তারপর কিছুটা সাহস যোগিয়ে ডিপার্টমেন্টের দিকে যায়। ডিপার্টমেন্টে প্রবেশ করলেই সুশান্ত স্যার আগে পড়ে যায়। তাই মতিউর আর ভিতরে না গিয়ে সুশান্ত স্যারকে আস্তে করে জিজ্ঞেস করে স্যার আজকে কি অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ক্লাস হবে? স্যার তখনও চা খাচ্ছিল, চায় একটা চুমুক দিয়ে মতিউরের দিকে তাকালো এবং বলল তোমরা কতজন এসেছো। যেহেতু মতিউর নীরব স্বভাবের লোক ছিল। অনিক ছাড়া মতিউরের তেমন কেউ পরিচিত ছিল না। নিয়মিত ক্লাসে এসে বসে থাকতো এবং ক্লাস করে হয়তো লাইব্রেরীতে গিয়ে বসত না হলে বাসার দিকে রওনা দিত। কলেজ জীবন থেকে শুরু করে ইউনিভার্সিটির জীবন পর্যন্ত অনিক মতিউরের পাশে ছিল। মন - মানসিকতা একই থাকায় বন্ধুত্বের কোন সময় ফাটল ধরেনি। যাইহোক অনিক অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে গ্রামের দিকে রওনা হয়। যেহেতু অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের প্রথম ক্লাসে স্বাভাবিকভাবেই অনেক ছাত্র-ছাত্রী জানতো না। জানলেও তারা গ্রামের বাড়ি ছিল। তাই মতিউর বলল স্যার আমি একাই এসেছি। একা তো ক্লাস নেওয়া সম্ভব না। তুমি তোমার বন্ধু বন্ধুকে নিয়ে আসো। (১০-১৫) জন হলেও ক্লাস নিব। যেহেতু মতিউর কাউকে চিনত না। তাই সে স্যারের সাথে কথা বলে লাইব্রেরীর দিকে রওনা দিল।
পৃষ্ঠা - ১২
সাধারণত অনার্সের সিলেবাস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়ে থাকে। শিক্ষার্থীরা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে সিলেবাস ডাউনলোড করে নেয়। মতিউর দেখলে তার বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট থেকে সিলেবাস ডাউনলোড হচ্ছে না। তখন তার চোখ পড়ে গেল 'ফেসবুক নোটিশ' গ্রুপের দিকে। একটু ঘাটাঘাটি করার পর মতিউর অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের সিলেবাস পেয়ে যায় এবং তার মোবাইলে সেভ করে রাখে। মতিউর যেই কলেজে পড়াশোনা করত সেখানকার লাইব্রেরীতে খুব কম বই ছিল বিশেষ করে বাংলা ডিপার্টমেন্টের জন্য। মতিউর একা ফোন নিয়ে বিভাগের আলমারির সামনে দাঁড়ায় এবং বই খুঁজতে থাকে। যেহেতু মতিউর বাংলা বিভাগের ছাত্র ছিল তাই তার নাটক, উপন্যাস, কবিতা, ছোটগল্প, চর্যাপদের বিভিন্ন উক্তির ব্যাখ্যা ছিল এবং বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ ছিল তার সিলেবাসে। অনার্স প্রথম বর্ষের চেয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পড়া ছিল অনেক বেশি। শুধু ছোট ছোট গল্পই ছিল ৪০টি। মতিউর ভালোমতোই জানতো প্রথম বর্ষের হিসাবে এবং দ্বিতীয় বর্ষের হিসাব সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাই মতিউর দ্বিতীয় বর্ষ আগে থেকেই খুব মনোযোগী ছিল। পুরো লাইব্রেরী এবং লাইব্রেরীর বই সংরক্ষণের দায়িত্বে যারা রয়েছে তাদের সাথে কথা বলে মাত্র দুটি বইয়ের সন্ধান পেল মতিউর। একটি হলো মীর মোশাররফ হোসেনের 'বিষাদ সিন্ধু ' উপন্যাস ও রবীন্দ্রনাথের 'ছোটগল্প সমগ্র'। লাইব্রেরীর দুই প্রান্ত থেকে দুটি বই নিয়ে এবং ব্যাগ থেকে কলম ও খাতা বের করে খুব উৎসাহের সহিত রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্প সমগ্র পড়া শুরু করলো। দুটি ছোট গল্প খুব কষ্টের সাথে পড়ার পর মতিউর খুঁজতে শুরু করল কোনটি সবচেয়ে ছোট গল্প (আকারে)।
YOU ARE READING
সত্য দিনের অপেক্ষায়
Non-Fictionসোমবার সকাল বেলা ঠিক ছয়টা বাজে। মোবাইলে দেওয়া এলার্ম এর শব্দে চারদিকের মানুষের ঘুম হারাম কিন্তু যার জন্য এলার্ম তার কোন খবর নেই। মা এসে বলল ওই মতিউর উঠবে না নামাজের সময় শেষের দিকে, তোর তো আজ কলেজ ও আছে যাবি না। মতিউর বলল মা আর মাত্র পাঁচটা মিনিট...