পর্ব-১৫

71 1 0
                                    

পরীক্ষা শেষের আর মাত্র একদিন বাকি। শেষ পরীক্ষাটায় ভালো করার জন্য অপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইশান। 

রাত ১১টা। এই কয়দিনের গরমের কারণে বাহিরে তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে। রুমে শুধু রিডিং ল্যাম্প জ্বালিয়ে পড়ছে ইশান। মৌ কিছুক্ষণ পর এসে খাটে এসে শুয়ে পড়ে। অন্যসময় মৌ অনেক কথা বলে, আজ একটু চুপচাপ। 

একপাশ থেকে আরেক পাশ ফিরে ফিরেই এক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলো। ইশান বুঝলো হয়তো কিছু হয়েছে ওর। বইটা বন্ধ করে এসে পাশে বসে। 

-'কি হয়েছে?'

মৌ চোখ খুলতেই  দেখে চোখ গুলো হালকা লাল। মৌকে কথা বলার সুযোগ না দিয়েই সে বলল, 

-'মাথা ব্যাথা?'

মাথা নেড়ে দেয় মৌ। 

-'ঔষধ খেয়েছ?' 

আবার মাথা নাড়ে। বালিশ দিয়ে মুখটা ঢাকে।

-'এমন করছো কেন? শ্বাস আটকে যাবে তো।' 

জোড় করে বালিশটা সরিয়ে দেখে মৌয়ের চোখ ভেজা। 

-'আবার কি হলো?'

মৌ ভাঙা গলায় বলল, 

-'মাকে খুব মিস করছি। আমার মাথা ব্যাথা হলে আমাকে দোয়া পড়ে কপালে ফু দিয়ে দিতো।' 

বলেই আবার নিঃশব্দে কান্না শুরু করে দেয়।

ইশান ওকে কাছে টেনে নিয়ে মাথাটা বুকের উপর রেখে জড়িয়ে ধরে। আলতো করে মাথায় মাসাজ করে দিলো। কিছুটা আরাম পেয়ে চোখটা বন্ধ করে হৃদস্পন্দনের ছন্দগুলো শুনছে মনোযোগ দিয়ে। ইশান কয়েকবার মাথায় ফু দিয়ে দেয়। 

মাথা উঠিয়ে মৌ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে চাইলো। ইশান মুচকি হেসে প্রশ্ন না শুনেই উত্তর দেয়, 

-'আমার মায়ের মাইগ্রেন আছে, যেটা তুমি অনেকবারই টের পেয়েছ আর মাথায় তেল দিয়ে দাও। ছোটবেলায় যখন ছেলের বউ ছিলনা তখন এভাবেই আমাকে শিখিয়ে দিয়েছে। তার পর থেকেই যখনই মার মাথা ব্যাথা হয় তখনই আমি দিতাম। মা কি বলতো জানো? বলতো যাদের মনে কোনো খুঁত নেই তাদের দোয়াই কাজে লাগে। আমি জানিনা কি হবে এখন, কিন্তু এই এক্সিউজে তোমাকে কাছে পেয়েছি এটাই বেশি।' 

এক্স ফিয়ন্সের বিয়েতেWhere stories live. Discover now