#এক_টুকরো_মেঘ
#মেহেরুন_নেছা_হিতৈষীপর্ব ১৯
♣
দরজায় অনেকক্ষণ ধরেই বেল বাজছে৷ আসাদুজ্জামান খন্দকার বিছানায় শুয়ে আছেন। দরজা খুলতে হলে তাকেই উঠতে হবে, কিন্তু তার একদমই উঠতে ইচ্ছে করছে না।
খুরশিদা বেগম দেশে চলে আসার পর সবকিছু হুট করে কেমন এলোমেলো হয়ে গেছে তার। এতগুলো বছর ধরে বাপ ছেলে মিলে একটু একটু করে প্ল্যান করে আজ এতদূর এসেছে।আসাদুজ্জামান খন্দকারের বাবা বেলাল খন্দকার খুব ছোটখাটো একজন ব্যাবসায়ী ছিলেন। কিন্তু প্রচন্ড ধূর্ত স্বভাবের হওয়ায় খুব দ্রুত মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফার চোখে পরে গেলেন। গোলাম মোস্তফা এবং তার বউ খুরশিদা বেগম মিলে তখন ব্যাবসায়ীদের উপরে রাজ করে বেড়াচ্ছিলো। লোভী এবং ধূর্ত বেলাল খন্দকার বেশ বড়সড় প্ল্যান করলেন। প্রথম থেকেই চাইতেন ছেলে আসাদকে গোলাম মোস্তফার একমাত্র মেয়ে রেবেকার সাথে বিয়ে দিতে৷ কথাবার্তাও এগোচ্ছিলো বেশ ভালোই। মিল দিয়ে চলায় ওস্তাদ হওয়াতে খুব দ্রুত বেলাল খন্দকার গোলাম মোস্তফার বিজনেস পার্টনার হয়ে গেলেন। গোলাম মোস্তফা মানুষটাও খুব চালাক স্বভাবের হলেও তার স্ত্রী খুরশিদা বেগমের চোখে ধুলো দিয়ে কিছু করা ছিলো প্রায় অসম্ভব। তাই বেলাল খন্দকার সব সময় খুরশিদা বেগমকে এড়িয়ে গোলাম মোস্তফার সাথে কাজ করে নিজের প্ল্যান মোতাবেক এগোচ্ছিলেন। এর মাঝেই রেবেকা তার বাসার এক শিক্ষকের প্রেমে পরে, পালিয়ে গিয়ে সবটা এলোমেলো করে দিলেন৷ বেলাল খন্দকার ছেলে আসাদের সাথে মিলে নতুন করে প্ল্যান করলেন। রেবেকাকে তার স্বামী মাহেদুলের কাছ থেকে সড়িয়ে আনলেন। নিজের ছেলের সাথে বিয়ে দেওয়ালেন। ট্রিকস করে খুরশিদা বেগম এবং তার স্বামী গোলাম মোস্তফাকে দেশের বাইরেও পাঠিয়ে দিলেন। ধীরে ধীরে রেবেকাকে সুস্থ করার বদলে আরো বেশি ডোজের ড্রাগ দিতে শুরু করলেন এবং ছেলে আসাদকে দিয়ে রেবেকার কাছে মেয়ে আড়ালের নামে উল্টোপাল্টা লাগাতে থাকলেন। সবকিছু একদম ঠিকঠাকই চলছিলো। আসাদও বাবার কথামতো সবটা হাতের মুঠোয় এনে ফেলেছিলো৷ এর মধ্যেই আড়াল মায়ের মতই এক ছেলের প্রেমে পরলো। আসাদ প্রথমে ভেবেছিলো বিয়ে দিয়ে মেয়েটাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলেই সব ঝামেলা শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানলো এই শিহাব নামের ছেলেটি নাকি মাহেদুলের ভাতিজা। আর তখনই উকিলের থেকে জানলো এই বাড়িটা নাকি খুরশিদা বেগম আড়ালের নামে করে গেছে।
মুহূর্তের মধ্যে আসাদ দিশেহারা হয়ে পরলো। বাবা বেলাল খন্দকারের সাহায্য নিয়ে প্ল্যান করে আড়ালকে বাড়িতে আটকে শিহাবের পরিবারকে অত্যাচার করে দূরে সড়িয়ে দিলো।
ঠিক করলো বিজনেস পার্টনার ইমরান মাহমুদের ছেলে আবিরের সাথে আড়ালের বিয়ে নামক খেলাটা খেলে নিজের বিজনেসটা আরো খানিকটা বাড়িয়ে নেবেন। সব কিছুই ঠিক চলছিলো কিন্তু এর মাঝেই খুরশিদা বেগম তল্পিতল্পা নিয়ে দেশে ফিরে সবটা এলোমেলো করে দিলেন।
YOU ARE READING
এক টুকরো মেঘ (Completed✔)
Romanceকয়েকটি জীবনের চড়াই-উতরাই, হাসি কান্না, সুখ দুঃখের কাহিনী নিয়েই লেখা #এক_টুকরো_মেঘ