ইশিকার দিনগুলো কাটছে বেশ ভালোভাবেই। ক্লাস নাইনে উঠার পর যেন ওর এদিক ওদিক তাকানোর সময়ই নেই। কোচিং থেকে স্কুল তারপর স্কুল থেকে আবার কোচিং তারপর পড়াশোনা সবমিলিয়ে ইশিকার যেন বেহাল অবস্থা।
ইশিকার প্রতিদিনকার রুটিন অনুযায়ী দিনগুলো চলে যাচ্ছে। বিকালবেলা কোচিং থাকায় খুব বেশি আর ছাদে ওঠা হয় না। শুধু শুক্রবার আর সোমবার কোচিং বন্ধ। তবে ইশিকা শুধু শুক্রবারেই ছাদে উঠে। মাঝে মাঝে রাস্তায় অভ্রর সাথে দেখা হয়। কখনো কখনো পিয়া, বর্ষা আর ইশিকার মাঝে অভ্রকে নিয়ে কথা হয়। অনেক হাসি ঠাট্টা হয় অভ্রকে নিয়ে। এসব কথা শুনে ইশিকার মনে হয় যেন ওদেরকে বলাই ভুল হয়েছে। ওদের দুইজনের এই হাসি ঠাট্টা শুনে একদিকে ইশিকার যেমন হাসি পায় তেমন অন্যদিকে ইশিকা ভয়ে কুকরে যায়। আদৌ কি শেষটা ভালো হবে? তবে সেই সাথে অন্য একটা কথাও মনে হয় ইশিকার। তার আঙ্কেল যে তাকে ভীষণ ভালোবাসে। একদম নিজের মেয়ের মতো। একদিন হয়তো ওদের কথা ঠিকও হয়ে যেতে পারে। ওদের বাবারা আবার এক হয়ে যাবে।
.....................
আজ ৩১ ডিসেম্বর। প্রতিবছরই এই দিনে ইশিকাদের বাড়িতে বাজি পোড়ানো হয়। তবে এবছর ওর আপন কাজিনদের কেউই আসবে না। সবাই ব্যস্ত। ইশিকার ইনভাইটেশন এসেছে পাশের বাড়ির থেকে। ওটা অবশ্য পাশের বাড়ি না বলে ইশিকার চাচার বাড়ি বলা যায়। ইশিকার বাবা আর সেই চাচা আপন খালাতো ভাই। তবে তার চাচাতো ভাইবোনদের সাথে ইশিকার মোটামুটি বেশ ভালোই ভাব।
শুধুমাত্র ছোটদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে। রাতের ডিনার ওখানেই করবে সবাই। বাসার ছাদে আয়োজন করা হয়েছে পার্টিটার।
ইশিকা বাসার ছাদের ঢুকতেই নিজের অজান্তেই বলে উঠল,
"ওয়াও, কি সুন্দর!"
ইশিকাকে ওর চাচাতো বোন রিক্তি ছুটে এলো,
"ইশিকা, তুই এসেছিস অবশেষে। তোকে বলেছিলাম না তাড়াতাড়ি আসতে। এতো দেরি করলি কেন?"
"আজকে কোচিং থেকে এত্তগুলা হোমওয়ার্ক দিয়েছিল। সেগুলো কমপ্লিট করতেই তো এত সময় লাগল।"
YOU ARE READING
ভালোবাসার অপরাধী (সম্পুর্ণ)
Romanceছাদের রেলিং এর সামনে দাঁড়িয়ে আছে ইশিকা। অগ্রহায়ণের বাতাস অনুভব করছে। হঠাৎ চোখ পড়ল সামনের ছাদের দিকে। মনের অনুভূতিটা যেন নড়াচড়া দিয়ে উঠল। চোখটা বন্ধ করে জোরে নিঃস্বাস নিল। এক দৌড়ে ছুটে এল নিজের ঘরে।