#25

86 10 0
                                    

#এক_টুকরো_মেঘ
#মেহেরুন_নেছা_হিতৈষী

পর্ব ২৫

দেখতে দেখতেই সাত দিন কেটে গেছে শিহাব মারা যাবার। আড়াল সেদিন বাসায় ফেরার পর থেকে কারো সাথে কোনো রকম কথাবার্তা বলছে না। ঠিকমতো খাবারও খাচ্ছে না। শুধু এক মনে ঘন্টার পর ঘন্টা চুপচাপ বসে থাকে। আড়াল শিহাবকে কথা দিয়েছিলো সে কাঁদবে না। সে সত্যিই এতটুকুও কাঁদেনি। শুধু ভেতর থেকে একদম দুমড়ে মুচড়ে শেষ হয়ে গেছে।

খুরশিদা বেগম নাতনীর এমন অবস্থায় বেশ ভয়ে ভয়ে আছেন। না কারো সাথে নিজের দুঃখটা শেয়ার করছে, না একটু কেঁদে মনটা হালকা করছে। খুরশিদা বেগম চোখের সামনে নাতনীকে এভাবে শেষ হয়ে যেতে দেখতে পারছিলেন না। গত সাতদিন ধরে মেয়েটা কারো সাথে কথা বলছে না, এমনকি নিজের ফোনটাও বন্ধ করে রেখেছে।
নিজের মনে মনে বেশ কষ্ট পাচ্ছিলেন খুরশিদা বেগম। দরজা ঠেলে নাতনীর রুমে ঢুকতেই দেখলেন আড়াল বিছানায় আধশোয়া হয়ে বসে আছে।
" আসবো সোনা?"
" এসো।"
নানুর দিকে না তাকিয়ে বেশ স্বাভাবিক ভাবেই উত্তর দিলো আড়াল।
খুরশিদা বেগম আস্তে করে দরজাটা ঠেলে নাতনীর ঘরে ঢুকে বিছানায় বসলেন।
" তোর চোখমুখ এমন দেখাচ্ছে কেনো সোনা? সারা রাত ঘুমোসনি?"
" ঘুম আসেনা নানু। "
" একা একা জেগে থাকিস? আমাকে একটু ডাকলেও তো পারিস। দুজনে মিলে গল্প করা যায়।"
" তুমি থাকলে যে শারার আসবে না।"
খুরশিদা বেগম একটু চমকে উঠলেন।
" ভয় পেয়ো না। আমি ঠিক আছি। আমার একা একা শারারকে নিয়ে ভাবতেই ভালো লাগে।"
খুরশিদা বেগম কি বলবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। এমন সময় দরজার বাইরে থেকে খুশির ডাক শুনতে পেলো দুজনেই।
" নতুন সাহেব আসছেন। আমি কি তারে চইলা যাইতে বলবো?"
খুরশিদা বেগম ঝট করে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লেন। ঘুরের দেয়ালে টানানো বড় ঘড়িতে সময় দেখলেন। ৮.১৫ বাজে।
" এত সকালে আবির এলো? তুই থাক। আমি গিয়ে কথা বলি। তুই তো আর নামবিই না এখন।"
দরজা দিয়ে বের হতে যাবে ওমনি আড়াল নানুকে ডাক দিলো। খুরশিদা বেগম পেছনে ফিরতেই আড়াল তাঁর দিকে তাকালো,
" আবির ভাইয়াকে আমার রুমে নিয়ে আসো। আমার তার সাথে কিছু কথা আছে।"
নিজের কথাটুকু বলেই আড়াল আবার নিশ্চুপ হয়ে আগের মতন কি যেন ভাবতে শুরু করলো। খুরশিদা বেগমের কাছে নাতনীর এমন আচরণ একদমই অপরিচিত।

এক টুকরো মেঘ (Completed✔)Where stories live. Discover now