৃষ্টি হল ।
ব্যাটার সাথে একদিন ফেসবুকে চ্যাটিং করছিল । এঞ্জেলিকার কথা জানতোই সে । আমাকে বলল
-ভাই অপু কি আপনাকে সত্যি অনেক ভালবাসে ?
-হুম অনেক বাসে ।
একটু গর্ব করেই বলল । কথাটা আসলেই সত্য । আমোরে আসলেই আমাকে অনেক ভালবাসে । অপু বলল
-আর একটু ভালবাসা বাড়াইতে চান ?
-মানে ? কিভাবে ?
-শোনেন মেয়েরা সব কিছু সহ্য করে নেয় কিন্তু প্রেমের ক্ষেত্রে কম্পিটিটর একদম সহ্য করে না । যখন সে দেখবে যে অন্য কোন মেয়ে আপনার প্রতি ইন্টারেস্টেড তখন সে একটু ইনসিকিউর ফিল করবে । তখন আপনার প্রতি তার ভালবাসা আরো বেড়ে যাবে ।
-সত্যি নাকি ? এমন ন্যাকামো মেয়েরা করে নাকি ?
-আরে করে মানে হান্ড্রেড পার্সেন্ট করে ।
-তা আমি এমন মেয়ে আমি পাবো কোথায় ?
-আরে তৈরি করে ফেলেন ?
-কিভাবে তৈরি করবো ? এটা কি হালুয়া রুটি নাকি চাইলাম আর তৈরি করে ফেললাম ।
অপু এক গাদা হাসির ইমো পাঠালো ।
-দাড়ান ।
একটু খানি অপেক্ষা করতেই দেখলাম একটা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এসে হাজির । রিকোয়েস্ট ওপেন করে দেখলাম একটা মেয়ে ।
সানিলা সানিয়াত !
এটা আবার কে ?
চ্যাটিংয়ে আবার নক ।
-ভাই পেয়েছেন ?
-এটা কার রিকোয়েস্ট ?
-আরে ভাই একসেপ্ট করেন । তারপর দেখেন মজা ।
আমি রিকোয়েস্ট গ্রহন করলাম । সব চুপচাপই ছিল । গতকাল ঐ সানিয়াত আমার ওয়ালে একটা পোষ্ট করলো ।
আমার হৃদয় তোমার তোমার হাতে দোলে ।
পোষ্টটা মোটামুটি সবাই দেখেছে । আর সবাই এতো ইন্টারেস্টেড হয়ে গেল যে দেখতে দেখতে একশ এর উপর কমান্ট এসে হাজির ।
অপু ইনবক্সে মেসেজ দিয়ে জানালো যে ঝড় শুরু হয়ে গেছে আপু মনে । দেখবেন কাল সকালের ভিতরেই আপু এসে হাজির হবে । একটু রাগারাগি করবে কিন্তু শেষে দেখবেন কি বলে । একটু ঠিক মত সামলাতে পারলেই হল ।
আমি সেটার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম কিন্তু এঞ্জেলিকা যে কথা বলে গেল তাতে তো এখন আমার খবর হয়ে যাচ্ছে । এই মেয়ে যদি সত্যিই ওর বাবার কাছে যায় আমার তো খবর আছে ।

এঞ্জেলিকার বাবা রোমের একজন বিখ্যাত ল-ইয়ার । আমি লোকটাকে খুব ভাল করেই চিনি । লোকটা যে মানুষ কে কিভাবে বিপদে ফেলতে পারে তা খুব ভাল করেই জানি !
ইনফ্যাক্ট এঞ্জেলিকার সাথে পরিচয় হয়েছেই ওর বাবার মাধ্যমে । এঞ্জেলিকার বাবা ওলিন ডিনোমরিয়া আমাদের কম্পানির লিগ্যাল এডভাইজার । কম্পানির একটা বিষয় নিয়ে মিস্টার ওলিনের সাথে বেশ কয়েকবার সিটিং হয়েছে । কখনও অফিসে আবার কখনও ওনার বাসায় । এরকম একব সিটিংয়ে এঞ্জেলিকার সাথে পরিচয় আমার ।
লম্বা কালো চুল আর নীল চোখের দিকে আমি কিছুক্ষন কেবল তাকিয়েই ছিলাম ।
ও হাসতো । জল তরঙ্গের মত সেই হাসি আমাকে বিমোহিত করে রাখতো । একদিন এঞ্জেলিকাকে লাঞ্চে নিয়ে গেলাম । মেয়েটার দিকে ভাল করে তাকিয়ে থাকি । এঞ্জেলিকা হেসে বলল
-এমন করে তুমি তাকিয়ে থাক কেন ? আমি আগেও দেখেছি । তুমি বাবার সাথে কথা বলছ কিন্তু তাকিয়ে আছ আমার দিকে । কেন বল তো ?
আমি বাংলায় বললাম
-সখি তোমারে দেখিয়া চিন চিন করে বুকে বাজে সুখে ব্যাখা ।
-মানে ? তুমি কি বললে বুঝি নাই ।
আমার বাংলা বোঝাতে বেশ খানিকটা বেগ পেতে হল । বোঝানো শেষে হলে এঞ্জেলিকা বলল
-চিন চিন ব্যাথা মানে কি ? আর আমাকে দেখে চিন চিন হওয়ার কারন তো বুঝলাম না ।
আমি কেবল তাকিয়ে রই মেয়েটার দিকে । আস্তে আস্তে আমার সম্পর্ক ভাল হতে থাকে ।
বিশেষ করে ওর বাংলা কবিতার প্রতি একটা আকর্ষন তৈরি হয় । ওকে কবিতা শোনাতাম তারপর আপ্রাণ চেষ্টা করতাম তার অর্থ বোঝাতে । খুব চমত্‍কার কাটছিল দিন গুলো ।
কেন যে ব্যাটা ফাজিলটার কথা শুনতে গেলাম !!
এখন এঞ্জেলিকা যদি ফিমেল হ্যারেজমেন্ট অথবা সিটিং কেস করে দেয় , আমি পড়ে যাবো মহা বিপদে ।
জব যাবে তার উপর আবার ইটালীর ভিসা যাবে । আমাকে সোজা দেশে পাঠিয়ে দেবে ।
এই সব হয়েছে ঐ ব্যাটা ফাজিল অপু টার জন্য । ঐ ফাজিলটাকে যদি হাতের সামনে পেতাম থাপড়াতে দাত খুলে দিতাম ।
ব্যাটা ফাজিলের ফাজিল ।
ঐ দেখ ফাজিলের নাম নিয়েছি আর ফাজিলটা হাজির । ফেসবুকে নক করেছে ।
-ভাই কেমন আছেন !
-ভাল আছি ।
(একবার তোরে কাছে পাই তারপর বোঝাবো কত ভাল আছি !)
-কাম হইছে ভাই ?
-হুম ।
(খুব কাম হইছে !)
-আপুনি এসেছিল ।
-হুম এসেছিল ।
-কি বলেছে ? আমি যেমনটা বলেছি হয়েছে না ?
-খুব হয়েছে ।
মনে মনে বললাম একবার এদিক ওদিক কিছু হোক তারপর তোকে মজা বোঝাবো । দেশে গিয়ে তোকে খুজে বের মজা দেখাবো ।
ভুল ভাল গল্প লিখে মানুষকে বিভ্রান্ত করা তখন বের করবো ।

কয়েকবার ফোন দিতে গিয়েও ফোন দিলাম না । এঞ্জেলিকার মেজাজ এখন গরম আছে । এখন আমি প্রে করতে পারি যে ও যেন এই গরম মেজাজ নিয়ে ওর বাবার কাছে না যায় । গেলেই খবর আছে আছে ।

এঞ্জেলিকা আসলেই মিষ্টি একটা মেয়ে । ওকে ভাল লাগার প্রধান কারন ছিল বাঙালী মেয়েদের মত লম্বা কালো চুল । ইতালীর মেয়েরা সাধারনত এতো লম্বা চুল রাখে না তার উপর আবার কালো চুল । আর সাথে ছিল ওর নীল চোখ ।
আমি বুঝতে পারতাম এঞ্জেলিকা নিজেও এই বিষয়টা বেশ ভালই বুঝতে পারত । ওর চোখে তাই একটু প্রস্রয়ের হাসি আমি প্রায় দেখতাম । আর তাছাড়া আমাকে খুব একটা অপছন্দ করার মত খুব একটা কারনও নেই । আর একটা কারন অবশ্য ছিল ।
এঞ্জেলিকার পড়াশুনার বিষয় ছিল বিশ্ব ভাষা ও সাহিত্য । আমার বলা কবিতা আর বাংলা ভাষার প্রতিও ওর বেশ আগ্রহ ছিল । তাই আমাদের কাছে আসতে খুব বেশি সময় লাগে নি । সব কিছু ঠিকই ছিল কেবল ঐ ফাজিলটার কথা না শুনলেই হত ।

দিনটা বিষন্ন ভাবেই কাটলো । মনের ভিতর একটু সংঙ্কাও অবশ্য ছিল । ফেসবুকে ঢুকে সবার আগে ঐ সানিলা সানিয়াতকে আনফ্রেন্ড করলাম । অপু তানভীর কে অনফ্রেন্ড করতে গিয়ে করলাম না ।
যোগাযোগ রাখি ।
যদি যেমন তেমন কিছু হয় তাহলে ব্যাটাকে একটা ধোলাই দিতে হবে না ? সন্ধ্যার একটু আগে অফিস থেকে বের হলাম । কয়েক কদম এগিয়েছি এমন সময়ই ফোন বেজে উঠল ।
এঞ্জেলিকার ফোন ।
রাগ কি কমলো ?
নাকি ও ওর বাবার সাথে কি বলেছে সেটা বলতে আমাকে ফোন করেছে ? খোদা জানে !
আমি ফোন রিসিভ করলাম ।
-কোথায় যাও ?
কন্ঠস্বর শুনে একটু সংশয় কাটলো । রাগ মনে হয় কমলো একটু। বললাম
-অফিস থেকে বের হলাম । বাসায় যাবো ।
-দাড়াও ।
আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না ও দাড়াও বলতে কি বলতে চাইল । একটু পরেই পেছন থেকে কেউ আমার কাধে হাত রাখল । পেছনে ঘুরে দেখি এঞ্জেলিকা দাড়িয়ে ।
আমি বেশ অবাক হলাম ওকে দেখে । সকালবেলা যে রকম রাগত ভাব দেখেছিলাম এখন ততটাই নমনীও মনে হল । আর সব চেয়ে অবাক হলাম ওর পোষাক দেখে ।
সাদা আর নীল রংয়ের একটা সেলোয়ার কামিজ । এটা আমি ওকে কিনে দিয়েছিলাম ।

আমি তো ভয়েই ছিলাম কিন্তু এখন মনে হচ্ছে অপুর কথাই ঠিক ছিল । আমার মনে তখনও অবশ্য একটু সন্দেহ ছিল । কাল অপুকে যখন বললাম
-আচ্ছা তুমি যা বললে তার সবই ঠিক আছে । কিন্তু ইটালীও মেয়েরাও কি বাঙালী মেয়েদের মত ঐ রকম আচরন করবে ?
-আরে ভাই , মেয়ে ইটালীও হোক আর বাঙালী হোক সবাই এক রকম অচরন করবে ।
-তাই । না ? তুমি নিশ্চিত তো ?
-একদম ১০০ নিশ্চিত ।

মাঝ খান দিয়ে যে রকম হয়েছিল আমি তো ভয়ই পেয়েছিলাম । আমি এঞ্জেলিকার একটু কাছে গিয়ে ওর হাত ধরলাম ।
-আই এম সরি ।
-কেন সরি কেন ?
-ঐ যে সকালবেলা তোমার সাথে মিসবিহেব করলাম ।
-না না । ঠিক আছে । আমি কাজই এমন করেছি । কিন্তু বিশ্বাস কর আমার একদম দোষ ছিল না ।
-তাহলে ঐ মেয়ে তোমার ওয়ালে ঐ কথা কেন লিখল কেন ?
-আরে ওটা কোন মেয়ে না । অপু কে চিনো না ?
-কোন অপু ?
-ঐ যে ব্লগে লেখে ? তোমাকে যার গল্প পড়ে শোনাই ?
-হুম ।
-ঐ টা ওর ফেইক একাউন্ট । ও কেবল একটু মজা করেছে ।
এঞ্জেলিকা কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে রইল ।
-সত্যি বলছ তো ?
-একদম সত্যি ?
আমি একটু অবাকই হলাম । এঞ্জেলিকার চোখ দিয়ে টুপ করে একফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো ! আমার আর একটু কাছে এসে এঞ্জেলিকা বলল
-জানো কাল রাতে আমি একটুও ঘুমাতে পারি নি ! বারবার মনে হচ্ছিল যে আমার খুব প্রিয় কিছুতে অন্য কেউ ভাগ বসাচ্ছে ! এটা আমার কিছুতেই সহ্য হচ্ছিল না ।
ব্যাটা তো ঠিকই বলেছিল ! ভালবাসার প্রতিযোগি কেউ সহ্য করে না !
এঞ্জেলিকা আবার বলল
-এইজন্য সকাল বেলা ঐরকম ব্যবহার করলাম । প্লিজ কিছু মনে কর না !
-না না । ঠিক আছে । তোমার তো রাগার রাইট আছে !
এঞ্জেলিকা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তবে এই রকম কাজ আর কারবা না ! ঠিক আছে !

আমি আবার করি এই কাজ ! আমার দরকার নাই ভালবাসা বৃদ্ধি করার !!   

বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০২)Donde viven las historias. Descúbrelo ahora