#এক_টুকরো_মেঘ
#মেহেরুন_নেছা_হিতৈষীপর্ব ১১
♣
আড়ালের জ্ঞান ফিরলো দুদিন পর৷ জ্ঞান ফিরতেই আস্তেধীরে নিজের হাত-পা নাড়াতে চাইলে আড়াল বুঝতে পারলো তার সারা শরীর ব্যান্ডেজ করা৷ বেশ দুর্বল লাগছে এবং মাথাটাও খানিকটা ঝিমঝিম করছে। কোনো রকমে শক্তি দিতে চোখজোড়া খুলে আশেপাশে তাকালো সে৷ বুঝলো সে কোনো হাসপাতালে আছে৷ এদিক ওদিক তাকিয়ে একটু উঠে বসতে যাবে ওমনি কেউ একজন তাকে ধরে ফেললো।
' নানু! তুমি!'
চোখের সামনে এতগুলো বছর পর নিজের এত কাছে খুরশিদা বেগমকে দেখে আড়াল চমকে উঠলো। চোখজোড়া ভিজে উঠেছে দুজনেরই। কিন্তু আড়ালের মনে হতে লাগলো সে এখনো ঘোরের মাঝে রয়েছে আর নানুকে কল্পনা করছে৷।
চোখ বন্ধ করে শব্দ করে আড়াল বিরবির করতে শুরু করলো, " এটা নানু হতেই পারে না। নানু কোথেকে আসবে আড়াল! ধুর তোর আবার মাথা খারাপ হয়ে গেছে৷ তুই এলোমেলো দেখছিস।"
এবার আড়াল শুনতে পেলো কেউ শব্দ করে হাসছে। আস্তে করে চোখ মেলে দেখলো খুরশিদা বেগম ওর দিকে তাকিয়ে হাসছেন।
" পাগলি মেয়ে একটা! তবে এবার যে সত্যিই চলে এসেছি আমি তোর কাছে। এই দেখ আমি!"
কথাটা বলেই নিজের নাতনিকে পরম মমতায় জড়িয়ে ধরলেন।
আড়ালের মনে হতে লাগলো সে বুঝি স্বপ্নই দেখছে৷ কী সুন্দর একটা স্বপ্ন। মনে মনে ভাবতে লাগলো, ইশ! স্বপ্নটা যদি কখনো শেষ না হতো।
হঠাৎই আড়াল কারো আওয়াজ পেলো।
নানুকে ছাড়িয়ে দরজায় তাকিয়ে দেখলো আবির দাঁড়িয়ে।
" ভেতরে আসতে পারি?"
দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আবির অনুমতি নেওয়ার ভঙ্গিতে দুজনের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো। আবিরের ভদ্রতাসূচক ব্যাবহার দেখে খুরশিদা বেগম খুশি হলেন। হাতের ইশারায় ভেতরে আসতে বলে বসতে বললেন।
আড়াল চোখ বড় বড় করে সবটা দেখে যাচ্ছে। যেনো এখনো ওর ঘোর কাটছে না। খুরশিদা বেগম নাতনীর অবস্থা বুঝতে পারলেন৷ এতগুলো বছর পর নানুকে কাছে পাওয়া তাও আগে থেকে কিছুই জানতো না কেউ। আর তার মধ্যে আড়ালের সাথে এমন একটা ঘটনা ঘটে গেলো।
হালকা পায়চারি করে তিনি আড়ালের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে শুরু করলেন,
" আবিরই তোকে ওইদিন হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করিয়েছে৷ ছেলেটা যদি ঠিক সময়ে না পৌঁছাতো না জানি কি ঘটে যেতো। ভাগ্যিস আবির আর সায়মা বুদ্ধি করে ওবাড়িতে গিয়েছিলো।"
আড়াল এবার আস্তে করে কিছু বলতে চাইলো৷ ঠোঁট নড়লেও তেমন শব্দ বের হলো না। আবির দ্রুত এগিয়ে আড়ালকে এক গ্লাস পানি দিলো।
" তুমি এখনো অনেক বেশিই দুর্বল। প্লিজ রেস্ট নাও। একটু পরেই ডাক্তার এসে তোমার চেকাপ করে যাবেন৷ মাত্র তোমার জ্ঞান ফিরেছে। তোমার রেস্টের দরকার আছে।"
আড়াল হাত বাড়িয়ে পানির গ্লাসটা নিতে যাবে কিন্তু তার হাত যেনো এগোচ্ছেই না৷ নিজের শরীরের দিকে তাকিয়ে হকচকিয়ে গেলো আড়াল। পুরো শরীর ব্যান্ডেজে মোড়া৷ হাতে স্যালাইনের নল দেওয়া। মাথায় ব্যান্ডেজ। আড়ালের অবস্থা বুঝে আবির নিজেই পানিটা আড়ালকে খাইলে দিলো।
এরপরই ডাক্তার এসে আড়ালকে একটু চেক করে কিছু ঔষধ চেঞ্জ করে দিয়ে গেলেন।
CITEȘTI
এক টুকরো মেঘ (Completed✔)
Dragosteকয়েকটি জীবনের চড়াই-উতরাই, হাসি কান্না, সুখ দুঃখের কাহিনী নিয়েই লেখা #এক_টুকরো_মেঘ