#26

96 8 3
                                    

#এক_টুকরো_মেঘ
#মেহেরুন_নেছা_হিতৈষী

পর্ব ২৬

'' তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি 
শত রূপে শত বার 
জনমে জনমে, যুগে যুগে অনিবার। 
চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয় 
গাঁথিয়াছে গীতহার, 
কত রূপ ধরে পরেছ গলায়, 
নিয়েছ সে উপহার 
জনমে জনমে, যুগে যুগে অনিবার। 
 
যত শুনি সেই অতীত কাহিনী, 
প্রাচীন প্রেমের ব্যথা, 
অতি পুরাতন বিরহমিলনকথা, 
অসীম অতীতে চাহিতে চাহিতে 
দেখা দেয় অবশেষে 
কালের তিমিররজনী ভেদিয়া 
তোমারি মুরতি এসে, 
চিরস্মৃতিময়ী ধ্রুবতারকার বেশে।  ''
  আড়াল আবির এবং খুরশিদা বেগম বসে আছেন বসার ঘরে। ওদের বসিয়ে রেখে মাহবুবুল আলম খান একটু বাইরে গেছেন। হঠাৎ একটু কাজ পড়ে যাওয়ায় তিনি যথেষ্ট লজ্জিত। কিন্তু সকলের অভয় পেয়ে তিনি একটু বেরিয়েছেন।

বসার ঘর থেকে স্পষ্ট আড়াল শুনতে পেলো ভেতরের ঘর থেকে কেউ একজন আবৃত্তি করছে। গলাটা এবং কবিতাটা তার খুবই চেনা। বসা থেকে উঠে একপা দুপা করে ভেতরের ঘরের দিকে এগোলো আড়াল।
রুইকাইয়া আধোঘুমে মাথার কাছে নিজের ফোনে রেকর্ড শুনছে। রেকর্ডে চলছে শিহাবের গলায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা অনন্ত প্রেম।
আড়াল যেন মনের অজান্তেই নিজে নিজেই আবৃত্তি করতে শুরু করলো,
"   আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি 
যুগল প্রেমের স্রোতে 
অনাদিকালের হৃদয়-উৎস হতে। 
আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা 
কোটি প্রেমিকের মাঝে 
বিরহবিধুর নয়নসলিলে, 
মিলনমধুর লাজে— 
পুরাতন প্রেম নিত্যনূতন সাজে।  "
" আরে আপনি? কখন এলেন? কি অদ্ভুত!  আমি সত্যি দেখছি তো! হায় আল্লাহ! বসুন না। দাঁড়িয়ে কেনো।"
আড়ালের হঠাৎ আবৃত্তিতে রুকাইয়া উঠে পরেছে এবং আড়ালকে এভাবে তার ঘরে দেখে সে ভীষণ অবাক একই সাথে ভীষণ খুশি।
" না না ঠিক আছে। ব্যাস্ত হচ্ছো কেনো?"
" আপনি সত্যিই এসেছেন? কখন এলেন? বাবা তো আমায় ডাকলো না।"
" আংকেল তো আমাদের বসিয়ে একটু বাইরে গেলেন।"
হঠাৎই দরজায় শব্দ পেতেই দুজনে দেখলো মাহবুবুল আলম খান বাসায় এসে পরেছেন।
" ওইত্ত বাবা এসে গেছে। "
রুকাইয়া ঝটপট শ্বশুরের হাতে থাকা খাবারের প্যাকেট নিয়ে রান্নাঘরের দিকে ছুটলো। নিখুঁত কাজ। গুছিয়ে সকলের জন্য বসার ঘরে নাস্তা নিয়ে এলো।
" আসলে রুকাইয়া একটু কদিন ধরেই অসুস্থ। বেচারির শরীরটা ভালো যাচ্ছে না।"
শ্বশুরের মুখে নিজের অসুস্থতার কথা শুনেই রুকাইয়া একটু মুখ ভার করলো।
" বাবা আমার কিচ্ছু হয়নি। আপনি চিন্তা করবেন না তো।"

এক টুকরো মেঘ (Completed✔)Where stories live. Discover now