মতিউরের লেখা গল্পগুলো সংশোধন করে দিত তার গুরু "সত্য রঞ্জন পাল"। এই ইংরেজি সাহিত্যর আকৃষ্ট মতিউরের বেশি দিন ছিল না। কলেজ জীবনেই মতিউর তার ভুল বুঝেছিল। একটু রসিকতার সাথে যদি বলি, মতিউর এর মনে হয়েছিল কিছুক্ষনের জন্যে হলেও সে " মাইকেল মধুসূদন দত্ত "। অনার্সে বাংলা পাওয়ার পর মতিউর বাংলা সাহিত্যের দিকে ঝুকতে শুধু করে। তার বাংলা সাহিত্যর প্রতি একটা আগ্রহ জন্মায়। অনার্স ১ম বর্ষ এবং ২য় বর্ষ মিলে মতিউর প্রায় ১০টির মতো উপন্যাস পড়ে।
পৃষ্ঠা - ২৯
অন্য লেখক বা সাহিত্যিকদের কাছে কম মনে হলেও মতিউরের কাছে ছিল অনেক। মতিউর একটা জিনিস উপলদ্ধি করতে পেরেছিল যে, পড়ালেখাটা আমাদের স্কুলজীবন ও কলেজজীবনে অনেক কঠিন ভাবে উপস্থাপন করা হয়, যার ফলে অধিকাংশ শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষায় ভর্তি তো হয় কিন্তু শেষ আর করতে পারে না। এর এক সত্য উদাহরণ হলো তিতুমীর কলেজে প্রত্যেক বিভাগে প্রায় ৩১০ জন করে পিক্ষার্থী ভর্তি হয়। কিন্তু অর্নাস পাশ করে বের হয় ১৫০ জন। আমি মাস্টার্স আর পি এইচ ডি এর কথা বাদ দিলাম। অনার্স শেষ করার মত যোগ্যতা আজ আমাদের মাঝে তৈরি হয় নি। এর মূল কারণ শিক্ষার মান আর আমরা সেইভাবে উন্নতি করতে পারছিনা। আজকে অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষাকে বোঝা মনে করে। যারা অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে বেকারত্ব জীবনযাপন করে এবং হতাশা ও সামাজিক চাপের ফলে তাদের কাছে শিক্ষা একটা অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। মতিউরের বই লেখার প্রবল আগ্রহ জন্মায় সেভাবে সে একজন লেখক হবে। কিন্তু এইটা যে বাংলাদেশ সেই কথা সে ভুলেই গিয়েছিল। আপনি লেখক হয়ে আপনার ঘর সংসার চালাতে পারবেন না। পাশাপাশি আপনার আর একটি পেশা অবশ্যই থাকতে হবে না হলে সামাজিক ও পারিবারিক চাপ আপনাকে খেয়ে ফেলবে। মতিউর যখন বই লেখা শুরু করে তখন তার মাথাব্যথা ছিল প্রচুর। কারণ মতিউরের ছিল ক্ষুদ্র জ্ঞান।
পৃষ্ঠা - ৩০
লেখা তো শুরু করে দিল মতিউর কিন্তু শেষে কি হবে সেটা আর জানতো না মতিউর। দিন যায় দিন আসে কিন্তু মতিউরের সেই গতানুগত জীবনে একই থাকে। এই পর্যায়ে মতিউরের এলাকার ছোট ভাই শফিকের সাথে মতিউরের পরিচয় হয়। বয়সে ছোট হলেও বুদ্ধিতে ছিল সে ভালোই বড়। ইতিহাস, রাজনীতি, অর্থনীতি নিয়ে তার ছিল প্রবল আগ্রহ। যুক্তির ছিল না শেষ। শফিক ও সাত কলেজের ছাত্র। শফিক কাজী নজরুল ইসলাম কলেজে অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশুনা করতো। যেহেতু মতিউরের সাথে শফিকের বিকেলবেলা দেখা হতো এবং মতিউর ছিল বাংলা ভাষার ছাত্র ও শফিকের ও বাংলা ভাষা নিয়ে ছিল প্রবল আগ্রহ তাই দুইজনের মধ্যে ভাষা নিয়ে বিতর্ক লেগেই থাকতো। শফিক ছিল জ্ঞান আরোহণের দিক থেকে প্রখর। যেকোনো কিছু খুব সহজেই আয়ত্ত করতে পারত এবং ছোট হিসেবে তার দায়িত্ব সে সবটুকুই পালন করতো। আপনাদের একটা উদাহরণ দেই। মতিউর যেই এলাকায় থাকে। সেই এলাকায় শফিক ও থাকে। অনেকদিন থেকেই এলাকায় পানির প্রচন্ড সমস্যা, শফিকদের বাড়িওয়ালা গভীরভাবে খনন করে পাইপ বসিয়ে পানির ব্যবস্থা করে। ৬০০ মিটারের মতো খনন করে শফিকদের বাড়িওয়ালা।
![](https://img.wattpad.com/cover/366733621-288-k914856.jpg)
KAMU SEDANG MEMBACA
সত্য দিনের অপেক্ষায়
Nonfiksiসোমবার সকাল বেলা ঠিক ছয়টা বাজে। মোবাইলে দেওয়া এলার্ম এর শব্দে চারদিকের মানুষের ঘুম হারাম কিন্তু যার জন্য এলার্ম তার কোন খবর নেই। মা এসে বলল ওই মতিউর উঠবে না নামাজের সময় শেষের দিকে, তোর তো আজ কলেজ ও আছে যাবি না। মতিউর বলল মা আর মাত্র পাঁচটা মিনিট...