#প্রতিচ্ছবি ২
শেষ পর্ব
লেখা : নীলা মনি গোস্বামী
আহাদ দাঁড়িয়ে আছে আমাদের সামনে। ওর সাথে কিযেনো একটা অদ্ভূত ধরনের প্রানী দাঁড়িয়ে আছে।একটু পর পর ডানা ঝাপটাচ্ছে।
প্রানীটা কিম্ভূতকিমাকার।বিশাল সবুজরঙা দেহ।ঘাড় থেকে চারটে মাথা উঁকি দিচ্ছে।টিকটিকির মতো মাথার ওপর সিংহের মতো কেশর ঝুলছে।।সাপের মতো সূচালো জিহ্বা।কাঁধের ওপর লোমশ ডানা।মাছের মতো আঁষটে লেজটা সাপের মতো গড়াগড়ি খাচ্ছে মাটিতে। আর বেলুনের মতো বিশাল পেটটা ফুলে উঠছে একটু পর পর।তিনটে চোখ মেলে চেয়ে আছে আমাদের দিকে।আর ঘোত ঘোত করে কুকুরের মতো গোঙাচ্ছে।
আহাদ ছুটে এলো আমাদের কাছে।হাঁপাতে হাঁপাতে বললো, " আমি বার বার বলেছিলামেখানে বিপদ আছে।তোমরা কেউ শুনো নি আমার কথা।
চলো এবার জলদি উঠে পড়ো।পালাতে হবে।একটু পড়েই আবার এসে পড়বে ওটা।তখন আমরা সবাই আবার শক্তিহীন হয়ে যাবো।"" কে আসবে?" তোতলাতে তোতলাতে জিজ্ঞেস করলাম আমি।
-মারভা রুসালকা টুরবালান।প্রাগৌতিহাসিক যুগের প্রেত।মানুষের শক্তি শুষে নেয় ওটা।তারপর ধীরে ধীরে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলে।ওটা অমর।ওর সাথে লড়াই করার ক্ষমতা আমার নেই।জলদি এসে পড়ো।যেতে হবে আমাদের।বেশিক্ষন দমিয়ে রাখতে পারবো না ওটার অশুভ শক্তিকে।
লাফ দিয়ে উঠে পড়লাম আমি।লুসিফারের বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নিলাম।বাচ্চাটা এখনও সুস্থ স্বাভাবিক আছে।প্রানীটার ঘাড়ের ওপড় চড়ে বসলাম আমরা চারজন।সাঁই করে উপরে উঠে গেলো বিদঘুটে প্রানীটা।আঁকা বাঁকা ফাঁক ফোঁকড় দিয়ে বের হয়ে এলাম আমরা বাইরে।
বাইরে তখন গভীর রাত।অন্ধকারের বুক চিরে উুঁকিঝুকি মারছে ঝকঝকে চাঁদটা।আর তারচারপাশে চুমকির মতো চকচক করে অসংখ্য তারা।"উলফ মুন " পাশ থেকে ফিসফিস করে বলে উঠলো রাফি।
জানুয়ারী মাসের প্রথম চাঁদ।সেরাতে উৎসবে মেতে উঠে নেকড়ের পাল। হালকা নীলচে চাঁদটা জেগে উঠেছে আকাশের বুকে।টের পেলাম নিচে দাপাদাপি করে বেড়াচ্ছে একপাল নেকড়ে।উৎসব পালন করছে ওরা।আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে উৎসবের গন্ধ।
পরিশিষ্ট :
ভালোই আছি আমরা। নতুন করে সাজিয়েছি আমাদের পৃথিবীটাকে।খুঁজে খুঁজে বের করেছি পৃথিবীর বেঁচে থাকা মানুষগুলোকে।সে এক বিশাল রোমাঞ্চকর কাহিনী।অন্য একদিন বলবো আপনাদের।
রাফি আর আমার ছোট্ট দুটো যমজ বাবু হয়েছে।একটা ছেলে, আর একটা মেয়ে।সাগর পাড়ে ছোট্ট একটা কুটির বানিয়েছি আমরা। সেখানে বেশ আনন্দেই থাকি আমরা।প্রতিদিনই পিকনিক পিকনিক ভাব থাকে।
ইরারও বিয়ে হয়ে গেছে।সুখেই আছি সবাইকে নিয়ে। দোয়া করবেন আমাদের জন্য...।আর হ্যাাঁ, কাল আমাদের আকিনের বিয়ে।আপনারা সবাই সাদরে আমন্ত্রিত। গিফট নিয়ে সময়মতো চলে আসবেন, খুশি হবো অনেক।
আকিনকে চিনেছেন?? আকিন হলো লুসিফারের বাচ্চাটা।যাকে বাঁচিয়েছিলাম আমি।। আকিন ছেলেটা বড়ই সহজ - সরল নিস্পাপ।খামোখাই ভয় পেয়েছিলো সবাই তাকে নিয়ে।
আসলে ভালোমন্দ নিয়েই মানুষ।প্রতিটি মানুষেরই ভালো খারাপ দুটো দিক থাকে।কোন দিকটাকে সে গ্রহন করবে,ওটা তার ওপর নির্ভর করে।ছোটবেলা থেকেই আকিনকে আমরা পবিত্রতার শিক্ষা দিয়েছি। ভালো জিনিসটাই সে নিজের মধ্যে ধারন করেছে।লুসিফারের অভিশপ্ত সত্তাটা কখনএ নিজের মধ্যে জেগে উঠতে দেয়নি।যাই হোক আকিনের বিয়েতে কিন্তু অবশ্যই আসবেন আপনারা সবাই।না আসলে রাগ করবো অনেক।জলদি জলদি ঠিকানাটা লিখে দিচ্ছি।এখনই এসে পড়ুন সবাই।
সমাপ্ত.........!!
YOU ARE READING
প্রতিচ্ছবি ২
Paranormalএ গল্প ত্রপা, রাফি, লিসা আর ইরার।কিংবা দুটো নবজাতক বাচ্চার।এ গল্প জাদুর দুনিয়ার।সেই সঙ্গে পুরো পৃথিবীবাসীরও। বিচিত্র সব অভিজ্ঞতায় ভরপুর গল্প। ।। 🙊