ইশিকার দিনগুলো যেন কাটছেই না। প্রতিদিন সে ক্যালেন্ডারে দাগ কাটে। একটা করে দিন যায় আর সে একটা করে তারিখ কেটে দেয়। কেমন যেন অদ্ভুত এই অনুভূতি। প্রেমে পড়ার অনুভূতি এত সুন্দর! ইশিকা এতদিন বুঝতে পারে নি সেরকম ভাবে। এখন যেন সে প্রতিটা ক্ষণে ক্ষণে অনুভব করতে পারছে। তবে তার মনে হয় প্রতিক্ষার অনুভূতিটা আরো সুন্দর, আরো অনেক শোভনীয়।
ইশিকা এখন থেকেই ভাবছে অভ্র দেশে আসলে কি করবে? কোন জামাটা পড়ে সে অভ্রর সাথে দেখা করতে যাবে? আচ্ছা অভ্রকে এখন সরাসরি দেখতে কেমন লাগবে? এসব হাজারো প্রশ্ন ইশিকার মাথায় ঘুরছে।
কবে যে ইশিকা অভ্রকে দেখবে, অভ্রর মুখ থেকে ইশকি ডাকটা শুনবে। আচ্ছা অভ্র তো আসবে ডিসেম্বরে আর তখন তো শীতকাল থাকবে। অভ্র কি ইশিকার মাফলারে আঠা লাগিয়ে দিবে? কিন্তু অভ্রর কাছে তো তখন আঠা থাকবে না। আর ইশিকা কি মাফলার পড়ে যাবে? ইশিকা মাফলার পড়ে যাবে। দেখা যাক ওর ড্রিমম্যান কি করে।
................
ইশিকা বার বার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে। এখন সকাল ৮ টা ২০ মিনিট। অভ্রর ল্যান্ড করার কথা সকাল ৮ টায়। অভ্র সিয়ামকে ওর বাংলাদেশি নাম্বারটা দিয়েছিল। সিয়াম ইশিকাকে দিয়েছে। বলেছে ফোন দিতে চাইলে ২/৩ ঘন্টা পর দিতে। একটু ফ্রি হতে টাইম লাগবে অভ্রর।
অবশেষে ইশিকার অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো। ঘড়িতে ১০ টা বেজে ৩৫ মিনিট। ইশিকা ফোনটা হাতে নিল। অভ্রর নাম্বারটা ডায়াল করল। কল ফরওয়ার্ড হওয়ার আগেই ফোনটা কেটে দিল। বেশ দ্বিধা বোধ করছে ইশিকা। আবার কল দিল। রিং হচ্ছে। তিন বার, চার বার রিং হলো কিন্তু কারো ফোন তোলার কোনো নাম গন্ধ নেই। পাঁচবারের সময় রিং হতেই ফোনটা রিসিভ হলো। ফোনের ওপাশ থেকে একজন ভারী কন্ঠের কেউ বলে উঠল,
"হ্যালো, কে বলছেন?"
ইশিকার যেন শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা। গলা দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না। ফোনের দুইপাশের একপাশ থেকেও কোনো সাড়াশব্দ আসছে না। দুপাশই একেবারে নিশ্চুপ। প্রায় ১৫ সেকেন্ড সময় এভাবে কাটার পর ফোনের ওপাশ থেকে বলল,
CZYTASZ
ভালোবাসার অপরাধী (সম্পুর্ণ)
Romansছাদের রেলিং এর সামনে দাঁড়িয়ে আছে ইশিকা। অগ্রহায়ণের বাতাস অনুভব করছে। হঠাৎ চোখ পড়ল সামনের ছাদের দিকে। মনের অনুভূতিটা যেন নড়াচড়া দিয়ে উঠল। চোখটা বন্ধ করে জোরে নিঃস্বাস নিল। এক দৌড়ে ছুটে এল নিজের ঘরে।