মিন্টু রোডের মেয়েটি অথবা নিছক একটা গল্পের সূচনা

529 13 1
                                    

তারেক স্যারের পরীক্ষা শেষ করতে করতেই তিন টা বেজে গেল । এখন যদি বাসায় যাই তাহলে আজ আর টিউশনীতে যাওয়া হবে না !!
নাহ !! একটু ক্লান্তি অবশ্য লাগছে তবুও টিউশনীতে যেতেই হবে । গতদিন একবার যাই নি পরীক্ষার কারনে ! !! স্টুডেন্টের বাসায় গিয়ে একটু গড়িয়ে নিলেই চলবে । কিন্তু প্রধান সমস্যা হল খাওয়া নিয়ে !
সকাল থেকে খুব সমান্য কিছুই পেতে পরছে । আর এখন যদি কোন হোটেলে যেতে হয় তাহলে তো পকেট থেকে বেশ কিছু টাকা চলে যাবে ! এমনিতেও মাসের শেষের দিক । এই সময়ে টাকা পয়সার বড় টানাটানী চলে ।

শাহবাগে নেমে দেখি গাড়ীর বিশাল লাইন । আসার পথে দেখলাম কারা যেন রাস্তার একপাশে লাইন দিয়ে দাড়িয়ে রয়েছে ! তাদের কি দাবীদাওয়া আছে কে জানে !!!
মাঝে মাঝে আমার মনে হয় এমন করে যদি সকলেই তাদের দাবী গুলো নিয়ে রাস্তায় নেমে আসতো বড় মজার হত !!
যার যার গার্লফ্রন্ড নাই এমন কিছু লোক যদি প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে মানব বন্ধন করে তাহলে কেমন হবে ? এখন যেমন দাবি আদায়ের জন্য কেউ কেউ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায় এমন করে যদি এই ব্যাপারেও তার সাহায্য চাওয়া হয় তাহলে কেমন হয় !!
তাহলে সংবাদ পত্রের শিরোনাম টা কি হবে ?
আজ প্রেমিকা শুন্য কিছু মানুষের গ্রুপ প্রেস ক্লাবের সামনে দাড়িয়ে মানব বন্ধন করে ! তারা তাদের দাবি জানিয়ে প্রধান মন্ত্রীর বরাবর খোলা স্মারক লিপি পেশ করে ! এবং প্রধান মন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করে !!

নাহ এ রকম কিছু হলেও খুব বেশি অবাক হবার কিছু নাই !
হাটতে হাটতে রূপসীবাংলার সামনে চলে আসলাম । গাড়ি গুলোর সাড়ি তেমন ভাবেই দাড়িয়ে আছে ! আমি আপন মনে হাটতে লাগলাম । একটু যে ক্ষুদা অনুভব করছি না তা কিন্তু না,কিন্তু হাটতে ভাল লাগছে !! আসলে আমার এই রাস্তাটা সব সময়ই পছন্দের । আর একটু সামনে গেলেই মিন্টু রোড আসবে !! পুরো ঢাকা শহরের ভিতর আমি কেবল এই মিন্টু রোড দিয়ে গেলেই বড় শান্তি অনুভব করি !! এই খানকার ভাব সাবই আলাদা !!
প্রত্যেকটা বাড়ির সামনে বিশাল জায়গা !
ফুলের বাগান ! লন ! কত কিছু !!
অবশ্য হবেই না কেন ! এখানে যে সরকারের সব উচ্চ পদস্থ লোকে দের বাস !!
মাঝে হাটি আর বাড়ি গুলোর দিকে তাকাই । মনে হয় এখানে কি কোন দিন থাকতে পারবো ??
কে জানে ??

আমি মিন্টুরোড দিয়ে হাটতে থাকি ! ঘড়ির দিকে তাকানোর কোন দরকার নাই !! এখনও বেশ কিছুটা সময় আছে হাতে ! আজ বেশ কিছুটা সময় এখানে থাকা যাবে !!

মিন্টু রোডটা আমার কাছে মনে হয় ঢাকার সব থেকে পরিস্কার একটা রাস্তা ! সুন্দর রাস্তাও বটে । দুপাশে গাছের সারি ! গাছের ছায়ায় কেউ কেউ বসে থাকে ! বিশ্রাম নেয় ! আমি হাটতে থাকি !!
একটা সময়ে মনে হল আজকে একটু বসি ফুটপাতের ধারে । যখন বেইলি রোডের পাশদিয়ে যাই প্রায়ই দেখি জায়গায় জায়গায় জুটি বসে আছে । হাত ধরে গল্প করছে । তাদের কে দেখে মনে হয় যেন অন্য জগতে আছে ! ঐ কাহনে বসতে একটু অস্বস্তি লাগে বটে । কিন্তু এখানে বসাই যায় !
আর একটু বসাও দরকার । অনেক্ষন হেটেছি !! একটু বিশ্রাম নেওয়া দরকার বটে !!
আমি বসতে যাবে ঠিক তখনই মেয়েটাকে দেখতে পেলাম আমি ।
ফুল কুড়াচ্ছে ।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি প্রায় বিকেল এখন ! তবে সূর্যের তাপ এখনও কমে নাই । যদিও এখানে ছায়া আছে তবুও ফুল কুড়ালোর জন্য এই সময়টা ঠিক যায় না !
আর সব চেয়ে বড় কথা মেয়েটাকে দেখে বেশ ভাল ঘরের মনে হচ্ছে । এখান কার কোন বাসায় থাকে হয়তো !!
কিন্তু এই মেয়ে ফুল কুড়াবে কেন ?
আশ্চার্য !!

আমি আর একটু এগিয়ে গেলাম !! মেয়েটি আপন মনেই ফুল কুড়াচ্ছে । আমি যে দাড়িয়ে দাড়িয়ে এটা লক্ষ্য করে নি !
যখন স্কুলে পড়তাম প্রায় সকালে শিউলি ফুল কুড়াতে যেতাম । মেয়েটির ফুল কুড়ানো দেখে সেই কথা মনে পড়ে গেল !!
মেয়েটার সাথে কি একটু কথা বলবো ?
দেখি বলে কি হয় !
আমি বললাম
-এগুলো কি ফুল ?
আমার কথা শুনে মেয়েটি যেন একটু চমকালো !! আমার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষন !!
আমি আবার বললাম
-আসলে আপনার ফুল কুড়ানো দেখে অনেক পুরানো স্মৃতি মনে পড়ে গেল । আগে সকালবেলা আমরা প্রায়ই শিউলি ফুল কুড়াতে যেতাম দল বেঁধে !!
কিন্তু এই বিকেল বেলা কাউকে ফুল কুড়াতে দেখি নি কাউকে !!
মেয়েটা একটু যেন হাসলো ! কিন্তু সেই হাসিতে কিছুটা যেন বিষাদ মাখানো !! যেন আমার কথা শুনে মেুয়েটি একটু অস্বস্তিতে পড়েছে !!

মেয়েটার বয়স অনুমান করার চেষ্টা করলাম । আমার থেকে ছোটই হবে মনে হয় !! ১৮/১৯ এর বেশি হবে বলে মনে হয় না !! এই বয়সের একটা মেয়েকে এভাবে ফুল কুড়াতে দেখলে একটু তো অবাক হতেই হয় !! তাও আবার এই সময়ে !!
আমি বললাম
-আসলে আপনার এই ভাবে ফুল কুড়ালো দেখে ভাল লাগছিল । যান্তিক এই শহরে ফুল কুড়ানোর মত ছেলে মানুষী করার সময় কোথায় মানুষের কাছে !!
মেয়েটি হাসলো !! বেশ মায়াময় হাসি !! তবে সেই বিষাদটা লেগেই আছে !! মেয়েটির মনে কি কোন কষ্ট লুকিয়ে আছে ? কে জানে ??
মেয়েটি বলল
-এগুলো কুলকিল ফুল !
-কুলকিল ?? এই নামতো কোন দিন শুনি নাই !
আসলেই কুলকিল নামে যে কোন ফুল বা গাছ হতে পারে আমার জানাই ছিল না !
মেয়েটি আবার হাসলো ! বলল
-আসলে এটা আমাদের দেশের না !! আমি তো এই গাছটা এখানে দেখে বেশ অবাক হয়েছিলাম ! গতবার যখন হাওয়াই তে গিয়েছিলাম ওখানে দেখেছিলাম গাছটা !! আমাদের এই মিন্টু রোডে যে এই গাছ থাকতে পারে আমি ভাবতেই পারি নি !
আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে থাকি ! হঠাৎ লক্ষ্য করলাম যে মেয়েটার মনের ভিতর একটা আনন্দের ছোয়া !! প্রথমে মেয়েটার চেহারায় যেমনটা লজ্জা বা অস্বস্তি ছিল এখন সেটা হঠাৎ করেই যেন গায়েব হয়ে গেছে !
মেয়েটি আবার বলল
-একটা অদ্ভুদ ব্যাপার কি জানেন ? আমাদের দেশের সব ফুলগুলোই সাধারনত সকালের দিকে ফুটে কিন্তু এই ফুলটা কেবল বিকেল বেলার কিছু আগে ফোটে !! আর কিছু সময়ের মধ্যেই ঝরে পড়ে ।
-তাই নাকি ?
-হুম ! যদিও এদেশের আবাহাওয়ার সাথে খাপ খাওয়ানোর কথা না তবুও কিভাবে যে গাছটা বেঁচে আছে কে জানে ??
আমি হাসলাম !!
-এটা আমাদের এই শহরের একটা বৈশিষ্ট বলতে পারেন ! ঢাকায় যারাই আসে কিভাবে বেঁচে থাকতে হয় খুব সবার আগে সেটা শিখে নেয় !!
মেয়েটা আবার ফুল কুড়াতে থাকে । আমার কি মনে হল আমি নিজেও কয়েকটা ফুল কুড়ালাম !
মেয়েটা আমার কাজ দেখে হাসলো !! বলল
-আপনিও দেখছি বেশ ছেলে মানুষ !!
-হুম !! তাই তো দেখছি !!
-ফুলের ঘ্রাণ নিয়ে দেখেন ভাল লাগবে !
আমি কয়েকটা ফুল নাকের কাছে নিলাম । কেমন যেন একটা পরিচিত ঘ্রাণ ঠেকলো কিন্তু ঠিক বুঝতে পারলাম না কিসের !!
আমার মুখের দিকে তাকিয়ে মেয়েটি বলল
-কি চিনতে পারছেন না ?
-নাহ !! কিন্তু খুব পরিচিত মনে হচ্ছে !!
-ভাবতে থাকুন ! পেয়ে যাবেন !!
মেয়েটার হাত ভর্তি ফুল !!
মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আপন কি ফুল গুলো নিয়ে যাবেন !
-না ! আমি যদি এভাবে ফুল নিয়ে টিউশনীতে যাই আমার স্টুডেন্ট আমাকে পাগল বলবে !
-তাহলে ফুল গুলো আমাকে দিয়ে দিন !
মেয়েটি নিজের হাত এগিয়ে দিল ! আমি নিজের ফুল গুলো মেয়েটির হাতে দিয়ে দিলাম । কয়েকটা ফুল গড়িয়েও পড়লো !! আমি আবার তুলে দিলাম মেয়েটির হাতে !! কিন্তু মেয়েটির হাতে আর জায়গাই নাই !!
-একটু উপকার করবেন ?
-বলুন !!
-আপনি একটু হাতে করে নিয়ে আসুন না ফুল গুলো ! এই যে সামনের বাংলোটাতেই থাকি ! আসবেন ?
-কোন সমস্যা নাই !
আমি আরো কিছু ফুল নিয়ে মেয়েটিস সাথে হাটা দিলাম । গেটের কাছে এক পুলিশ পাহারায় ছিল । আমার দিকে কেমন করে যেন তাকালো ! কিন্তু মেয়েটি সাথে থাকায় কিছু বলতে পারলো না !!
মেয়েটি আমাকে সোজাসুজি বাংলোর ভিতরেই নিয়ে গেল !
প্রথমে একটু অবাকই হয়েছিলাম । আমি একটা অপরিচিত মানুষ !এই ভাবে কাউকে বাড়ির ভিতর ঢুকতে দেওয়া নিশ্চই মেয়েটার ঠিক হচ্ছে না । তারপর মনে হল মেয়েটা একটু ছেলে মানুষ টাইপের ! না হলে এই দুপুর বেলা কেউ ফুল কুড়ায় !
আর খুব বেশি ভয়ের কারন নেই অবশ্য !!
এখানকার সিকিউরিটি ব্যবস্থা খুব ভাল !! মেয়েটার বাবা নিশ্চই পুলিশের বড় কেউ !! আর মেয়েটাও নিশ্চই এই কথা খুব ভাল করেই জানে যে তার ক্ষতি সহজে কেউ করতে পারবে না !!
মেয়েটা আমাকে ড্রয়িং রুমে বসিয়ে ভিতরে চলে গেল !!
আরে আশ্চর্য এভাবে বসিয়ে রাখার মানে কি ? ফুল গুলো নিলেই আমি চলে যাই !
মেয়েটি আসলো আরো কিছু সময় পরে ! হাতে একটা ছোট্ট ঝুড়ি ! আমার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলল
-দিন ফুল গুলো এর ভিতর দিয়ে দেন !
আমি আমার হাতের ফুলগুলো ছোট্ট ঝুড়ির ভিতর দিয়ে দিলাম । এবার আমার যাওয়া পালা !!
আমি উঠতে যাবে এমন সময় মেয়েটি বলল
-ঐ ডান দিকে বাধরুম !! হাত মুখ ধুয়ে আসুন ! টেবিলে খাবার দেওয়া হচ্ছে !!
-মানে ??
মেয়েটি হেসে বলল
-আপনার কি মনে হয় কেবল ফুল নিয়ে আসার জন্যই আপনাকে আমি বাসায় নিয়ে এসেছি । আপনার চেহারায় বলে দিচ্ছে যে আপনার খাওয়া হয় নি !! এখন যান !! আমার নিজেরও খুব খিদে লেগেছে !!
আমি মেয়েটার কথা কিছুই বুঝতে পারছিলাম না !
কেমন একটা রহস্যময় লাগছিল !!
হাত মুখ ধুয়ে যখন টেবিলে বসলাম তখন খাবার দেওয়া হয়ে গেছে !
মেয়েটি আগে থেকেই সেখানে বসে আছে । আমাকে বলল
-বসুন !!
আয়োজন বেশ ভালই ।কিন্তু আমার কেন জানি খুবই অস্বস্তি লাগছিল !!
মেয়েটি বলল
-শুরু করুন !!
-আসলে !! আমি কিছুই বুঝতে পারছি না !!
-খেতে খেতে কথা বলি !
আমি নিজেই প্লেট ভাত তুলে নিলাম ! এখনও ঠিক মত কিছু বুঝতে পারছি না !!
কয়েক নলা মুখ নিয়েছি মেয়েটি হঠাৎ করেই বলল
-আজ আমার ছোট ভাইটার জন্মদিন !!
-তাই নাকি ! কোথায় সে ??
আমার কথা শুনে মেয়েটার মুখ যেন আরো একটু মলিন হয়ে গেল । মেয়েটার চোখে যেন পানিও দেখতে পেলাম কিছুক্ষনের জন্য ! কিন্তু মেয়েটি নিজেকে সামলে নিল মুহূর্তের মধ্যেই !! বলল
-নেই ! মারা গেছে !!
-সরি !
-মারা যায় নি ! আমি তাকে মেরে ফেলেছি !!
আমার মনে হল আমি ঠিক শুনেছিতো ?? আমি কোন মত বললাম
-মানে ??
এবার দেখলাম মেয়েটার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো ! মেয়েটি বলল
-আমার মা মনে করে যে আমি ইমন কে মেরে ফেলেছি !
-ইমন ?
-আমার ভাইয়ের নাম !!
এই কথাটা বলেই মেয়েটা কিছুটা সময় চুপ করে রইলো ! আমি মেয়েটিকে কিছুটা সময় দিলাম সামলনোর জন্য !! কিন্তু মনের ভিতর ভিতর খুব কৌতুহল হচ্ছে মেয়েটার কি বলল শোনার জন্য !!
নিজের ভাইকে মেরে ফেলেছি এই কথাটার মানে কি ??
মেয়েটি বলল
-ইমন মারা যাওয়ার পর আমার মা কেমন যেন হয়ে যায় !! আমাকে একদম সহ্য করতেই পারে না ! আজকে সকাল থেকে আম্মু দরজা খুলে নি ! বাবাও অফিসের কাজে ব্যস্ত ! এদিকে আসবেও না হয়তো !! আমি পড়ে গেছি একা ! চাকর বাকরের সাথে আর কত কথা বলা যায় বলুন ? তাই রাস্তায় হেটে বেড়াচ্ছিলাম !! কেন জানি ফুল কুড়াতে ইচ্ছা হল !
আমি চুপ করেই শুনছি !! আসলে আমি এই রকম পরিবেশের সাথে ঠিক নিজেকে মেলাতে পারছিলাম না !!
মেয়েটি আবার বলল
-কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করছিল খুব ! তাই আপনাকে নিয়ে এলাম !! জানি এটা ছেলেমানুষী তবুও !!
মেয়েটি চোখ মুছলো !!
-আরে আপনি খাচ্ছেন না কেন? তরকারী ভাল হয় নি ! দেখুন আমি কিন্তু রান্না করি নি !! আমাকে কিন্তু দোষ দিতে পারবেন না !
-না ঠিক আছে !! রান্না ভাল হয়েছে !!

মেয়েটি আরো অনেক কথা বলল ! মরুভুমিতে বহুদিন পরে বৃষ্টি হলে বালি যেমন ভাবে পানিটাকে চেনে নেয় মেয়েটি চোখে মুখেও তেমনই একটা আভা ছিল !! মনে হচ্ছিল যেন কত দিন মেয়েটা কারো সাথে কথা বলেনি !!
মেয়েটি সব বলল কিন্তু ইমন কিভাবে মারা গেল সেটা বলল না !
যখন বাসা থেকে বের হলাম তখন প্রায় সন্ধ্যা !!
গেট দিয়ে বের হব এমন সময় মেয়েটা পেছন থেকে বলল
-একটা কথা জিজ্ঞেস করতে ভুলে গেছি !!
আমি ঘুরে দাড়ালাম !!
বললাম
-কি ?
-আপনার নামটাই তো জানা হয় নি !!

আমি নিজেই হেসে ফেললাম !! এতোক্ষন মেয়েটা আমার সাথে কত কথা বলল ! আমি নিজেও কত গুলো কথা বললাম কিন্তু নামটাই জিজ্ঞেস করলাম না !!
আশ্চার্য !! আসলে এমন ভাবে মেয়েটার কথা শুনছিলাম যে আর কিছু বলার কথা মনে ছিল না । কিন্তু মেয়েটার সেই কথাটার মানে আমি ঠিক বুঝতে পারি নি !!
ইমন কে আম মেরে ফেলেছি এর মানে টা কি ?
একবার ভাবলাম জিজ্ঞেস করি !! কিন্তু করলাম না !! মেয়েটা মনে কষ্ট পাবে !!
আমি বললাম
-আমার নাম অপু !!
-অপু !! সুন্দর নাম !!
আমি এবার অপেক্ষা করতে লাগলাম । মেয়েটা নিশ্চই এখন আর নিজের নাম বলবে !! কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে মেয়েটা বলল
-ভাল থাকবেন অপু সাহেব !! আপনার সাথে কথা বলে ভাল লাগলো !!
এই কথা বলেই মেয়েটা ঘরের ভিতর চলে গেল !!
আমি কেবল গেটের কাছে দাড়িয়ে রইলাম কিছুক্ষন !!
নাহ !! আর দাড়িয়ে থাকা যাবে না !! টিউশনীর দেরী হয়ে যাচ্ছে !! 

বুক পকেটের গল্পরা (ভলিউম ০২)Hikayelerin yaşadığı yer. Şimdi keşfedin