৩৩তম পর্ব

156 17 3
                                    

ইশিকার মা বাবা সবে মাত্র বের হলো অয়নদের বাড়ি থেকে। ইশিকা তখনও বিছানার বালিশে পিঠ ঠেস দিয়ে বিছানার উপর বসে আছে। কিছুই ভালো লাগছে না তার। এই বিয়েটাকে এখন কেনো জানি না বোঝা মনে হচ্ছে ইশিকার। কেউ যেন কয়েক কেজি ভেজা তুলা ইশিকার কাধের উপর চাপিয়ে দিয়ে গেছে। এই তুলাগুলোকে না পারছে সে টেনে নিতে না পারছে সে নামিয়ে রাখতে। আর না পারছে তুলা কাঁধে নিয়ে এক জায়গায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে। কেনো যে সেদিন মুখ ফসকে বলে ফেলেছিল যে সে বিয়ে করতে চায়।

অয়ন ঘরে ঢুকে দেখলো ইশিকা বসে আছে। ওর দৃষ্টি দক্ষিণের জানালার দিকে। অয়ন ইশিকার পাশে গিয়ে বসলো। অয়ন বলল,

"তোমার না ইন্টার্নি করার কথা ছিল? ইন্টার্নি না করলে তো ডাক্তারি করতে পারবে না। তখন কি হবে বলো তো? ভেবেছিলাম আমার বউ ডাক্তার যখন তখন আর কষ্ট করে ডাক্তার দেখিয়ে টাকা খরচ করতে হবে না। ফ্রি ফ্রিতে ট্রিটমেন্ট পাবো।"

ইশিকা অয়নের কথা শুনে ওর দিকে ঘুরে তাকালো। ইশিকা ঘুরে তাকিয়েছে দেখে অয়ন আবার বলতে শুরু করলো,

"ইন্টার্নি জয়েন করো। কারোর জন্য না হোক নিজের জন্য। তাও যদি না হয় তাহলে বলবো...."

এই পর্যন্ত এসে অয়ন থেমে গেলো। ইশিকা জিজ্ঞেস করে বলল,

"তাহলে কি বলবো?"

"অভ্রর তোমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। দুজন স্বপ্ন দেখেছিলে অভ্রর সাথে বিদেশে গিয়ে ডিগ্রী নিয়ে আসবে। অভ্র থাকবে তোমার সাথে। তাই বলছি আর কারোর কথা ভেবে না হোক অভ্রর কথা ভেবে ইন্টার্নি জয়েন করো। ওর কথা ভেবে হাসিখুশি থাকো। ওর কথা ভেবে নিজের যত্ন নাও। তুমি কি সেটাই চাও অভ্র ওপারে বসে তোমার এই হাল দেখুক আর কষ্ট পাক?"

ইশিকা অয়নের দিকে তাকিয়ে আছে। অয়ন তো ঠিক কথাই বলছে। এভাবে নিজেকে ভিতরে ভিতরে মেরে ফেলে সে তো অভ্রকেও কষ্ট দিচ্ছে। অভ্র নিশ্চয়ই এসব দেখে কষ্ট পাচ্ছে। অয়ন আবার বলতে শুরু করলো,

"অভ্রকে এভাবে কষ্ট দেওয়ার কোনো অধিকার নেই তোমার। অভ্র কেনো তোমার আশেপাশের কোনো মানুষকেই এভাবে কষ্ট দেওয়ার কোনো অধিকারই তোমার নেই।"

ভালোবাসার অপরাধী (সম্পুর্ণ)Donde viven las historias. Descúbrelo ahora