#এক_টুকরো_মেঘ
#মেহেরুন_নেছা_হিতৈষীপর্ব ২৭
♣
শিহাবদের বাড়ি থেকে ঘুরে আসার দুদিন হয়ে গেছে। এর মাঝে রেবেকা চৌধুরী এবং আসাদুজ্জামান খন্দকারের ডিভোর্স হয়ে গেছে। রেবেকা চৌধুরী এখন তার মায়ের বাড়িতেই থাকছে। আগের থেকে তিনি এখন বেশ সুস্থ হলেও নিজের মেয়ের থেকে একটু দূরে দূরেই থাকেন। যেন অদ্ভুত এক সংকোচ বোধ তাকে আটকে রাখছে।
আড়ালও আগ বাড়িয়ে কিছু বলেনি। সে আপাতত নিজের জগতে একাই ঠিক আছে। ওই বাড়ি থেকে ঘুরে আসার পর থেকে আড়াল যেন আরো চুপসে গেছে। নিজের মনের সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে চলেছে সে।খুরশিদা বেগম এই বয়সে এসে নিচের চুলগুলো সামলাতে বেশ হিমশিম খান। মাঝেমধ্যে কেটে ফেলার মত চিন্তাভাবনা করলেও পরক্ষণেই সেই চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেন। আড়ালের নানু মানে মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা খুরশিদা বেগমের এই চুলগুলোর পাগল ছিলেন,সে অনেক যুগ আগের কথা।
খুশি আলতো হাতে খুরশিদা বেগমের মাথায় বিলি কেটে চুলে তেল লাগিয়ে দিচ্ছেন। আড়াল দরজার আড়াল থেকে মুগ্ধ হয়ে দৃশ্যটি দেখছে। এই বয়সেও নানুর এতবড় চুল দেখে রীতিমতো অবাক হয় আড়াল।
" কিরে সোনা! বাইরে কেনো? ভেতরে আয়!"
খুরশিদা বেগম নিজের ঘরে রাখা ড্রেসিং টেবিলের আয়নার নাতনিকে দরজার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ডাকলেন।
" নানু! "
" কিরে বোস এখানে।"
আড়ালকে ইতস্তত করতে দেখে খুকু দ্রুত খুরশিদা বেগমের চুলগুলোয় বিনুনি করে দিয়ে চলে যাচ্ছিলো। ওমনি আড়াল খুকুকে ডেকে বসলো।
" মা কে একটু পাঠিয়ে দিও তো।"
মাথা নেড়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো খুকু এবং পায় সঙ্গে সঙ্গেই রেবেকা চৌধুরী ঘরে ঢুকলেন।
খুরশিদা বেগম উঠে দাঁড়িয়ে মেয়েকে বসার জায়গা করে দিলেন। রেবেকা চৌধুরী বসতেই আড়াল কথা শুরু করলো,
" আমার এখনো কিছু কাজ বাকি আছে নানু। "
খুরশিদা বেগম যেন একটু চমকে উঠলেন। রেবেকা চৌধুরী নিজের মেয়ের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।
আড়াল ধীর পায়ে মায়ের হাটুর কাছে গিয়ে বসলো।
" মা!"
রেবেকা চৌধুরী লক্ষ্য করলেন তার মেয়ের চোখে পানি ছলছল করছে। বহুবার নিজের মায়ের মুখে শুনলেও মন থেকে সে মানতে নারাজ এই তার মেয়ে। তার মেয়ে এখনো বেঁচে।
আড়াল মায়ের চোখের ভাষা যেন পড়তে পারলো।
" মা! আমি তোমার অবস্থাটা বুঝি। ওই সময়ে তুমি যে মানসিক কষ্টটা পেয়েছো, তার পরে এই মুহূর্তে সব স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার পর আমাকে মেনে নিতে তোমার কষ্ট হবে এটাই স্বাভাবিক। আমার একটা কথা রাখবে?"
রেবেকা চৌধুরী মনে কেমন একটা টান অনুভব করলেন। ভাসা ভাসা কন্ঠে উত্তর দিলেন,
" কী কথা?"
" তোমাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাবো। আজ! যাবে? যেখানে গেলে তুমি হয়ত তোমার সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে। যাবে মা?"
আড়ালের মুখে মা ডাক শুনে রেবেকা চৌধুরীর বুকটা যেন কেঁপে উঠলো। নিজেকে সামলে নিয়ে খুব সংক্ষেপে উত্তর দিলেন, " যাবো।"
VOCÊ ESTÁ LENDO
এক টুকরো মেঘ (Completed✔)
Romanceকয়েকটি জীবনের চড়াই-উতরাই, হাসি কান্না, সুখ দুঃখের কাহিনী নিয়েই লেখা #এক_টুকরো_মেঘ